গভীর সমুদ্র থেকে ফিরে এসেছে ট্রলার। ছবি: দিলীপ নস্কর
হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস, আর প্রশাসনের আগাম সর্তকতামূলক ব্যবস্থা গত নভেম্বরে বুলবুল ঝড়ে প্রাণহানি রুখে দিয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আমপান ঝড়ের মোকাবিলার কাজ শুরু করেছে দুই ২৪ পরগনার প্রশাসন। একদিকে করোনা, অন্য দিকে আমপান, বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ পাঠানোর পাশাপাশি, দূরত্ববিধি মেনে বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের শিবিরে রাখাটাই প্রশাসনের কাছে চ্যালেঞ্জ। ঝড়ের ভ্রূকুটি চিন্তায় ফেলেছে চাষিদের। আমপান কার্যত পাকা ধানে মই দেবে বলে আশঙ্কা। বেশ কিছু এলাকায় চাষিরা তড়িঘড়ি ধান কাটা শেষ করতে উঠেপড়ে লেগেছেন। রবিবার সকাল থেকে সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় শিবির তৈরি ও ত্রাণ পাঠানোর কাজ শুরু করেছে প্রশাসন। কাকদ্বীপ, সাগর, নামখানা ও পাথরপ্রতিমা নদীনালা ঘেরা ব্লক। এ দিন সকালে সাগরের প্রায় বিচ্ছিন্ন দ্বীপ এলাকা ঘোড়ামারায় ত্রাণের পাশাপাশি মেডিক্যাল ইউনিটও পৌঁছে গিয়েছে। এ ছাড়াও, ধবলাহাট এলাকায় সাউঘেরি, বোটখালি এলাকায় সমুদ্র লাগোয়া বাসিন্দাদের শিবিরে আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কেন্দ্র ও রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দল সাগর দ্বীপে পৌঁছেছে।পাথরপ্রতিমা ব্লকের বিপজ্জনক এলাকার মধ্যে রয়েছে জি-প্লট পঞ্চায়েত। বুলবুলে ওই এলাকায় প্রচুর ক্ষতি হয়েছিল। সেখানকার সমস্ত প্রাথমিক ও হাইস্কুলে ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। নামখানা ব্লকে ফ্রেজারগঞ্জ উপকূল এলাকায় বাসিন্দাদের সতর্ক করতে সকাল থেকে মাইকে প্রচার ও নদীতে টহলদারি চালাছে পুলিশ-প্রশাসন। কাকদ্বীপের মহকুমাশাসক শৌভিক চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বিপজ্জনক নদী বাঁধগুলি ভেঙে যাতে এলাকায় জল না ঢোকে, সে জন্য সেচ দফতরকে নজরদারি করতে বলা হয়েছে।”
ক্যানিংয়ের বিভিন্ন এলাকায় মাইক নিয়ে এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক করা হচ্ছে। ফ্লাড সেন্টার ও এলাকার স্কুলগুলিকে তৈরি রাখা হচ্ছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেই জানিয়েছে প্রশাসন। গোসাবা ব্লকের যে সমস্ত এলাকায় নদীবাঁধ দুর্বল, জরুরি ভিত্তিতে তার মেরামতির কাজ করা হচ্ছে। এই ব্লকের ১৪টি পঞ্চায়েতেই সোমবার থেকে কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। তবে প্রশাসনকে যথেষ্ট সমস্যায় পড়তে হচ্ছে ফ্লাড সেন্টারগুলির জন্য। ইতিমধ্যেই গোসাবা ব্লকের ১৭টি সাইক্লোন সেন্টারের মধ্যে ১০টি নিভৃতবাস কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। সেই কারণেই স্কুলগুলিতে শিবির খোলার পরিকল্পনা করেছে প্রশাসন। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে গ্রামের মহিলাদের সচেতন করার কাজে লাগিয়েছে পঞ্চায়েতগুলি।
বসিরহাট মহকুমার সব ব্লকেই খোলা হয়েছে কন্ট্রোলরুম। করোনা-সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে ফ্লাড সেন্টার এবং স্কুলবাড়িগুলিকে জীবাণুমুক্ত করার কাজ শুরু করেছে প্রশাসন। সেগুলিতে শিবির খোলা হবে। শিবিরে পর্যাপ্ত মাস্ক ও সাবান রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। হিঙ্গলগঞ্জ এবং সন্দেশখালির দু’টি ব্লকের অনেক জায়গায় নদী-বাঁধগুলির অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রশাসন। বেশ কয়েকটি এলাকায় রায়মঙ্গল এবং কালিন্দি নদীর বাঁধের দিকে নজর রাখছে সেচ দফতর। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে বিপজ্জনক এলাকাগুলিতে পাঠানো হয়েছে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে যাতে অসুবিধা না হয়, তার জন্য পর্যপ্ত ত্রাণ সামগ্রী বিভিন্ন এলাকায় আগেভাগে পাঠিয়ে রাখছে প্রশাসন। লকডাউনে এক সঙ্গে প্রচুর মজুর যেমন মিলছে না। তেমনই দূরত্ববিধি বজায় রাখতে বেশি লোক এক সঙ্গে ধান কাটার কাজও করতে পারছে না। সেই সমস্যা দূর করতে বসিরহাটের বিভিন্ন এলাকায় ধান কাটার জন্য যন্ত্রের ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন। ৩০ মিনিটে এক বিঘা জমির ধান কাটা যাচ্ছে ওই যন্ত্র দিয়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy