হাতে-হাত: পুজোর কাজে তদারকি আনারুলের (দাঁড়িয়ে)। নিজস্ব চিত্র
মনোমালিন্য হওয়ায় ক্লাব থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন তিনি। কিছু একটা করতে চেয়েছিলেন। সে সময়েই মাথায় আসে কালীপুজোর কথা। সেই থেকেই বনগাঁর আনারুল বিশ্বাস কালীপুজো করছেন। বনগাঁর জয়পুরের সেই কালীপুজো এ বার চোদ্দো বছরে পড়ল। পুজো কমিটির সম্পাদক আনারুলই।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই পবিত্র বিশ্বাস, ধীমান বিশ্বাস, গণেশ অধিকারীর মতো কয়েকজন যুবককে নিয়ে আনারুল ব্যস্ত পুজোর আয়োজনে। মণ্ডপ করা হয়েছে কাল্পনিক এক মন্দিরের আদলে। পুজো কমিটির সভাপতি উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন, ‘‘এ বার পুজো আয়োজনের পাশাপাশি ডেঙ্গি প্রতিরোধেও আমরা প্রচার অভিযান করছি। পুরসভার সহযোগিতায় এলাকায় আমরা মশা মারার তেলও স্প্রে করব।’’
প্রতিমার বায়না দেওয়া, প্রতিমা মণ্ডপে নিয়ে আসা, বাড়ি বাড়ি ঘুরে চাঁদা তোলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন-সহ পুজোর যাবতীয় আয়োজনে নেতৃত্ব দেন বছর বত্রিশের আনারুল। পেশায় ট্রাক ব্যবসায়ী আনারুলের কথায়, ‘‘ক্লাব থেকে বেরিয়ে আসার পরে আমরা জয়পুর ‘কালীবাড়ি যুবক বৃন্দ’ নামে একটি সংগঠন তৈরি করি। সকলে একত্রিত হয়ে সিদ্ধান্ত নিই, কালীপুজো করা হবে। তারপর থেকেই পুজো হচ্ছে।’’
শুধু কালীপুজো নয়, দুর্গাপুজোতেও সাহায্য করেন এই মুসলিম যুবক। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে শুনলেই হাজির আনারুল। শ্মশানে কাউকে নিয়ে যেতেও লোকজন পাশে পান আনারুলকে। তাঁর উদ্যোগে তৈরি হয়েছে এলাকায় একটি ফুটবল দল। দলটি বনগাঁ মহকুমা ক্রীড়া সংস্থা পরিচালিত মহকুমা ফুটবল লিগে খেলছে।
স্থানীয় কাউন্সিলর হিমাদ্রি মণ্ডল বলেন, ‘‘আনারুল যেমন কালীপুজোর আয়োজন করেন, হিন্দু ভাইদের নিয়ে তেমন সকলে মিলে এখানে ইদ উৎসবও পালন করা হয়। আমাদের এই এলাকা সম্প্রীতির বার্তা দেয়।’’ পবিত্র, ধীমান, আনারুলরা জানান, এখানে সকলেই একে অন্যের বিপদে-আপদে এগিয়ে আসেন। কোনও ভেদাভেদ নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy