প্রতীকী ছবি।
‘‘রোজ এ ভাবেই বেরোচ্ছি। করোনা হয়তো হয়ে সেরেও গিয়েছে। বুঝতেও পারিনি।’’ থুতনির নীচে মাস্ক নামিয়ে সোমবার দোলতলায় উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সদর দফতরের পাশে চায়ের দোকানে বসে এমনই জানালেন মধ্যমগ্রাম থানার কেমিয়া-খামারপাড়ার বাসিন্দা সফিকুল মোল্লা। সফিকুলের সঙ্গে মাথা নেড়ে সহমত হলেন আশপাশের সবাই। কারওই মুখে মাস্ক নেই।
বিভিন্ন শপিংমল, দোকানে পুজোর কেনাকাটা আর করোনা নিয়ে হাসি-আড্ডা— সবই চলছে মাস্ক না পরে। দূরত্ব-বিধিরও বালাই নেই। অথচ পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক সংক্রমণের হারে শীর্ষে রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এই জেলায় করোনা পজ়িটিভ রোগীর সংখ্যা ৫৫ হাজার ছুঁয়েছে। মৃতের সংখ্যা প্রায় ১২০০। ওই দফতর সূত্রে আরও খবর, বিধাননগর, দমদম, বিমানবন্দর, ব্যারাকপুর শহরাঞ্চলের পাশাপাশি বারাসত মহকুমায় করোনা সংক্রমণের হার সবচেয়ে বেশি। পুলিশই জানাচ্ছে, তা সত্ত্বেও ওই সব এলাকার পাশাপাশি মধ্যমগ্রাম, বামনগাছি, দত্তপুকুর, আমডাঙা, দেগঙ্গা এলাকায় মাস্ক ছাড়া ঘোরার প্রবণতা বন্ধ হয়নি। ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের মধ্যে সেটাই ভাবাচ্ছে স্বাস্থ্য দফতরকে।
এই সব সমস্যার কী করে সমাধান করা যায়, তা নিয়ে সোমবার ভিডিয়ো কনফারেন্স করলেন স্বাস্থ্য কর্তারা। এ দিন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায় বলেন, ‘‘বিধি না মানলে সংক্রমণ আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তো থাকেই। এই জেলার কলকাতা লাগোয়া অংশে সমস্যা বেশি হচ্ছে। এ ব্যাপারে কী কী করা যায় তা দেখা হচ্ছে।’’ এর পাশাপাশি সচেতনতা বাড়ানোর দিকে জোর দিয়েছেন স্বাস্থ্য কর্তারা। কিন্তু সাধারণ মানুষ সতর্ক হচ্ছেন কোথায়?
সোমবার সকালে বারাসতের ডাকবাংলো মোড়ে পুলিশ দেখেই পকেট থেকে মাস্ক বার করে তড়িঘড়ি পরে নিলেন কয়েক জন। পুলিশ চলে যেতেই মাস্ক নামিয়ে নিতে দেখা গেল তাঁদের অনেককেই। বারাসত চাঁপাডালি মোড়ে কর্তব্যরত এক পুলিশকর্মী বিনা মাস্কে থাকা এক মোটরবাইক আরোহীকে আটকালেন। ধমক দেওয়ার পরে মাস্ক পরলেন ওই ব্যক্তি। মাস্ক না পরার যুক্তি হিসেবে তিনি বললেন, ‘‘মাস্ক পরলে শ্বাসকষ্ট হয়। তাই মাঝেমাঝে খুলে রাখি।’’ দত্তপুকুর, আমডাঙার বেশ কিছু দোকানে দেখা গেল, দোকানি কিংবা ক্রেতা কারও মুখে মাস্ক নেই। বামনগাছি চৌমাথার এক দোকানি বলেন, ‘‘মাস্ক পরে কথা বললে ক্রেতারা শুনতে পান না।’’ সহমত হলেন ক্রেতারাও।
বারাসত, মধ্যমগ্রাম এলাকাতেই রয়েছে বেশ কিছু শপিং মল। রবিবার থেকে সেখানে বেড়েছে পুজোর কেনাকাটার ভিড়। তবে শপিং মলগুলিতে মাস্ক ছাড়া ক্রেতাদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। দেগঙ্গার বেড়াচাঁপা বাজারে আবার পুলিশের সামনেই বিনা মাস্কে দেদার কেনাবেচা চলছে। সেখানে কর্তব্যরত এক পুলিশকর্মী বলেন, ‘‘কত জনকে বারণ করব। কেউ শুনছেন, কেউ আবার সরে গিয়ে মাস্ক খুলে রাখছেন।’’ বারাসত পুলিশ জেলার সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে বাসিন্দাদের সচেতন হতে হবে। মাস্ক না পরলে, বিধি না মানা হলে ধরপাকড় করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy