জলের-খোঁজে: বসিরহাটে। নিজস্ব চিত্র
কল আছে কিন্তু জল নেই। সে জন্য ভোর হতেই কলসি কাঁখে মহিলারা নদীর পাড়ে চলে যান। শুধু মহিলা নয়, জল আনতে যেতে হচ্ছে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া মেয়েদেরও।
হিঙ্গলগঞ্জের বিশপুর পঞ্চায়েতের কাকারিয়া গ্রামের একটি কলেও জল পড়ে না। লোকসভা, বিধানসভা থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়ে সব দলের কাছ থেকে শুধু প্রতিশ্রুতি মেলে। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয় না। ভোট ফুরালে আর কারও পাত্তাও পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
প্রায় একই অবস্থা কাকারিয়া গ্রামের পাশ্ববর্তী বাইনাড়া, ধানিখালি, মালিপাড়া এবং তালতলা গ্রামে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ওই সব গ্রামের কলে ছ’মাস জল মিললেও বাকি ছ’মাস জল থাকে না। ওই সময়ে সেখানকার বাসিন্দাদের পানীয় জলের জন্য প্রায় চার কিলোমিটার পথ পেরিয়ে কখনও বাইলানি কখনও ডাঁসা নদী পার হয়ে ঘটিহারা গ্রামে যেতে হয়। এলাকার মানুষের দাবি, আগে গরমের সময়ে অল্প হলেও রাস্তার নলকূপে জল উঠত। কিন্তু এখন তাও হয় না।
সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকায় জলের স্তর নেমে যাওয়ার কারণেই হিঙ্গলগঞ্জের সর্বত্র পানীয় জল সঙ্কট দেখা দিয়েছে বলে জানান হিঙ্গলগঞ্জের বিডিও সুদীপ্ত মণ্ডল। তাঁর কথায়, ‘‘এলাকাতে পানীয় জলের বড় প্রকল্পের চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রকল্পের কাজ শেষ হলে আগামী দিনে আর এলাকাতে পানীয় জলের এই সমস্যা থাকবে না।’’
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কাকারিয়া গ্রামে প্রাথমিক স্কুলের সামনে একটি নলকূপ আছে। সেটির থেকেও এখন আর জল পাওয়া যাচ্ছে না। গ্রামের মানুষ এই গরমে জলের সমস্যায় ভুগছেন। পদ্মা দলুই, ফাল্গুনী সরকার, পম্পা দলুইরা বলেন, ‘‘গরম পড়লেই জলের জন্য আমাদের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। প্রশাসনকে সব জানিয়েও কোনও লাভ হয় না।’’
সকাল থেকে স্কুলে না গিয়ে ছাত্রছাত্রীরা জলের খোঁজে এই গ্রাম ওই গ্রাম ঘুরে বেড়ায়। শম্পা দলুই, খুকু মণ্ডল, কাজল দলুই, ছন্দা সরকাররা বলে, ‘‘গ্রামের কল থেকে জল ওঠে না। স্কুলে গিয়ে ক্লাস না করে সকাল হলেই বইখাতার বদলে আমরা সবাই সাইকেলে কলসি বেঁধে জল আনতে যাই।’’ স্থানীয় স্কুলের শিক্ষিকা প্রতিমা বরের কথায়, ‘‘স্কুলের কলে জল না পড়ায় বাচ্চাদের বাড়ি থেকে জল আনতে হয়।’’
বিশপুর পঞ্চায়েতের প্রধান নিবেদিতা দাস বলেন, ‘‘আমার এলাকাতে ১৬টি নলকূপ আছে। তার মধ্যে মাত্র ৩টি নলকূপ জল পড়ে। বাকিগুলিতে পানীয় জলের সমস্যা। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দফতরকে জানিয়েও কোন সুরাহা হয়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy