Advertisement
E-Paper

সন্দেশখালির পাট্টাজমি ‘রেকর্ড’ করানোর উদ্যোগ

সোমবার সকালে বাসে এবং একটি ছোট গাড়িতে করে সন্দেশখালির দ্বারিরজাঙ্গাল গ্রাম থেকে ৬৬ জন বারাসতে জেলা পরিষদ ভবনে আসেন।

পাট্টা পাওয়া জমির রেকর্ড করতে উদ্যোগ।

পাট্টা পাওয়া জমির রেকর্ড করতে উদ্যোগ। ছবি সুদীপ ঘোষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:৪০
Share
Save

প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল আগেই। সেই মতো সন্দেশখালির পাট্টা পাওয়া যে সব গরিব গ্রামবাসীর জমি এতদিন ভূমি দফতরে ‘রেকর্ড’ করা হয়নি, সেই প্রক্রিয়া শুরু করল উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদ।

সোমবার সকালে বাসে এবং একটি ছোট গাড়িতে করে সন্দেশখালির দ্বারিরজাঙ্গাল গ্রাম থেকে ৬৬ জন বারাসতে জেলা পরিষদ ভবনে আসেন। জেলা সভাধিপতি নারায়ণ জানান, ওই ৬৬ জনের মধ্যে ৪৮ জনের জমির পাট্টা থাকা সত্ত্বেও রেকর্ড করানো নেই। বাকি যাঁরা এসেছিলেন, তাঁরা খাসজমিতে থাকেন জানিয়ে পাট্টা পেতে আবেদন জানান। সকলের সঙ্গে কথা হয়েছে। নথিপত্র দেখা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি) উপস্থিত ছিলেন। শীঘ্রই ওই গ্রামবাসীদের জমির রেকর্ড করে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।

এ বিষয়ে নারায়ণই উদ্যোগী হয়েছেন প্রথম থেকে। এ দিন ওই গ্রামবাসীদের যাতায়াত ও খাওয়া খরচ তিনিই বহন করেন। জেলা পরিষদে আসা এক গ্রামবাসী বলেন, ‘‘আমাদের উপর অত্যাচারের কথা জেলা সভাধিপতিকে বলেছি। উনি আশ্বস্ত করেছেন।’’

এত দিন কেন এই ব্যবস্থা করা হয়নি?

নারায়ণ বলেন, ‘‘এ দিন যাঁরা জমি রেকর্ড করাতে এসেছিলেন, তাঁদের বেশির ভাগই বাম আমলে পাট্টা পান। তখন কেন জমির রেকর্ড হয়নি, তার হিসাব বামেরাই বলতে পারবে।’’ তৃণমূল আমলে কেন এর আগে এই চেষ্টা হয়নি? এ বিষয়ে কিছু বলতে অস্বীকার করে জেলা সভাধিপতি।

নারায়ণের এই উদ্যোগকে ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’-এর চেষ্টা হিসেবেই দেখছেন বিরোধীরা। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রাজীব বিশ্বাস বলেন, ‘‘কাদের জেলা পরিষদে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, না জেনে কিছু বলা সম্ভব নয়। তবে, তৃণমূলের সময়ে পাট্টা পাওয়া মানুষকে জমি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। পাট্টা জমি অন্যের নামে রেকর্ড করে নেওয়া হয়েছে। মানুষ এ সব ভাল চোখে নিচ্ছে না বলেই ড্যামেজ কন্ট্রোলের চেষ্টা করা হচ্ছে।’’ বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য তাপস মিত্র বলেন, ‘‘শাহাজাহান বাহিনী মহিলাদের উপর যে অত্যচার করেছে, তা থেকে দৃষ্টি ঘোরাতে তৃণমূল বা জেলা পরিষদ ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে চাইছে। লাভ হবে না।’’

জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, সে সব গ্রামবাসী দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাস করেন, তাঁরা সরকারি ভাবে জমি পাট্টা পান। তবে, যদি দেখা যায় পাট্টা পাওয়ার ৫ বছর পর সেই সব প্রাপকেরা দারিদ্র্যসীমার উপরে উঠে গিয়েছেন, তা হলে তাঁদের পাট্টা কাটা যায় সরকারি নিয়মে। এ দিন যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদের মধ্যে এমন কোনও মানুষ আছেন কি না, তা ভূমি দফতরের কর্তারা খতিয়ে দেখবেন। সেই মতো পদক্ষেপ করা হবে। তৃণমূলের একটি সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে জেলা নেতৃত্ব জানতে পেরেছেন, সন্দেশখালির সদ্য বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা উত্তম সর্দার পাট্টার জমি ইজারা নিয়ে মেছোভেড়ি করে মাছ চাষ করতেন। অনেকেরই সেই জমি ‘রেকর্ড’ হয়নি। অভিযোগ, উত্তম ভূমি দফতরে প্রভাব খাটিয়ে সেই সব জমির ‘রেকর্ড’ করাতে দেননি। ইজারার টাকাও দেননি।

পাট্টার জমি রেকর্ড করানোর পাশাপাশি মানুষের ক্ষোভ কমাতে আরও বেশি করে নাগরিক পরিষেবা পৌঁছে দিতে তৎপর তৃণমূল নেতৃত্ব। আজ, মঙ্গলবার জেলাশাসককে নিয়ে সন্দেশখালির দু’টি ব্লকেই তিনি যাবেন বলে জানান নারায়ণ। সেখানে জেলার বিভিন্ন দফতরের কর্তা এবং স্থানীয় প্রশাসনের পদাধিকারীরাও থাকবেন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bangaon

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}