প্রতীক্ষা: ট্রাকের সারি।
নেপাল, ভুটান,বাংলাদেশ সীমান্তের সমস্ত বাণিজ্য করিডর দিয়ে অত্যাবশক পণ্য চলাচল শুরুর নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কিন্তু তারপরেও রবিবার পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে বাণিজ্যের কাজ শুরু হয়নি।
পেট্রাপোল বন্দর এবং সংলগ্ন এলাকায় প্রায় ২ হাজার ট্রাক পণ্য নিয়ে আটকে রয়েছে। রফতানিকারীরা চাইছেন, অন্তত ওই ট্রাকগুলি বাংলাদেশে ঢোকানো হোক। পেট্রাপোল এক্সপোর্টার্স অ্যান্ড ইমপোর্টার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পরিতোষ বিশ্বাস বলেন, ‘‘আটকে থাকা ট্রাকের মধ্যে মালপত্র নষ্ট হচ্ছে। দীর্ঘদিন ট্রাক আটকে থাকায় ট্রাকগুলিও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এখনই ট্রাকগুলি বেনাপোলে পাঠাতে না পারলে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা পরবর্তী সময়ে তা নিতে অস্বীকার করতে পারেন। তাছাড়া পার্কিং-এ ট্রাক থাকায় রোজ ট্রাক প্রতি পার্কিং ফি বাবদ ১৪০০-১৫০০ টাকা করে রফতানিকারীদের দিতে হওয়ার কথা। ফলে আর্থিক ভাবে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।’’
পরিতোষ বলেন, ‘‘প্রশাসনের কাছে আমরা আবেদন করেছি, যাবতীয় সুরক্ষা বজায় রেখে আটকে থাকা ট্রাকগুলিকে পণ্য নিয়ে বাংলাদেশে যেতে দেওয়া হোক।’’
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ঘোষণায় এখন কিছুটা হলেও আশার আলো দেখছেন রফতানিকারীরা। বন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, লকডাউনের শুরু থেকেই পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে পণ্য আমদানি রফতানি কার্যত বন্ধ। যদিও এবিষয়ে কেন্দ্রের কোনও নির্দেশ ছিল না। কেন্দ্রের লকডাউন নির্দেশিকায় সীমান্ত দিয়ে অত্যাবশক পণ্যের যাতায়াত চালু রাখবার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে তা কার্যত বন্ধ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দাবি, রাজ্য সরকার কোনও রকম আইনি বিজ্ঞপ্তি জারি না করে একতরফা সীমান্ত বন্ধ করেছে। সূত্রের খবর লকডাউন শুরু হতেই রাজ্যের বাইরে থেকে পণ্য নিয়ে আসা ট্রাক পেট্রাপোল থেকে দ্রুত ফিরিয়ে দিয়েছিল পুলিশ প্রশাসন। এখন আটকে থাকা পণ্য ভর্তি ট্রাকের রফতানিকারীরা প্রায় সকলেই স্থানীয়। রাজ্যের বাইরের রফতানিকারী সংখ্যায় কম। অভিযোগ, বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্ট মহল লকডাউনের মধ্যে বাণিজ্যের কাজ শুরু করতে চেয়ে ছিলেন। কিন্তু পুলিশ প্রশাসন ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে তা সম্ভব হয়নি। ব্যবসায়ীদের বন্ধ রাখতে বলা হয় বেসরকারি ভাবে। কোনও লিখিত নির্দেশ দেওয়া হয়নি।
প্রশাসনের পাল্টা যুক্তি ছিল। প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘বাংলাদেশের জেলাগুলিতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়েছে। বাণিজ্য চালু থাকলে এ দেশের ট্রাকচালকদের বাংলাদেশে পণ্য খালি করতে গিয়ে কয়েকদিন থাকতে হবে। কোনও ভাবে ওই চালক সংক্রামিত হলে এলাকায় তা ছড়িয়ে পড়বে। তাই বিষয়টির গুরুত্ব উড়িয়ে দেওয়া যায় না।’’ এলাকার মানুষও সরকারে এই যুক্তিকে সমর্থন করেছেন।
আটকে থাকা ট্রাকে অত্যাবশক পণ্য আছে কিনা তা নিয়ে বির্তক রয়েছে। পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, “আটকে থাকা ট্রাকে অত্যাবশক পণ্য নেই। বাণিজ্য চালু করার আগে স্থানীয় সমস্যাগুলি নিয়েও আলোচনা প্রয়োজন। আমাদের দাবি একজন নোডাল অফিসার নিয়োগ করা হোক। তিনি আলোচনা করে পদক্ষেপ করুন। ‘‘পরিতোষ অবশ্য জানিয়েছেন, ‘‘আটকে থাকা ট্রাকে শিল্পের মেটিরিয়াল সামগ্রী রয়েছে। যা অত্যাবশক পণ্য। এ ছাড়া কেমিক্যাল, ব্লিচিং পাউডার, মাছের খাবার তৈরি মালপত্র, পাটবীজ এ সব আটকে রয়েছে।’’
প্রশাসনের কর্তারা এ বিষয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে চাইছেন না। প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘ট্রাক চালক বাংলাদেশে গেলে, তারপর ফিরে আসলে তাকে ১৪ দিন কোয়রান্টিন কেন্দ্রে থাকতে হবে। এই বিষয়টা মাথায় রেখে কী ভাবে পণ্য রফতানি শুরু করা যায় তা নিয়ে আলোচনা চলছে।’’ — নিজস্ব চিত্র
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy