বারাসত বিদ্রোহী সঙ্ঘে কালীপুজোর প্রস্তুতি। — সুদীপ ঘোষ
বারাসতের কালীপুজোর জনপ্রিয়তার সঙ্গে পরিচিত গোটা মহানগরী। এখানকার পুজো নিয়ে উন্মাদনাও কম নয়। তাই দর্শনার্থীদের বারাসত ও মধ্যমগ্রামের বড় পুজোগুলির হদিস দিতে এ বারই প্রথম মোবাইল অ্যাপ নিয়ে এল প্রশাসন। আজ, বৃহস্পতিবার চালু হওয়ার পরে গুগ্ল থেকে ডাউনলোড করা যাবে অ্যাপটি। তাতে থাকবে বারাসত ও মধ্যমগ্রামের ১২টি করে পুজোর তথ্য। উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এ ছাড়াও কোন রাস্তায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রিত রয়েছে, কোথায় গেলে কোন দিকের বাস-ট্রেন মিলবে থাকবে, পুলিশের ফোন নম্বর-সহ বিভিন্ন তথ্য মিলবে অ্যাপে।’’
ব্যস্ততা তুঙ্গে পুলিশ-প্রশাসনেরও। তুমুল ভিড়ে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রত্যেক পুজো মণ্ডপের সামনে সহায়তা কেন্দ্র, পুলিশি টহলদারি তো থাকছেই, এ ছাড়াও নজরদারি চালাবে সাদা পোশাকের পুলিশ। মহিলারা যাতে স্বচ্ছন্দে ঘুরতে পারেন, সে জন্য সাধারণ দর্শনার্থী সেজে ঘুরবেন মহিলা পুলিশও। কেনও রকম অভব্যতা দেখলেই পাকড়াও করা হবে অভিযুক্তকে। গত বছর মধ্যমগ্রামে মদ্যপান করে অভব্যতার প্রতিবাদ করায় এক নাট্যকর্মীকে মারধর, হেনস্থার অভিযোগ ওঠে। পরে দুষ্কৃতীরা গ্রেফতারও হয়। পুজোর মরসুমে মদের দোকান খোলা রাখার নতুন নিয়ম নিয়ে এ বার বাড়তি চাপে পুলিশ। মদ্যপান করে গাড়ি চালালে পাকড়াও করতে তাই পুজোর ক’দিন বেশ কিছু ‘ব্রেথ অ্যানালাইজার’ মজুত রাখা হচ্ছে। কেউ তাতে ধরা পড়লে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছে পুলিশ। তবে চাঁদা নিয়ে জুলুমের এখনও কোনও অভিযোগ নেই পুলিশের কাছে।
পুজোর ক’দিন কোনও রকম দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে, তা নিয়ে সজাগ পুজো কমিটিগুলোও। পুলিশের পাশাপাশি মণ্ডপে নিজস্ব নিরাপত্তা রক্ষীও রাখা হচ্ছে বলে জানালেন উদ্যোক্তারা। বারাসতের অন্যতম পুজো কেএনসি রেজিমেন্টের মণ্ডপ এ বার তাইল্যান্ডের বুদ্ধ মন্দিরের আদলে গড়েছেন শিল্পী বুবু সিংহরায়। ক্লাবের সম্পাদক অশনি মুখোপাধ্যায় বারাসত পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘‘প্রতিটি পুজোই যাতে দর্শক নির্বিঘ্নে দেখতে পারেন, সে দিকে নজর রাখবেন ক্লাব সদস্যেরা। তা নিয়ে ক্লাব কমিটিগুলির সঙ্গে পুরসভা, পুলিশের বৈঠকও চলছে। পুরসভার কর্মীরাও ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ ও অন্যান্য দায়িত্বে থাকবেন।’’
বারাসত স্টেশন সংলগ্ন পায়োনিয়ার অ্যাথলেটিক ক্লাবের পুজোয় বিশাল পুকুরের চারপাশ জুড়ে তৈরি হয়েছে নায়াগ্রা জলপ্রপাত। সেই জল পুকুরে পড়ে আলোড়ন তুলবে। পাহাড়ি খাদ বেয়ে গুহার মধ্যে দেখা মিলবে দেবীর ভৈরবী মূর্তির। মাঠ জুড়ে চলবে মেলা। শিল্পী অভয় পাড়িয়া ও মিলন দেব জানান, ভিন্ রাজ্যের মানুষও আসেন এখানে। তাই এখন দিন-রাত এক করে নায়াগ্রা তৈরি করা চলছে।
নবপল্লী সর্বজনীনে এ বার হাজির রোমের ভ্যাটিকান সিটি। থিমে থাকছে মাদার টেরিজার সন্ত হয়ে ওঠা। সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষে বিদ্রোহী সঙ্ঘ ভেলোরের শ্রীপুরম স্বর্ণমন্দিরের অনুকরণে মণ্ডপ সাজিয়েছে। সন্ধানীর ভাবনা ‘নীরবে বন্দি শৈশব।’ শিশুমনের ভাবনাকে গুরুত্ব না দিয়ে, চাপিয়ে দেওয়া মতামতে কী ভাবে শৈশব বিপন্ন হয়ে ওঠে— তা দেখানো হবে আলোর কারসাজিতে। পুজো কমিটির সম্পাদক পিন্টু কর্মকার বলেন, ‘‘বারাসতের কালীপুজোয় মণ্ডপ তৈরি থেকে শুরু করে বিভিন্ন কাজে যুক্ত হন প্রচুর মানুষ। আশপাশের এলাকার বহু শ্রমিকের রুটিরুজি এই পুজো।’’
সব দিক মাথায় রেখেই নিজেদের সুনাম ধরে রাখতে মরিয়া বারাসতের ছোট-বড় পুজোর উদ্যোক্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy