দাহ্য: অস্থায়ী দোকানের উপর এভাবেই রয়েছে পলিথিনের ছাউনি। ছবি : সুজিত দুয়ারি।
ফের আগুন লাগল অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভা এলাকার গোলবাজারে। বৃহস্পতিবার সকালের ঘটনা। দমকল কর্মীরা এসে আগুন নেভান। গোলবাজার ব্যবসায়ী সমিতি সূত্রে জানানো হয়েছে, শর্টসার্কিট থেকে বিদ্যুতের একটি খুঁটিতে আগুন লেগে গিয়েছিল।
স্থানীয় সূত্রের খবর, এই নিয়ে গত দু’বছরে ১৪ বার আগুন লাগল এই বাজারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শর্টসার্কিট থেকেই আগুন লাগছে। অভিযোগ, বাজারের বিভিন্ন জায়গায় বিপজ্জনক ভাবে কুণ্ডলি পাকিয়ে রয়েছে বিদ্যুতের তার। তা থেকেই বিপদ ঘটছে।
অতীতে গোলবাজারে আগুন লেগে মিষ্টির দোকান, কাঠগোলা-সহ স্থায়ী, অস্থায়ী দোকানঘর পুড়ে গিয়েছিল। এত বার আগুন লাগার পরেও কেন বাজারের পরিকাঠামো উন্নতি হবে না, সেই প্রশ্ন উঠছে।
বৃহস্পতিবার গোলবাজারে গিয়ে দেখা গেল, বাজারে ঢোকার পথগুলি দোকানপাটে অবরুদ্ধ। আগুন লাগলে দমকলের গাড়ি ভিতরে ঢোকার রাস্তা পর্যন্ত নেই। অস্থায়ী দোকানের উপরে পর পর পলিথিনের ছাউনি। পলিথিনের উপর-নীচ দিয়ে বিপজ্জনক ভাবে টানা হয়েছে বিদ্যুতের তার। দোকান, রেস্তোরাঁ, চায়ের দোকানে আগুন জ্বালিয়ে রান্না হচ্ছে। চারিদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে প্লাস্টিক, থার্মোকল-সহ দাহ্য পদার্থ। বাজার এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটিতে তারের স্তূপ। পর পর বেশ কিছু তার জড়িয়ে আছে। খুঁটিতে ফাইবারের বাক্স লাগানো। সেখানে থেকে তারের মাধ্যমে বিদ্যুতের লাইন টানা হয়েছে। দোকানপাট, ব্যাঙ্ক, বিভিন্ন অফিস ছুঁয়ে তার চলে গিয়েছে বিপজ্জনক ভাবে।
গোলবাজার ব্যবসায়ী সমিতি সূত্রের খবর, স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে দোকানঘর রয়েছে প্রায় ১২০০টি। রোজ প্রায় ৭-৮ হাজার মানুষ বাজারে আসেন। অতীতে একের পর এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটলেও বাজার সমিতি প্লাস্টিকের ছাউনি সরাতে পদক্ষেপ করেনি।
অশোকনগরের প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক সত্যসেবী কর গোলবাজারে নিয়মিত কেনাকাটা করেন। তিনি বলেন, “বাজারের যা পরিস্থিতি, তাতে আরও অগ্নিকাণ্ড ঘটা আশ্চর্য নয়। প্লাস্টিকের ছাউনির উপরে বিদ্যুতের তার কুণ্ডলি পাকিয়ে থাকে।” গোলবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক গুপি মজুমদার বলেন, “বিদ্যুৎ সরবরাহ দফতরের কাছে আবেদন করা হয়েছে, বিপজ্জনক ভাবে ঝুলে থাকা তার সুরক্ষিত ভাবে লাগানোর ব্যবস্থা করতে। ফাইবার বাক্স তুলে দেওয়ার আবেদনও করা হয়েছে।’’ তিনি জানান, বাজারের পরিকাঠামো তৈরি করতে যত টাকার প্রয়োজন, তা তাঁদের হাতে নেই। প্রশাসনের কাছে তাঁদের আবেদন, প্লাস্টিকের বদলে টিনের ছাউনি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক।
অশোকনগর-কল্যাণগড়ের পুরপ্রশাসক প্রবোধ সরকার বলেন, “বাজারে বিদ্যুতের তারের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সমীক্ষা করব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy