Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
health

অন্য হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে ছুটলেন সুপার

হাসপাতালে দু’ইউনিটের বেশি রক্ত ছিল না। বাধ্য হয়ে রাতের অন্ধকারে গাড়ি নিয়ে রক্তের জন্য অন্য হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে ছোটাছুটি করে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের সুপার অপূর্বলাল সরকার নিজেই জোগাড় করলেন রক্ত। 

রক্তের খোঁজে সুপার। নিজস্ব চিত্র

রক্তের খোঁজে সুপার। নিজস্ব চিত্র

সামসুল হুদা
ভাঙড় শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৬:৩২
Share: Save:

বাড়াবাড়ি রকমের রক্তক্ষরণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এক রোগী। রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রাও নেমে এসেছিল ৪.১ মিলিগ্রামে। তাকে বাঁচাতে বেশ কয়েক ইউনিট রক্তের প্রয়োজন ছিল।
কিন্তু হাসপাতালে দু’ইউনিটের বেশি রক্ত ছিল না। বাধ্য হয়ে রাতের অন্ধকারে গাড়ি নিয়ে রক্তের জন্য অন্য হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে ছোটাছুটি করে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের সুপার অপূর্বলাল সরকার নিজেই জোগাড় করলেন রক্ত।
বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনা। রক্তের জন্য বারুইপুর হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে ছোটেন হাসপাতালের সুপার। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সোমনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এটা চিকিৎসকদের দায়িত্ব ও কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। অনেকেই দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে এ ধরনের রোগীকে রেফার করে দেন। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে ক্যানিং হাসপাতালের সুপার যে কাজ করেছেন, তা প্রশংসার দাবি রাখে।’’
ক্যানিং মহকুমা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, তিন-চার দিন আগে সুন্দরবনের গোসাবা ব্লকের রাঙাবেলিয়ার জ্যোটিরামপুরের এক বধূ গর্ভপাত করাতে গ্রামীণ চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ খেয়েছিলেন। তারপরেই শুরু হয় রক্তক্ষরণ। অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় তাঁকে গোসাবা ব্লক হাসপাতলে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে রক্ত পরীক্ষা করলে দেখা যায়, হিমোগ্লোবিনের মাত্রা খুবই কম। পাঁচ ইউনিট রক্ত দেওয়ার প্রয়োজন।
কিন্তু ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে ওই মুমূর্ষু রোগীর বি পজ়িটিভ গ্রুপের মাত্র এক ইউনিট রক্ত ছিল। বাকি রক্ত জোগাড় করার জন্য সে সময়ে রোগীর সঙ্গে তাঁর বৃদ্ধা মা ছাড়া আর কেউ ছিলেন না। স্বামী কাজের জন্য বাইরে ছিলেন।
এই পরিস্থিতিতে রোগীকে বাঁচাতে সুপার নিজেই এক ইউনিট রক্ত রোগীর শরীরে দিয়ে বাকি রক্তের জন্য পৌঁছে যান প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে বারুইপুর হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে। সেখান থেকে রক্ত এনে রোগীকে দেন। আপাতত ওই মহিলা ক্যানিং হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল।
রোগীর মা বলেন, ‘‘যে ভাবে ওই চিকিৎসক আমার মেয়ের প্রাণ বাঁচালেন, তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ।’’ সুপার অপূর্বলাল বলেন, ‘‘আমরা মানুষের চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য কাজ করছি। এ ক্ষেত্রে ওই মহিলার সমস্যাটা বেশ জটিল ছিল। করোনা পরিস্থিতিতে ও লকডাউনের কারণে এই মুহূর্তে হাসপাতালে ব্লাড ব্যাঙ্কে পর্যাপ্ত রক্ত নেই। রোগীর সঙ্গেও তেমন কেউ ছিলেন না। তাই বাধ্য হয়ে রোগীকে বাঁচাতে আমাকে ছোটাছুটি করতে হয়েছে। এ কাজে আমাকে সহযোগিতা করেছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক।’’ সকলের সহযোগিতায় রোগীকে বাঁচানো সম্ভব হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

অন্য বিষয়গুলি:

Health Hospital Super BloodBank
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy