ফ্লেক্সের ছবিতে উপস্থিত জ্যোতিপ্রিয়। ছবি: সুজিত দুয়ারি
জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের পাশেই আছে হাবড়া তৃণমূল
হাবড়ার বিধায়ক তথা রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে রেশন দুর্নীতি কাণ্ডে গ্রেফতার করেছে ইডি। এই পরিস্থিতিতে দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের নির্দেশে হাবড়া শহরে তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করা হল বৃহস্পতিবার। শহর তৃণমূল কমিটির ব্যবস্থাপনায় কলতান অডিটোরিয়ামে বিজয়া সম্মেলন হয়েছে। তৃণমূলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, এ দিনের সম্মেলন কার্যত প্রতিবাদ সভায় পরিণত হয়। মঞ্চ থেকে ‘বালুদা’র (জ্যোতিপ্রিয়ের ডাক নাম) পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন নেতা-নেত্রীরা।
কর্মী-সমর্থকদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। অডিটোরিয়ামে বসার জায়গা না পেয়ে অনেকে বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। বিজয়া সম্মিলনীতে মিষ্টিমুখ করানো হয়নি। গান-বাজনার ব্যবস্থা ছিল না। শুধু চা-কফি, বিস্কুটেই কাজ সারা হয়েছে। হাবড়ার পুরপ্রধান নারায়ণ সাহা বলেন, "প্রতি বছর বালুদা বিজয়া সম্মেলনে উপস্থিত থেকে নিজে দায়িত্ব সব সামলাতেন। আজ তাঁর অনুপস্থিতিতে আমাদের মনে শোকের আবহ। তাই গান-বাজনা, মিষ্টিমুখের আয়োজন করিনি।" নারায়ণ বলেন, "বালুদা আমাদের অভিভাবক ছিলেন। ভবিষ্যতেও থাকবেন। আমরা তাঁর ফেরার অপেক্ষায় থাকব।" এ দিনের বিজয়া সম্মিলনীর ফ্লেক্সে ব্যানারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে জ্যোতিপ্রিয় এবং সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারের ছবি দেখা গিয়েছে।
কাকলির সাংসদ এলাকার মধ্যে হাবড়াও পড়ে। যদিও তৃণমূল সূত্রের খবর, কাকলিকে কখনওই হাবড়া নিয়ে বিশেষ মাথা ঘামাতে দেখা যায়নি। এখানে জ্যোতিপ্রিয়ই ছিলেন শেষকথা। জ্যোতিপ্রিয়ের অনুপস্থিততে আগামী দিনে হাবড়ায় কাকলির ক্রিয়াকলাপ বাড়বে কি না, সে দিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল। ইতিমধ্যে কাকলির ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত হাবড়ার কিছু তৃণমূল নেতা সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। তৃণমূলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, এ দিনের সম্মেলনে এমন অনেকেই এসেছিলেন, যাঁরা এত দিন নিস্ক্রিয় ছিলেন দলীয় কর্মকাণ্ড থেকে। কাকলি এ দিন বলেন, "বালুর বিরুদ্ধে গভীর চক্রান্ত করা হয়েছে। একটা অসুস্থ মানুষ। দিনে চার বার ইনসুলিন নিতে হয়। ওঁকে মেরে ফেলার চক্রান্ত করা হয়েছে।" হাবড়ার প্রাক্তন পুরপ্রধান নীলিমেশ দাস বলেন, "কেন্দ্র ও বিজেপির চক্রান্তে একটা মানুষ আজ আমাদের মধ্যে উপস্থিত নেই। কিন্তু তিনি আমাদের মনে আছেন। আমরা তাঁর পাশে ছিলাম, আছি, থাকব।" হাবড়া শহর তৃণমূল সভাপতি সীতাংশু দাসের কথায়, "কেন্দ্র এবং বিজেপি লোকসভা ভোটের আগে ইডিকে ব্যবহার করে চক্রান্ত করে আমাদের বিধায়ককে গ্রেফতার করিয়েছে। আমরা বালুদার অপেক্ষায় থাকব।"
তবে তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বের এই ভূমিকার সমালোচনা করেছে বিরোধী দলগুলি। সিপিএম নেতা আশুতোষ রায়চৌধুরী বলেন, "জ্যোতিপ্রিয়ের পাশে তো থাকতেই হবে, কারণ সব কটাকে জেল যেতে হবে। এটাই এ দিন বলা হল, সকলে তৈরি থাকো। জেলে গিয়ে জ্যোতিপ্রিয়ের পাশে থাকতে হবে।" বিজেপি নেতা বিপ্লব হালদার বলেন, "এঁদের জ্যোতিপ্রিয়কে সমর্থন তো করতেই হবে। কারণ, এঁদের অনেকেই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। সে কারণে বড়দাকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। কারণ, তাঁরা জানেন, বড়দা না বাঁচলে ভাইয়েরা বাঁচবে না।" বিজেপি বা কেন্দ্রের চক্রান্তের অভিযোগ প্রসঙ্গে বিপ্লব বলেন, "জ্যোতিপ্রিয়ের বিরুদ্ধে চক্রান্ত হয়ে থাকলে ওঁরা বিজয়া সম্মিলনী না করে ইডির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করুন!"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy