Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

ম্যাজিকের আশায় মানুষ

‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি শুরু হওয়ার পর পেরিয়ে গিেয়ছে এক এক মাস। এই পরিষেবা চালুর পর পেরিয়ে গিেয়ছে এক এক মাস। এই পরিষেবা চালুর পর থেকেই বহু মানুষ বিভিন্ন সমস্যার কথা জানিয়ে ফোন করেছেন দফতরে। তাঁদের মধ্যে অনেকেই যেমন চটজলদি সমাধান পেয়েছেন, অনেকে আবার বারবার ফোন করেও সমাধানের কোনও আশ্বাস পাননি। মানুষের এই অভিজ্ঞতার কথা শুনল আনন্দবাজার। শুভাশিস ঘটক ও সামসুল হুদা প্রথম তিন-চার দিন ফোন ব্যস্ত থাকায় করথা হয়নি। ক’দিন আগে অবশ্য লাইন পেয়েছেন। কল্পনা বলেন, ‘‘ভেবেছিলাম দিদি সরাসরি কথা বলবেন। তবে ফোন ধরলেন এক ভদ্রলোক। জানতে চাইলেন কী সমস্যা। বলেছি, স্বামীকে বাঘে নিয়ে গিয়েছে। সরকারি ক্ষতিপূরণ পাইনি।’’ কল্পনা এখন হাপিত্যেশে বসে, কবে মিলবে ক্ষতিপূরণের টাকা। 

অন্য চিত্রও অবশ্য আছে কিছু। ফাইল চিত্র।

অন্য চিত্রও অবশ্য আছে কিছু। ফাইল চিত্র।

শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৯ ০২:২৫
Share: Save:

বাঘ-কুমিরের পেটে গিয়েছে বাড়ির রোজগেরে সদস্য। সরকারি ক্ষতিপূরণ না পেয়ে হতাশ বহু পরিবার। অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন অনেকে। প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে চরকি পাক কেটেও সুবিধা হয়নি। শেষ ভরসা হিসাবে ‘দিদিকে বলো’ ফোন নম্বরে অভিযোগ জানাবেন বলে ঠিক করেন গোসাবার পাখিরালা গ্রামের বিধবা কল্পনা মণ্ডল। প্রথম তিন-চার দিন ফোন ব্যস্ত থাকায় করথা হয়নি। ক’দিন আগে অবশ্য লাইন পেয়েছেন। কল্পনা বলেন, ‘‘ভেবেছিলাম দিদি সরাসরি কথা বলবেন। তবে ফোন ধরলেন এক ভদ্রলোক। জানতে চাইলেন কী সমস্যা। বলেছি, স্বামীকে বাঘে নিয়ে গিয়েছে। সরকারি ক্ষতিপূরণ পাইনি।’’ কল্পনা এখন হাপিত্যেশে বসে, কবে মিলবে ক্ষতিপূরণের টাকা।

বারুইপুর আদালতের এক আইনজীবী হেল্পলাইনে ফোন করেছিলেন। ইমেলও করেছেন। তাঁর ক্ষোভ, তৃণমূলের অনেক উঠতি নেতা গলায় মোটা সোনার চেন পরে, দশ আঙুলে সোনার আংটি পরে ঘুরে বেড়ান। বড় বড় গাড়ি চড়েন। অথচ, অনেকের এক সময়ে বাড়িতে ভাল ভাবে খাওয়াটুকু জুটত না। এ সব কথা তিনি জানিয়েছেন ‘দিদিকে বলো’তে। কয়েক জন নেতার ছবিও ইমেল করেছেন। আশা করে আছেন, এই সব ভুঁইফোড় নেতার বিরুদ্ধে কোনও কোনও ব্যবস্থা নিশ্চয়ই নেওয়া হবে।

ফলতার এক স্থানীয় তৃণমূল নেতা ডায়মন্ড হারবারে হুগলি নদীর বাঁধ ভেঙে রাস্তা ধসে যাওয়ার পরে ‘দিদিকে বলো’ হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করেছিলেন। বাঁধ ভাঙতে থাকলে পর্যটন শিল্পে চাপ আসবে বলে জানিয়েছেন তিনি। সুরাহা হবে, তাঁরও আশা। অনেক মানুষের অনেক আশা-ভরসা তৈরি হয়েছে ‘দিদিকে বলে’ ঘিরে। তবে সমস্যার আশু সমাধান পেয়েছেন ক’জন, তা নিয়ে প্রশ্ন ঘুরছে মানুষের মনে।

গোসবা ব্লকের বালি দ্বীপে একটি পরিবার আয়লার পরে ঘরবাড়ি নদীতে ভেসে যাওয়ায় বাঁধের উপরে আশ্রয় নিয়েছেন। সরকারি প্রকল্পে ঘরের আবেদন জানিয়েও কাজ হয়নি বলে পরিবারটির অভিযোগ। ‘দিদিকে বলো’ হেল্পলাইনের নম্বরে যোগাযোগ করতে না পেরে একটি সাইবার ক্যাফেতে গিয়ে নিজের ইমেল আইডি খোলেন পরিবারের এক জন। সব মিলিয়ে খরচ পড়ে প্রায় ২৫০ টাকা। দাবি মিটবে, আশা তাঁরও।

অন্য চিত্রও অবশ্য আছে কিছু।

দিন কয়েক আগে বারুইপুর হাসপাতালে এক ব্যক্তি রোগীকে ভর্তি করতে পারছিলেন না বলে সরাসরি ‘দিদিকে বলো’ হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করেন। তারপরে রোগীকে ভর্তি করতে পেরেছেন বলে জানালেন। মাতলা নদী থেকে বালি চুরি, সরকারি জায়গায় দখল— এ সব নিয়েও অভিযোগ করেছেন অনেকে। সুরাহা এখনও হয়নি ঠিকই, তবে অনেকেরই আশা, ‘দিদি’ হয় তো সত্যিই কিছু না কিছু একটা করবেন।

ম্যাজিকের আশায় এখন অপেক্ষা বহু মানুষের।

অন্য বিষয়গুলি:

Didike Bolo
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy