Advertisement
০৮ জুলাই ২০২৪
Garbage Dump

দুর্গন্ধে দমবন্ধ, বেহাল ঘাট

বিভিন্ন দ্বীপের বাসিন্দারা ভুটভুটিতে করে ওই ঘাটে নেমে রায়দিঘি বাজারে আসেন।

রায়দিঘি জেটিঘাটের পাশে আবর্জনা স্তূপ।

রায়দিঘি জেটিঘাটের পাশে আবর্জনা স্তূপ। ছবি: দিলীপ নস্কর।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়দিঘি শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪ ০৭:৪২
Share: Save:

ঘাটের পাশে পড়ে পচাগলা আবর্জনার স্তূপ। তা থেকে দুর্গন্ধ ছড়াছে। রায়দিঘির মণি নদী সংলগ্ন ১ নম্বর জেটিঘাটের কাছে এই পরিস্থিতিতে প্রাণ ওষ্ঠাগত নিত্যযাত্রী, বাসিন্দাদের। তাঁদের অভিযোগ, বাজারের আবর্জনাই ওই দুর্গন্ধের কারণ। বিষয়টি নিয়ে একাধিক বার বাজার কমিটি আলোচনায় বসলেও কোনও সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।

নদী-নালা ঘেরা রায়দিঘি মথুরাপুর ২ ব্লকের রায়দিঘি বাজার সংলগ্ন মণি নদীতে ওই ঘাটটি রয়েছে। ব্লকের ১২টি পঞ্চায়েতের মধ্যে নগেন্দ্রপুর, নন্দকুমারপুর, কঙ্কনদিঘি, রায়দিঘি ও কুমড়োপাড়া— এই ৫টি পঞ্চায়েতে এলাকার বাসিন্দারা নদীপথে ভরসা করেন। বিভিন্ন দ্বীপের বাসিন্দারা ভুটভুটিতে করে ওই ঘাটে নেমে রায়দিঘি বাজারে আসেন। সকাল থেকে রাত অবধি ওই জেটি ঘাটে যাত্রীরা ওঠানামা করেন। যাত্রীদের ক্ষোভ, ঘাটটি এমন ব্যস্ত হলেও বেশ কয়েক বছর ধরে রায়দিঘি বাজারের প্রায় সমস্ত দোকান তাদের আবর্জনা জেটি ঘাটের পাশে ফেলতে শুরু করেছে। হাজারের বেশি দোকান নির্বিচারে আবর্জনা ফেলায় তা পচে গিয়ে দুর্গন্ধ বের হয়। এক যাত্রীর কথায়, ‘‘দম বন্ধ হয়ে আসে। নাকে রুমাল চাপা দিয়ে চলাফেরা করতে হয়।’’ কেবল যাত্রীরাই নন, সুন্দরবনে বেড়াতে যাওয়া পর্যটকেরাও ওই ঘাট দিয়ে নদী পথে রওনা হন। কৃষিপ্রধান এলাকার মানুষজন আনাজ নিয়ে রায়দিঘি বাজারে বিক্রির জন্য আনেন। ঘাট লাগোয়া ধানের পাইকারি বাজারে চাষিরা ধান নিয়ে আসেন। এখন ইলিশের মরসুম চলছে। সমুদ্র থেকে মাছ ধরে ফেরা বহু ট্রলার ওই ঘাটের পাশে দাঁড়ায়। বহু মৎস্যজীবীদের সারা রাত ঘাটের পাশে থাকতে হয়। দুর্গন্ধে তিতিবিরক্ত সেই মৎস্যজীবীরাও।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই ঘাটের পাশে আবর্জনা ফেলতে বারণ করা হলেও কেউ কথা শোনে না। রাতের অন্ধকারেও অনেকে নানা পচা জিনিস ফেলে যান বলে অভিযোগ। রায়দিঘি বাজারের ব্যবসায়ীদের দাবি, নোংরা ফেলার জন্য নির্দিষ্ট জায়গায় ভ্যাট তৈরি করার কথা হয়েছিল। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা হয়নি।

ঘাটের পাশে শৌচালয়টিও বেহাল। শৌচালয়ে পাইপ লাইনের জলের সংযোগ না থাকায় ঘাটে ঢোকার মুখেই দুর্গন্ধে বমি হওয়ার জোগাড় হয়। ঘাটের পাশে একমাত্র পানীয় জলের নলকূপটিও কার্যত অকেজো। প্রায়ই নোনা, দুর্গন্ধ জল বেরোয়। সব মিলিয়ে সব দিক থেকে ঘাটটি বেহাল বলে ক্ষোভ স্থানীয়দের।

রায়দিঘি ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য সন্তোষ মাইতির দাবি, নির্দিষ্ট আবর্জনা ফেলার কোনও ভ্যাট না থাকায় সমস্যা তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে ব্যবসায়ী সমিতির মধ্যে আলোচনা হয়েছে। প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতাদের উদাসীনতায় কোনও পদক্ষেপ করা হচ্ছে না।’’

রায়দিঘির বিধায়ক অলোক জলদাতার কথায়, ‘‘মণি নদী লাগোয়া সরকারি জমি থাকলেও তাতে ভ্যাট করা যাচ্ছে না। কারণ, ভ্যাট থেকে নদীর জলে দূষণ হবে। তাই পাশেই কুমড়ো পাড়া পঞ্চায়েত এলাকায় জমির খোঁজ চলছে। জমি পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Raidighi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE