মিড ডে মিলের গুণগত মান নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় এ রকম অভিযোগ প্রায়ই শোনা যায়। — ফাইল চিত্র।
দিন কয়েক আগে কুলতলির কীর্তনখোলা প্রাথমিক স্কুলে বিক্ষোভ দেখান অভিভাবকদের একাংশ। স্কুলের মিড ডে মিলে একাধিক অনিয়মের অভিযোগ তোলেন তাঁরা। পোকা ধরা চাল মিড ডে মিল রান্নায় ব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। পরে ব্লক প্রশাসন তদন্ত করে পুরনো কিছু চালে পোকা পায়। সেই চাল বাতিল করে নতুন চালের ব্যবস্থা করা হয়।
মিড ডে মিলের গুণগত মান নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় এ রকম অভিযোগ প্রায়ই শোনা যায় অভিভাবকদের মুখে। অনেক ক্ষেত্রেই খাবারের মান ভাল হয় না। মাথাপিছু যে পরিমাণ খাবার দেওয়ার কথা, তার থেকে কম খাবার দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
মিড ডে মিলের জন্য প্রাথমিক স্তরে পড়ুয়াপিছু বরাদ্দ ৫ টাকা ৪৫ পয়সা। বিভিন্ন স্কুল সূত্রের খবর, এই টাকায় খাবার ব্যবস্থা করতে হিমসিম খেতে হয়। ফলে নানা ভাবে ‘ম্যানেজ’ করতে হয় স্কুল কর্তৃপক্ষকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক প্রাথমিক স্কুল শিক্ষকের কথায়, “বরাদ্দ টাকায় খাবার ব্যবস্থা করা মুশকিল। উপস্থিতির হার বেশি দেখিয়ে ম্যানেজ করা হয় অনেক সময়ে। অনেক ক্ষেত্রে খাবারের পরিমাণ কিছুটা কমিয়ে দেওয়া হয়। কোনও দিন হয় তো দু’টুকরো সয়াবিন কম দেওয়া হল। বাজারে গিয়ে অনেকেই সস্তার মালপত্র খোঁজেন। ফলে খাবারের মানেও একটা প্রভাব পড়তে পারে।”
অভিভাবকেরা অনেকে জানান, অনেক ক্ষেত্রেই খাবার ভাল না হওয়ায় খেতেই চায় না ছেলেমেয়েরা। রায়দিঘির নগেন্দ্রপুর পুরকাইতপাড়ার বাসিন্দা সাদ্দাম গাজি জানান, “মিড ডে মিলের খাবার একেবারেই নিম্নমানের। তাতে তেল নেই, নুন নেই, ঝাল নেই। জলের মতো ডাল। তার সঙ্গে রোজই পোকা ধরা চালের ভাত, খিচুড়ি। বাচ্চাদের মুখে অরুচি হয়ে গিয়েছে। আনাজপাতিও সব দিন ভাল থাকে না।”
মথুরাপুরের বাসিন্দা রমেশ ভান্ডারী বলেন, “স্কুলের খাবারের গুণগত মন ভাল নয়। তাই ছেলেকে বলেই দিয়েছি, স্কুলের খাওয়ার দরকার নেই। বাড়ি থেকে টিফিন নিয়ে যায়। শুধু আমার ছেলে নয়, অনেকেই মিড ডে মিলের খাবার খায় না।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলার এক প্রধান শিক্ষকের কথায়, “ছাত্রছাত্রীদের চাহিদা মতো খেতে দিতে হলে বরাদ্দ টাকা দিয়ে কিছুই হবে না। মিড ডে মিলে রোজকার যা বরাদ্দ, তাতে একটা ডিমও হয় না। তাই অতিরিক্ত ছাত্রছাত্রী দেখিয়ে কোনও কোনও স্কুল ছেলেমেয়েদের ঠিকঠাক খাওয়ার ব্যবস্থা করে। কোনও কোনও স্কুল খাবারের মান ও পরিমাণের সঙ্গে সমঝোতা করতে বাধ্য হয়।”
জেলা শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “রান্না করা খাবার খেয়ে দেখে তবেই পড়ুয়াদের খেতে দেন শিক্ষকেরা। ফলে খাবারের গুণগত মান নিয়ে সমস্যা থাকার কথা নয়। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy