Advertisement
২০ ডিসেম্বর ২০২৪
Guavas of Baruipur

বিপণনে পিছিয়ে বারুইপুরের পেয়ারা, দাবি উঠছে সরকারি সাহায্যের

বারুইপুর ব্লকের ১৯টি পঞ্চায়েত এলাকার প্রায় সব ক’টিতেই কম-বেশি পেয়ারা চাষ হয়। বিশেষত,আদিগঙ্গার তীরবর্তী পঞ্চায়েতগুলিতে পেয়ারার ফলন বেশি।

বারুইপুর ও সংলগ্ন এলাকার পেয়ারা এ ভাবেই রফতানি হয় দেশের নানা জায়গায়। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল

বারুইপুর ও সংলগ্ন এলাকার পেয়ারা এ ভাবেই রফতানি হয় দেশের নানা জায়গায়। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল

সমীরণ দাস 
বারুইপুর শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৩ ০৫:২৮
Share: Save:

পেয়ারা চাষে বারুইপুরের খ্যাতি রয়েছে। স্বাদ এবং পুষ্টিগুণে এই এলাকার পেয়ারার জুড়ি মেলা ভার। গোটা দেশেই চাহিদা রয়েছে বারুইপুরের পেয়ারার। কিন্তু পেয়ারা চাষ ও বিপণনে পরিকল্পনার অভাব নিয়ে অভিযোগ বিস্তর। পেয়ারা-সহ এলাকার ফল চাষে সরকারি সহযোগিতার দাবি দীর্ঘদিনের। ভোটের হাওয়ায় ফের সেই দাবি তুলছেন কৃষকেরা।

বারুইপুর ব্লকের ১৯টি পঞ্চায়েত এলাকার প্রায় সব ক’টিতেই কম-বেশি পেয়ারা চাষ হয়। বিশেষত,আদিগঙ্গার তীরবর্তী পঞ্চায়েতগুলিতে পেয়ারার ফলন বেশি। ওই সব এলাকায় কয়েক হাজার পরিবার শুধু পেয়ারা চাষের উপরেই নির্ভরশীল। বারুইপুর থেকে নিয়মিত রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে, দেশে, এমনকিদেশের বাইরেও রফতানি হয় পেয়ারা। স্থানীয় সূত্রের খবর, কয়েক লক্ষটাকার ব্যবসা হয় প্রতিদিন। কিন্তু, পুরোটাই চলছে অসংগঠিত ভাবে। সরকারি তরফে চাষিদের সাহায্য, বিপণনে সহযোগিতা বা এই ব্যবসাকে সংগঠিত করার কোনও প্রয়াস নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। এলাকায় বিচ্ছিন্ন ভাবে ফল প্রক্রিয়াকরণের কয়েকটি কারখানা রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রের খবর, পেয়ারা বা অন্য ফল চাষকে কেন্দ্র করে সংগঠিত ফল প্রক্রিয়াকরণ শিল্প গড়ে ওঠার সুযোগ রয়েছে এলাকায়। সরকারি তরফে পরিকল্পনাও হয়েছিল। কিন্তু তা কার্যকর হয়নি। তার উপরে বারুইপুরে নগরায়ণের প্রভাব পড়ছে পেয়ারা চাষে। একের পর এক চাষের জমি বিক্রি হয়ে সেখানে মাথা তুলছে বাড়ি, ফ্ল্যাট, আবাসন। ফলে আগামী দিনে এলাকার পেয়ারা চাষ সঙ্কটে পড়বে বলেই আশঙ্কা চাষিদের।

বারুইপুরের এক পেয়ারা চাষি বলেন, “আমাদের পেয়ারার খ্যাতি রয়েছে। কিন্তু চাষের সমস্যা, চাষিদের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে কেউ কথা বলে না। ধান বা অন্য ফসলের ফলন বৃদ্ধি বা পোকারআক্রমণ থেকে ফসল বাঁচানোর পদ্ধতি নিয়ে সরকারি উদ্যোগে নিয়মিত কর্মশালা হয়। পেয়ারার ক্ষেত্রে সে সব হয় না। পেয়ারা চাষের তেমন কদর নেই। নতুন প্রজন্ম এই কাজে আসতে চাইছে না।” আর এক চাষির কথায়, “চিকিৎসকেরা বলছেন, আপেলের সমান পুষ্টিগুণ রয়েছে পেয়ারায়। অথচ, বাজারে পেয়ারার দাম আপেলের ধারেকাছেও নয়। তার উপরে সারা বছর প্রচুর পরিমাণে পেয়ারা পাওয়া যায়। ঠিক মতো বিপণন হলে এর চাহিদাআরও বাড়ত।”

রোজ ভোরে বারুইপুরের কাছারি বাজার-সহ কয়েকটি এলাকায় পেয়ারার খোলা বাজার বসে। চাষিরা খেতের পেয়ারা নিয়ে রাস্তার ধারে এসে বসেন। সেখান থেকে ব্যবসায়ীরা পেয়ারা কিনে নিয়ে যান। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ওই পেয়ারা ট্রেনে বা কলকাতার ফুটপাতে বিক্রি করেন তাঁরা। কিছু পেয়ারা বাইরে রফতানি হয়। চাষি ও ব্যবসায়ীদের দাবি, আরও বেশি রফতানির সুযোগ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে মুনাফাও বাড়বে। কিন্তু পরিকল্পনার অভাবে তা হচ্ছে না। এক পাইকারি ব্যবসায়ীর কথায়, “বাইরে সরবরাহের জন্য ঠিক ভাবে সংরক্ষণ, মোড়কবন্দি করা দরকার। কিন্তু এলাকায় সরকারি স্তরে তেমন ব্যবস্থা নেই। কিছু ব্যবসায়ী নিজস্ব উদ্যোগে মোড়কবন্দি করে বাইরে সরবরাহ করছেন। আরও বেশি পেয়ারা রফতানি হলে সব পক্ষই লাভবান হবে।”

বারুইপুর (পশ্চিম)-এর বিধায়ক বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পেয়ারা-সহ সব ফলই বারুইপুরের সম্পদ। সরকারের তরফে বিভিন্ন ভাবে চাষিদের পাশে দাঁড়ানো হচ্ছে। এখানে একটি ফল প্রক্রিয়াকরণ শিল্প গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। এ ব্যাপারে কাজ এগিয়েছে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Baruipur guava
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy