ভেন্ডিং মেশিন।
একটি স্কুলে স্যানিটারি ন্যাপকিন দেওয়া হবে— যা শুনে সেখানে জড়ো হয়েছিলেন অনেক কিশোরী ও মহিলা। কিন্তু ন্যাপকিন নিতে গিয়ে বা এর ব্যবহারের কথা শুনে অনেক মহিলাই সঙ্কোেচ জড়োসড়ো হয়ে গেলেন।
নারী দিবস উপলক্ষে শুক্রবার অভিনব উদ্যোগ নেয় জয়নগরের একটি ফ্যান ক্লাব। কুলতলির একটি প্রত্যন্ত এলাকা বেছে নিয়ে সেখানকার মহিলাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় স্যানিটারি ন্যাপকিন। কিন্তু পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করা খুব একটা সহজ হয়নি ওই ফ্যান ক্লাবের সদস্যদের কাছে।
যে স্কুল চত্বরে ন্যাপকিন তুলে দেওয়ার কথা ছিল, সেখানে জড়ো হয়েছিলেন অনেক মহিলাই। কিন্তু ন্যাপকিন শুনে পিছিয়ে যান অনেকেই। শেষ পর্যন্ত ক্লাবের সদস্যরা বুঝিয়ে সুঝিয়ে কয়েকজনের হাতে তুলে দেন। স্কুলেরই এক শিক্ষিকাকে দায়িত্ব দেওয়া হয় পরে ন্যাপকিনগুলি অন্য মহিলাদের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়ার জন্য। ক্লাবের এক সদস্য মলয় নাটুয়া বলেন, ‘‘ন্যাপকিন শুনে অনেকেই লজ্জায় পিছিয়ে গিয়েছিলেন। আমরা কয়েকজনকে বোঝালাম। অনেকে তাও সংকোচ কাটিয়ে উঠতে পারেননি।’’
নারীস্বাস্থ্যের সুরক্ষার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এই স্যানিটারি ন্যাপকিন। কিন্তু আজকের দিনে দাঁড়িয়েও তা নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলতে একটা বড় অংশের মহিলার মধ্যেই কাজ করছে লজ্জা, সংকোচ। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে অনেকেই স্যানিটারি ন্যাপকিনের ব্যবহারের ক্ষেত্রেও পিছিয়ে রয়েছেন। কুলতলির ওই স্কুল শিক্ষিকা জানান, এলাকার বহু মহিলাই ন্যাপকিনের ব্যবহার করেন না।
জয়নগর এলাকায় একাধিক স্কুলে সম্প্রতি বসানো হয়েছে ন্যাপকিন ভেন্ডিং মেশিন। পাঁচ টাকার বিনিময়ে মেশিন থেকে সহজেই ন্যাপকিন পাবেন ছাত্রীরা। কিন্তু বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, মেশিন থেকে ন্যাপকিন বের করার ক্ষত্রেও ছাত্রীদের একাংশের মধ্যে কাজ করছে সংকোচ। দক্ষিণ বারাসত এলাকার একটি স্কুলের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘অনেকে সরাসরি মেশিন থেকে না নিয়ে অফিসে এসে মহিলা আধিকারিকদের সঙ্গে আলাদা করে দেখা করে টাকা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। প্রকাশ্যে বিষয়টা নিয়ে অনেকেই লজ্জা পাচ্ছে।’’
বালিকা বিদ্যালয়গুলিতে অবশ্য এই সমস্যা কম। বহড়ু এলাকার একটি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা জানান, ভেন্ডিং মেশিন ঘিরে উৎসাহ রয়েছে ছাত্রীদের মধ্যে। সমস্যা হচ্ছে কো-এড স্কুলগুলিতে। এক আধিকারিক জানান, ছাত্রীদের সহজ করতে অধিকাংশে ক্ষেত্রেই স্কুলের তরফে আলাদা একটি ঘরে এই ভেন্ডিং মেশিন বসানো হয়েছে। তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে স্কুলেরই কোনও শিক্ষিকাকে। সাংসদ প্রতিমা মণ্ডলের কথায়, ‘‘মেয়েদের বুঝতে হবে স্বাস্থ্যের জন্য এটা কতটা জরুরি। এই সচেতনতাটা তৈরির চেষ্টা করে যাচ্ছি। যখনই যে স্কুলে গিয়েছি মেয়েদের বুঝিয়েছি এ ব্যাপারে কী ভাবে সংকোচ কাটিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। অনেকই সচেতন হয়েছে। সবাইকেই এই ভাবে এগিয়ে আসতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy