কর্মীর অভাবে বন্ধ হয়ে পড়ে আছে এই গ্রন্থাগারটি। নিজস্ব চিত্র
বসিরহাট মহকুমা জুড়ে গ্রন্থাগারগুলিতে কর্মীর অভাব ক্রমশ প্রকট হয়ে উঠছে। তাই এক-একজন গ্রন্থাগারিককে অনেক সময়েই দু’টি করে গ্রন্থাগারের দায়িত্বভার সামলাতে হচ্ছে। তারপরেও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাচ্ছে না বলে অনেক গ্রন্থাগারের দরজা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
হাসনাবাদ থানার দক্ষিণ বিশপুর গ্রন্থাগারের গ্রন্থাগারিককে এখন সন্দেশখালি থানার খুলনা গ্রন্থাগারও সামলাতে হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দক্ষিণ বিশপুর গ্রন্থাগারে সপ্তাহে দু’দিন থাকেন তিনি। ছুটির দিন ছাড়া সপ্তাহের অন্যদিনগুলিতে যান খুলনা গ্রন্থাগারে। এ ভাবে প্রায় এক বছর হল দুই গ্রন্থাগার সামলাতে হচ্ছে একজনকেই।
অনেকটা একই অবস্থা দেখা গেল হাসনাবাদের ভান্ডারখালি গ্রন্থাগারে।। সেখানে একজন গ্রন্থাগারিক। দু’দিন খোলা হয় গ্রন্থাগার। তিনি আরও এক গ্রন্থাগার সামলাচ্ছেন। টাকির থুবা ব্যায়াম সমিতির গ্রন্থাগারেও সপ্তাহে দু’দিন করে একজন গ্রন্থাগারিক আসেন। সপ্তাহের অন্যদিনগুলিতে সন্দেশখালির ন্যাজাট গ্রন্থাগারে যেতে হয় তাঁকে।
হাসনাবাদের ভবানীপুরের কুবালি গোষ্ঠী পাঠাগার দু’দিন ও বসিরহাটের সংগ্রামপুরের একটি পাঠাগারে সপ্তাহের অন্যদিন যেতে হচ্ছে একজন মাত্র গ্রন্থাগারিককে। এমন উদাহরণ বহু আছে।
এ বিষয়ে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার পশ্চিমবঙ্গ সাধারণের গ্রন্থাগারের কর্মী সমিতির সম্পাদক পলাশ বসু জানান, “২০১১ সালের পর থেকে গ্রন্থাগারগুলিতে নতুন নিয়োগ হয়নি। ফলে এখন কর্মিসঙ্কটে কার্যত ধুঁকছে গ্রন্থাগারগুলি। বসিরহাট মহকুমায় সরকার পোষিত গ্রন্থাগারের সংখ্যা ৫৭টি। মোট অনুমোদিত পদ ১১৮টি। অথচ, এখন কর্মী আছেন মাত্র ২৭ জন।’’ তিনি জানালেন, গ্রন্থাগারে নিয়ম অনুযায়ী, এক একটি গ্রন্থাগারে দু’জন করে কর্মী থাকার কথা। কিন্তু তা এখন কোথাও নেই। শুধু তাই নয়, কর্মীর অভাবে এখন এক একজন গ্রন্থাগারিককে দু’টি করে গ্রন্থাগার সামলাতে হচ্ছে। পলাশৃ আরও জানান, ইতিমধ্যে শুধু বসিরহাট মহকুমা জুড়েই প্রায় ১২টি গ্রন্থাগার কর্মীর অভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এ বছরে ৭ জন কর্মী অবসর নেবেন। ফলে আরও ১৪টি গ্রন্থাগার বন্ধ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি।
হিঙ্গলগঞ্জের নবোদয় সাধারণ পল্লি পাঠাগারে যিনি কর্মরত ছিলেন, তিনি মে মাসে অবসর নেওয়ার পর থেকে আর কেউ নিয়োগ হননি। এমনকী, বাড়তি দায়িত্বও এখনও কেউ নেননি বলে এখন গ্রন্থাগার বন্ধই থাকছে বলে জানালেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ ছাড়া, টাকির সৈয়দপুর পল্লি উন্নয়ন সমিতি পাঠাগার, বেলের ধান্যকুড়িয়া পল্লি উন্নয়ন সমিতি-সহ আরও অনেক গ্রন্থাগার বন্ধ হয়ে পড়ে আছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, উত্তর ২৪ পরগনা জেলা জুড়ে প্রায় ৩৫টি গ্রন্থাগার বন্ধ আছে কর্মীর অভাবে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা গ্রন্থাগার আধিকারিক তাপস মণ্ডল বলেন, “কর্মীর অভাব আছে, তাই সমস্যা হচ্ছে। তবে নিয়োগ করা হবে। নিয়োগ হলে সমস্যা আর থাকবে না বলে আশা করা যায়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy