জামালউদ্দিন সর্দার। —ফাইল চিত্র।
অবশেষে পুলিশের জালে সোনারপুরের জামালউদ্দিন সর্দার। তিন দিনের চেষ্টায় শুক্রবার রাতে কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স এবং নরেন্দ্রপুর থানার সীমান্ত এলাকা থেকে জামালকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবারই তাঁকে বারুইপুর মহকুমা আদালতে হাজির করানো হবে।
গত ৭ জুলাই জামালের বিরুদ্ধে সোনারপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়। সেখানে সালিশি সভার নামে এক মহিলার পায়ে শিকল বেঁধে মারধর করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছিল। ওই ঘটনায় জামালের দুই সঙ্গী মুজিদ খাঁ এবং অরবিন্দ সর্দারকে আগেই গ্রেফতার করে সোনারপুরের থানার পুলিশ। কিন্তু মঙ্গলবার থেকে জামালের খোঁজ মিলছিল না। একের পর এক গ্রামবাসী তাঁর বিরুদ্ধে সালিশি সভা বসিয়ে হেনস্থা, তোলাবাজির অভিযোগ জানাতেই ‘পলাতক’ ছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরের প্রতাপনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ওই বাসিন্দা।
বুধবার জামালের বিরুদ্ধে সোনারপুর থানায় নতুন একটি এফআইআর দায়ের হয়। সেখানেও হেনস্থা এবং তোলাবাজির অভিযোগ করেন রুবিজান বিবি নামে এক অভিযোগকারিণী। তাঁর অভিযোগ, টাকা দেওয়ার পরেও শিকল দিয়ে বেঁধে তাঁকে মারধর করা হয়েছিল। জামাল চেয়েছিলেন ২০ হাজার টাকা। শেষমেশ পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে স্বামীকে ছাড়িয়ে বাড়ি নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু নিষ্কৃতি মেলেনি। মাস দেড়েকের মধ্যে বাকি ১৫ হাজার টাকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন জামাল। রুবিজানের স্বামী জানান, তাঁদের পারিবারিক একটি গন্ডগোল হয়েছিল। সেই কারণে এক দিন রাতে তাঁকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যান জামালের লোকজন। কেউ তাঁর পাশে দাঁড়াননি বলে এত দিন মুখ বুজে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘জামাল একা নয়, মুজি, উসমান, অরবিন্দ নামে চার জন আমায় তুলে নিয়ে গিয়েছিল। গ্রিলে বেঁধে মারধর করেছিল। উল্টো করে ঝুলিয়ে মেরেছে।’’ ওই দম্পতি এ-ও জানান, সোনারপুর দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক লাভলি মৈত্র তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দেওয়ায় সাহস করে তাঁরা থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন। পাশাপাশি বুধবার রুবিজানের বাড়িতে যান সিপিএম নেতা সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। পেশায় আইনজীবী সায়ন ওই পরিবারকে আইনি সহায়তার আশ্বাস দেন।
অন্য দিকে, জামালের বিশাল বাড়ির সামনের গেটে ঝুলছিল বড় তালা। আগের দিনই তাঁর ৫০টি সিসি ক্যামেরার ঘেরাটোপে থাকা বাড়ির সুইমিং পুলে কচ্ছপ মেলে। যা নজরে আসতেই পদক্ষেপ করতে চায় বন দফতর। কিন্তু, বৃহস্পতিবার কচ্ছপ উদ্ধার করতে গিয়েও বাড়ির গেটে তালা দেখে খালি হাতে ফিরে যেতে হয় তাদের। পুলিশ জামালের মোবাইল লোকেশন ‘ট্র্যাক’ করতে শুরু করে। কিন্তু মঙ্গলবার দুপুরের পর সেই মোবাইল ফোন ভাঙড়ের কাছে গিয়ে বন্ধ হয়ে যায়। তাঁর গ্রেফতারি নিয়ে বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপার পলাশচন্দ্র ঢালি বলেন, ‘‘জামাল আজ (শুক্রবার) গ্রেফতার হল। শনিবার তাঁকে আদালতে তোলা হবে। আমরা হেফাজতে চাইব। দেখি, (জিজ্ঞাসাবাদে) কী বেরোয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy