প্রতীকী ছবি।
হাতে টাকা-পয়সা ফুরিয়ে এসেছিল। দালাল ধরে বাংলাদেশে পালানোর ছক কষেছিল তন্ময়। কিন্তু সে জন্যও দরকার ছিল টাকার। এই অবস্থায় পরিচিত একজনের পেটিএমে টাকা পাঠাতে বলে এক আত্মীয়কে। পুলিশের কথা মতোই তিনি টাকা পাঠান। সেই সূত্রেই তন্ময়ের অবস্থান জেনে ফেলে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উত্তর ২৪ পরগনার নীলগঞ্জ থেকে ধরা পড়ে হাবড়ায় জোড়া খুনে অভিযুক্ত তন্ময় বর। শুক্রবার বারাসত আদালতে তোলা হয় তন্ময়কে। তাকে ১৪ দিন নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। কোথা থেকে সে অস্ত্র জোগাড় করেছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বারাসত পুলিশ জেলার সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়।
গভীর রাতে নারকেল গাছ বেয়ে প্রাক্তন প্রেমিকার বাড়িতে ঢুকেছিল তন্ময়। প্রেমিকার জ্যাঠা রামকৃষ্ণ মণ্ডল ও জেঠিমা লীলারানিকে সামনে পেয়ে গুলি করে খুন করে বাইকে নিয়ে পালায়। তন্ময়ের অবশ্য দাবি, হাবড়ার টুনিঘাটার ওই তরুণীকে রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করেছিল সে। তারপরেই চলে যায় বাংলাদেশে। কিন্তু দেশে ফেরার পরে সম্পর্কে ফাটল ধরে। সে জন্য তরুণী জ্যাঠা-জেঠিমারও মদত ছিল বলে অভিযোগ তন্ময়ের। সেই রাগেই গুলি চালায় সে। তদন্তকারীদের অনুমান, বুধবার রাতের ওই ঘটনায় তরুণী-সহ বাড়ির আরও কয়েকজনকে খুনের মতলব ছিল তন্ময়ের। তবে দু’টো গুলিতে পর পর দু’জন লুটিয়ে পরার পরে লোকজন জেগে যায়। ভয়ে এলাকা ছাড়ে ওই যুবক।
পালিয়ে কোথায় গিয়েছিল সে?
পুলিশ জানতে পেরেছে, কলকাতার চৌভাগায় এক মামা থাকেন তন্ময়ের। বাইক নিয়ে রাতে সে মামার কাছে যায়। পুলিশ পিছু নেবে ধরে নিয়ে মোবাইল ফোন বন্ধ রেখেছিল সে। চৌভাগায় কিছুক্ষণ কাটিয়ে বেরিয়ে পড়ে তন্ময়। এ দিক ও দিক ঘোরাঘুরি করতে থাকে। জগদ্দল, কালনা, দুর্গাপুর, ব্যারাকপুর হয়ে সে নীলগঞ্জে পৌঁছয়। কেন নীলগঞ্জে গিয়েছিল সে, খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
তাকে গ্রেফতার করতে পুলিশ তিনটি দল গঠন করেছিল। সম্ভাব্য বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চলতে থাকে। তন্ময়ের আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গেও দেখা করে পুলিশ। তার পরিবার তদন্তে সাহায্য করেছে বলেই জানাচ্ছে পুলিশ।
২০১৮ সালে প্রেমিকাকে সঙ্গে নিয়ে যে পথে বাংলাদেশে পালিয়েছিল তন্ময়, সেই রুটেও নজর রাখতে শুরু করে পুলিশ। তন্ময় ফের বাংলাদেশে পালাতে পারে বলে আশঙ্কা করছিলেন তদন্তকারীরা। পরিচিতদের মোবাইল থেকে কয়েকজন আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল তন্ময়। টাকা চেয়েছিল। তদন্তকারীরা সে খবর জানতে পারেন। তন্ময় এক পরিচিত ব্যক্তির পেটিএমে আত্মীয়দের টাকা পাঠাতে বলে। পুলিশের কথা মতোই আত্মীয়েরা পেটিএমে টাকা পাঠান। ওই টাকা আনতে গিয়েই ধরা প়ড়ে যায় যুবক। যার পেটিএমে টাকা পাঠানো হয়েছিল, তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, আগে আংটি-মাদুলি তৈরির কাজ করলেও ইদানীং দিনমজুরির কাজ করত তন্ময়। সারা দিন নেশা করত। ছোটখাট চুরিতেও হাত পাকিয়েছিল। ২০১৯ সালের শেষের দিকে হাবড়ায় একটি গাড়ি থেকে ব্যাটারি চুরি করে পালায়। তারপর থেকে বেপাত্তা ছিল। হাবড়া কাশীপুর কলতলা এলাকার বাড়িতে বিশেষ আসত না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy