Advertisement
৩০ নভেম্বর ২০২৪
Baruipur SDO Hospital

হাসপাতালে ঢুকে স্বাস্থ্যকর্মীকে মার গুন্ডাবাহিনীর, নেপথ্যে কি গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব?

হাসপাতালের ভিতরে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও তাঁদের পরিজনদের সামনে এমন ঘটনা যে ঘটতে পারে, সেটাই বিশ্বাস করতে পারছেন না কেউ! হতবাক পুলিশও।

বারুইপুর মহকুমা হাসপাতাল।

বারুইপুর মহকুমা হাসপাতাল। ছবি সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৩ ০৭:২২
Share: Save:

ঠিক যেন সিনেমার দৃশ্য! হাসপাতালের ভিতরে ঢুকে জনা পনেরোর এক সশস্ত্র গুন্ডাবাহিনী বেধড়ক মারধর করল সেখানকারই এক কর্তব্যরত স্বাস্থ্যকর্মীকে। এই ঘটনার সঙ্গে হাসপাতালের পরিষেবার কোনও সম্পর্ক নেই বলেই জানা গিয়েছে। প্রহৃত স্বাস্থ্যকর্মী তৃণমূলের স্থানীয় নেতা এবং এই মারধরের ঘটনা দলীয় কোন্দলের জেরেই ঘটেছে বলে এলাকা সূত্রের খবর। কিন্তু হাসপাতালের ভিতরে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও তাঁদের পরিজনদের সামনে এমন ঘটনা যে ঘটতে পারে, সেটাই বিশ্বাস করতে পারছেন না কেউ! হতবাক পুলিশও। সোমবার রাতের ওই ঘটনায় তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়েছে বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই রাতে বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে চড়াও হয় সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা। তার পরে সেখানকার কর্মী তথা বারুইপুরের মদারহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের ‘জয় হিন্দ’ বাহিনীর সভাপতি কৃষ্ণেন্দু মণ্ডলকে বেধড়ক মারধর করে। কৃষ্ণেন্দুর মা উমা মণ্ডল মদারহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য। কৃষ্ণেন্দুর অভিযোগ, হামলা চালিয়েছে ওই পঞ্চায়েতে তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি প্রদীপ দে-র অনুগামীরা। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে প্রদীপ বলেছেন, ‘‘এই ঘটনার সঙ্গে আমি কোনও ভাবেই যুক্ত নই।’’ বেশ কিছু দিন ধরেই ওই পঞ্চায়েতে তৃণমূলের গোষ্ঠী-কোন্দল মাথাচাড়া দিয়েছে বলে দলীয় সূত্রের খবর। আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে এলাকা কাদের দখলে থাকবে, সেই প্রশ্নেই এখন বিভক্ত দলের সংগঠন।

সোমবার রাতে কৃষ্ণেন্দু জরুরি বিভাগের সামনে দাঁড়িয়ে তাঁর এক পরিচিতের সঙ্গে কথা বলছিলেন। তখনই আচমকা জনা ১৫ সশস্ত্র যুবক মোটরবাইক নিয়ে সেখানে আসে। প্রত্যেকেরই মুখ ঢাকা। অভিযোগ, বাইক থেকে নেমেই কৃষ্ণেন্দুকে মারধর করতে থাকে তারা। হাসপাতালের মধ্যে এমন ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন চিকিৎসক, নার্স, রোগী ও তাঁদের আত্মীয়েরা। ছুটে আসেন নিরাপত্তারক্ষীরা। তাঁদের দেখে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বারুইপুর থানার পুলিশ। দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে বারুইপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সিসিটিভি-র দৃশ্য খতিয়ে দেখে তাদের শনাক্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। মদারহাট পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য মহম্মদ রফিক বলেন, ‘‘পরিস্থিতি মোটেই ভাল নয়। আমিও আতঙ্কে আছি। দুষ্কৃতীরা আমাকেও খুন করার চেষ্টা করতে পারে। আমার দাদা মদারহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের দলীয় সভাপতি এবং বৌদি গ্রাম পঞ্চায়েত-প্রধান।’’

বারুইপুর মহকুমা হাসপাতাল বারুইপুর (পশ্চিম) বিধানসভা কেন্দ্র এলাকায়। ওই কেন্দ্রের বিধায়ক বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। মদারহাট গ্রাম পঞ্চায়েতও ওই বিধানসভা কেন্দ্রে। দলীয় কোন্দলের অভিযোগ অস্বীকার করে বিমান বলেন, ‘‘এটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এর সঙ্গে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের যোগ নেই। একটি জমির দখল নেওয়াকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের ঝামেলা।’’ তাঁকে জানানো হয়, হাসপাতাল চত্বরে এমন ঘটনায় রোগী থেকে চিকিৎসক, সকলেই আতঙ্কিত। যা শুনে বিমান বলেন, ‘‘পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। নিরাপত্তার বিষয়টিও গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্তেরা শাস্তি পাবেই।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Baruipur SDO Hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy