Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

ডাক্তারের অভাব, ফিরে যেতে হচ্ছে রোগীদের

শুধু ওই মহিলা নন, কাকদ্বীপ সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে  বেশিরভাগ দিনই প্রসূতিদের হাসপাতালে এসে চিকিৎসক না দেখিয়েই ফিরে যেতে হচ্ছে। কারণ চিকিৎসক নেই। তার জেরে ক্ষোভ ও বিরক্তি বাড়ছে রোগী ও তাঁদের পরিবারের লোকেদের।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৭ ০২:২৮
Share: Save:

বেলা ১১টা থেকে ২টো পর্যন্ত আউটডোরের লাইনে অপেক্ষা করছেন নামখানার প্রসূতি প্রতিমা নস্কর। তবু চিকিৎসক দেখাতে পারলেন না। এতে বিরক্ত ওই মহিলা।

শুধু ওই মহিলা নন, কাকদ্বীপ সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে বেশিরভাগ দিনই প্রসূতিদের হাসপাতালে এসে চিকিৎসক না দেখিয়েই ফিরে যেতে হচ্ছে। কারণ চিকিৎসক নেই। তার জেরে ক্ষোভ ও বিরক্তি বাড়ছে রোগী ও তাঁদের পরিবারের লোকেদের। প্রসূতি বিভাগকে ঘিরে ফের ঝামেলার আশঙ্কাও দেখা দিচ্ছে। কিন্তু চিকিৎসকদের নিরাপত্তা প্রায় তলানিতে।

প্রতিমাদেবীর স্বামী অভয় বলেন, ‘‘লাইনে চার ঘণ্টা দাঁড়িয়ে স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। এত রাগ হচ্ছিল। এত বড় একটা হাসপাতাল, অথচ চিকিৎসক নেই।’’ একই অভিযোগ অন্য প্রসূতিদেরও।

ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস রায় বলেন, ‘‘সমস্যার কথাটা জানি। বুঝতে পারছি অসুবিধা। শীঘ্রই ডায়মন্ড হারবার হাসপাতাল থেকে একজন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞকে কাকদ্বীপে পাঠানো হচ্ছে।’’

সপ্তাহ দু’য়েক আগে হরিপুরের এক প্রসূতির বাচ্চা গর্ভেই মারা গিয়েছিল। তার জেরে কাকদ্বীপ হাসপাতালে ঝামেলা হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, চিকিৎসকদের উপরে চড়াও হয় জনতা। সেই চিকিৎসক এখন অনির্দিষ্টকালের ছুটিতে চলে গিয়েছেন। ঝামেলার পরে সরানো হয়েছে প্রসূতি বিভাগের আরও এক চিকিৎসককে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রসূতি বিভাগের অবস্থা এখন খুবই খারাপ। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দু’জন। আর একজন ওই বিভাগের না হলেও প্রশিক্ষণ নিয়েছেন বলে কাজ সামলাচ্ছেন। প্রসূতি বিভাগে ৯০টির মতো শয্যা। অথচ রোগী ভর্তির হার প্রায় ১৭০-১৮০ জন। ভোর ৪টে থেকে হাসপাতালে রাউন্ড শুরু হচ্ছে ওই বিভাগে। তা সামলে অস্ত্রোপচার এবং অন্য কাজ করতে হয়। এতেই আউটডোরের সময় চলে যাচ্ছে। সাধারণ প্রসবের বাইরে কাকদ্বীপ হাসপাতালে মাসে গড়ে ১৩০টি করে সিজার হচ্ছে। এ সবের জন্য কম করে ৬ জন চিকিৎসক ওই বিভাগে প্রয়োজন।

এ ভাবে জোড়াতালি দিয়ে দীর্ঘ দিন চললে ফের নতুন ঝামেলায় পড়তে হতে পারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। কারণ তিনজন চিকিৎসকের পক্ষে এত বড় একটা কর্মকাণ্ড সামাল দেওয়া কার্যত অসম্ভব। বিষয়টি নিয়ে কাকদ্বীপ হাসপাতালের সুপার রাজর্ষি দাস অবশ্য কিছু বলতে চাননি।

কাকদ্বীপ ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের নেতা বিশ্বনাথ জানা বলেন, ‘‘হাসপাতালে পর্যাপ্ত চিকিৎসক নিয়োগ হচ্ছে না। অল্পসংখ্যক চিকিৎসক দিয়ে কাজ চালাতে হচ্ছে। তারপরে চিকিৎসকদের উপর যে ভাবে রোগীর পরিবার চড়াও হচ্ছে, তাতে নিরাপত্তার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকা দরকার।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE