Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus Lockdown

ফুচকা বিক্রি করছে স্কুলের ফার্স্ট বয়

শ্যামনগর কান্তিচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ে সন্দীপন।  মাধ্যমিক দিয়ে এখন রেজাল্টের অপেক্ষা করছে। বাবা সঞ্জয় দাস অটো চালান।

সন্দীপন দাস

সন্দীপন দাস

মধুমিতা  দত্ত
শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০২০ ০২:৪২
Share: Save:

লকডাউনের জেরে ফুচকা বিক্রি করতে হচ্ছে এক মেধাবী ছাত্রকে। উত্তর ২৪ পরগনার শ্যামনগরের শরৎপল্লির সন্দীপন দাস এ বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে। সন্দীপন স্কুলে বরাবরই প্রথম হয়। টেস্ট পরীক্ষাতেও প্রথম হয়েছে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে পরিবারে অর্থ জোগানের জন্য ফুচকা বিক্রি করতে হচ্ছে তাকে।

শ্যামনগর কান্তিচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ে সন্দীপন। মাধ্যমিক দিয়ে এখন রেজাল্টের অপেক্ষা করছে। বাবা সঞ্জয় দাস অটো চালান। লকডাউনে তা সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। সন্দীপনের পরিবারে আছে চারজন। বাবা-মা এবং সন্দীপনের যমজ বোন রণিতা। বোনও এবার মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে। দুই সন্তানের পড়াশোনা চালিয়ে, সংসার চালাতে হিমশিম এমনিই খান সঞ্জয় বাবু। লকডাউনে সেই পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। যার ফলে সন্দীপনকে ফুচকা বিক্রি করতে এগিয়ে আসতে হয়েছে। সঞ্জয়বাবু বললেন, "সংসারটা কোনওমতে চালাই। লকডাউনের ফলে চালানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। প্রথমে ফুচকা যেখানে বানানো হয় সেখান থেকে ফুচকার প্যাকেট এনে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করতাম। তারপর এখন স্ত্রী বাড়িতে বানায়। ছেলেটাও আমার সঙ্গে ফুচকা বিক্রি করতে বেরিয়ে পড়ে।" সঞ্জয়বাবু জানালেন, তিনি কখনোই চান না তার ছেলেটা ফুচকা বিক্রি করুক। তাহলে পড়াশোনা কখন ও করবে? এই অভাবের সংসারে সন্তানদের পড়াশোনা চালিয়ে নিয়ে যাওয়া বড়ই কষ্টকর। দুই সন্তানের নতুন ক্লাসের বইপত্রও কিনতে হবে। প্রাইভেট টিউটরের বেতনও দিতে হবে। সম্প্রতি অটো চালানো শুরু করলেও যাত্রী সেরকম পাওয়া যাচ্ছে না। তাই ফুচকা বিক্রি করতেই হচ্ছে।

সন্দীপনের স্কুলের বাংলার শিক্ষক সুদীপ বসু বললেন, "সন্দীপন স্কুলে বরাবর ফার্স্ট হয়েছে। টেস্টেও ফার্স্ট হয়েছে। পড়াশোনা করায় ওর খুব আগ্রহ। এমন একটা ছেলের যদি পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায় সেটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক হবে।"

সন্দীপন জানাল, মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের পর স্কুল খুলে গেলে আবার সে স্কুলে যেতে চায়। কিন্তু পরিবারের এই অভাব তাকে ভাবাচ্ছে। তার থেকে ১০ মিনিটের ছোট বোনেরও পড়াশোনা কিভাবে চলবে সেই নিয়েও তার চিন্তা। এদিন সন্দীপন জানাল, তার খুব ইচ্ছা কোনও আইআইটিতে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়ার। বোন রনিতা 'নিট' দিয়ে ডাক্তারি পড়তে চায়। কিন্তু সবকিছুর ওপর এখন চিন্তা, টাকা না থাকলে সংসার চলবে কী করে। আর তাদের পড়াশোনাই বা চলবে কী করে!

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Lockdown Phuchka
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy