ক্ষোভ: সংস্কার হয়নি এই সেতু। নিজস্ব চিত্র
প্রায় ৪ বছর আগে সেতুতে সংস্কারের জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়েছিল। মাসখানেক ধরে মাটি পরীক্ষার কাজ চলে। কিন্তু তারপরেও সেতু সংস্কার না করে সেতুতে ঢোকার মুখে রড বসিয়ে বড় গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। তারপর থেকে উস্তির মগরাহাট ১ ব্লকের নৈনানপুর ও উস্তি বাজার সংযোগ নৈনানপুর খালের উপরে সেতুটি সংস্কারের জন্য বিভাগীয় দফতরে একাধিকবার জানালেও কাজ হয়নি না বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, উস্তির নৈনানপুর খালের প্রায় ১০০ মিটার চওড়া সেতুটি বহু বছর আগে তৈরি হয়েছিল। লোহার বিমের উপরে কংক্রিটের ঢালাই ফেলা সেতুটি নীচে বিমে কয়েক বছর আগে জং পড়ে যাওয়ায় তা বেশ কয়েক বছর আগে সংস্কার করা হয়েছিল। জোয়ার-ভাটা খেলে ওই খালে। সেতুর নীচের অংশ ফের নষ্ট হয়। ফের নতুন করে তৈরির জন্য কয়েক কোটি টাকা বরাদ্দ হয়।
বছর চারেক আগে ওই টাকা বরাদ্দ হওয়ার পরে নির্মাণের মাটি পরীক্ষা হয় একাধিকবার। কিন্তু সেতু নির্মাণ হয়নি। উল্টে দুর্ঘটনার ঝুঁকি এড়াতে ভারী যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। কেবল মাত্র ছোট যান, সাইকেল, মোটর বাইক চলাচল করতে পারে।
সেতুতে ভারী যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুর্ভেগে পড়েছেন এলাকার হাজার হাজার বাসিন্দা। সেতুর এক দিকে উস্তির বড় বাজার। বাজারের অদূরে বিডিও অফিস, থানা, ভুমি সংস্কার বন বিভাগ সহ নানা অফিস। একতারা, উত্তর কুসুম, উস্তির পঞ্চায়েতের বহু মানুষ নানা প্রয়োজনে সেখানে আসেন। মোটর ভ্যানে করে নৈনানপুর সেতুর মুখে নেমে প্রায় আধ কিলোমিটারের বেশি হাঁটতে হয়। সেতুতে ভারী যান চলাচল বন্ধ না থাকলে তাঁরা সরাসরি গাড়িতে করে অফিস মোড়ের পাশে নামতেন।
রোগীকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে নিয়ে বাণেশ্বরপুর গ্রামীণ বা ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে যেতেও সমস্যা হয়। ভারী যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে এলাকার নাজরা গাজির মোড় হয়ে কারবালা থেকে ঘোলার মোড়ে উঠে ৪-৫ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হচ্ছে। তাতে সময় বেশি লাগে। খরচ বেশি হয়।
কৃষিপ্রধান এলাকা থেকে ফসল নিয়ে আগে গাড়িতে সরাসরি সেতু পার হয়ে উস্তির বাজারে আনা যেত। এখন ঘুরপথে যেতে অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হয়। খালের এক দিকে নৈনানপুর মোড় থেকে ডায়মন্ড হারবার-শিয়ালদহ শাখায় দেউলা স্টেশনে যাতায়াতের রাস্তা রয়েছে। ওই রাস্তার চলাচল করে শ’খানেক মোটর ভ্যান, টোটো, অটো। স্টেশন থেকে মোটর ভ্যানে করে প্রায় ২ কিলোমিটার রাস্তা পার হয়ে সরাসরি অফিস-কাছারির যাত্রীরা পৌঁছে যেতে পারতেন। কিন্ত সেতু বন্ধ থাকায় তাঁদের নৈনানপুরে সেতুর মুখে নেমে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছতে হচ্ছে। স্টেশন মোড় থেকে নৈনানপুর সেতুর মুখ পর্যন্ত বেহাল রাস্তার জন্য ওই পথ অনেকে এড়িয়ে যান। তাঁরা নেতড়া স্টেশনে নেমে কিছুটা ঘুরপথে উস্তি যান।
নৈনানপুর সেতুর মুখ থেকে স্টেশন পর্যন্ত মোটর ভ্যান চালক সইদুল ঘরামি, ইসমাইল শেখদের অভিযোগ, সেতুতে ভারী যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যাত্রী কমেছে। আবার গাড়িতে করে আনাজ ধান নিয়ে যাওয়া বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আয় কমে গিয়েছে।
এলাকার সিপিএম নেতা চন্দ্রনাথ সর্দারের অভিযোগ, সেতুটি বহু দিন ধরে খারাপ। বাম জমানায় সংস্কার বা নতুন করে তৈরির জন্য বেশ কয়েক বার বাস্তুকার এসে পরিদর্শন করে যান। কিন্ত আজ পর্যন্ত সেতুটি তৈরি না হওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন অনেকেই।
এ বিষয়ে মগরাহাট ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি মানবেন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘ওই সাঁকোটি সংস্কারের জন্য প্রাথমিক ভাবে ৬ কোটি টাকা আনুমানিক ধরা হয়েছিল। কিন্তু কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে জানা যায়, সেতু তৈরি করতে গেলে দু’দিকে বেশ কিছু ঘরবাড়ি, দোকান উচ্ছেদ করতে হবে। তারপরে আর কাজ হয়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy