Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Indian Railways

‘ট্রেনে এলাম বলে কাজে নিল না’

ট্রেনই এঁদের জীবনরেখা। ট্রেন না চললে কলকাতায় আসা বন্ধ। বন্ধ কাজ। ট্রেন চলাতে তাই আশার আলো দেখেছিলেন জেলা থেকে আসা গৃহ-সহায়িকারা। কিন্ত ট্রেনে করে আসাই কি বিপদ বাড়িয়ে দিল তাঁদের? আনন্দবাজারকে সে কথা জানালেন ক্যানিংয়ের এক গৃহ-সহায়িকা।চারটে বাড়িতেই আর আমাকে কাজে রাখা হবে না। ভিড় ট্রেনে চেপে যাওয়ায় তাঁরা সংক্রমণের আশঙ্কা করছেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

প্রমীলা সর্দার     
ক্যানিং শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২০ ০৫:২৬
Share: Save:

আমাদের জীবিকা নির্ভর করে ট্রেনলাইনের উপরে। গত সাড়ে সাত মাস লোকাল ট্রেন না চলায় কাজ হারিয়েছে আমাদের মতো অনেকে। ট্রেন চালু হওয়ায় কাজের খোঁজে বেরিয়েছি বুধবার থেকে। প্রথম দিন যা বুঝলাম, কলকাতা শহরে অনেকে আমাদের বাড়িতে ঢুকতে দিতে রাজি নন। ভিড় ট্রেনে চেপে এসেছি বলে সংক্রমণের ভয় পাচ্ছেন। খুবই মুশকিলে পড়লাম। তবে আশা করছি, ধীরে ধীরে কাজ জোগাড় করে নিতে পারব। লোকাল ট্রেন যখন বন্ধ ছিল, মাঝে স্টাফ স্পেশাল ট্রেনে চেপে দু’একদিন কলকাতায় যাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। পুলিশের কড়াকড়ির ফলে আর যাওয়া হয়নি। রেলপথ ছাড়া কলকাতায় যাওয়ার সে ভাবে আমাদের কোনও বিকল্প যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই। আর কলকাতায় না গেলে এলাকায় তেমন কাজও মেলে না। যাদবপুরে ছ’টি বাড়িতে কাজ করতাম। বুধবার গিয়ে জানতে পারলাম, চারটে বাড়িতেই আর আমাকে কাজে রাখা হবে না। ভিড় ট্রেনে চেপে যাওয়ায় তাঁরা সংক্রমণের আশঙ্কা করছেন। দু’টো মাত্র বাড়িতে কাজ শুরু করেছি। রোজগার অনেক কমে গেল। স্বামী হৃদরোগে আক্রান্ত, সে ভাবে কোনও কাজ করতে পারেন না। দুই সন্তানের পড়াশোনা ও সংসার অনেকটাই আমার এই রোজগারের উপরে নির্ভরশীল। লকডাউনের শুরু থেকে খুবই কষ্টে দিন কেটেছে। কাজে যেতে পারিনি বলে রোজগারও বন্ধ ছিল। প্রথম প্রথম দু’একটি বাড়ি থেকে বেতনের টাকা অ্যাকাউন্টে পাঠিয়েছে। কিন্তু প্রায় ছ’মাস সে সবও বন্ধ। কোনও রকমে রেশনের চাল দিয়ে এক আধবেলা খেয়ে বেঁচে আছি। আগের মতোই এ দিন ভোর ৪টেয় ঘুম থেকে উঠে প্রায় চার কিলোমিটার হেঁটে নিকারিঘাটা গ্রাম থেকে ক্যানিং স্টেশনে এসে সাড়ে ৪টে নাগাদ ট্রেন ধরেছি। ক্যানিং স্টেশন থেকে ট্রেনে যখন চাপি, তখন কামরা ফাঁকা ছিল। তালদি ও বেতবেড়িয়া স্টেশন আসতেই প্রচুর মানুষ ওঠেন। সেই চেনা ভিড়ের ছবি। ঠেলাঠেলি করেই আগের মতো নামতে হল যাদবপুরে। সংক্রমণের ভয় উপেক্ষা করেই কাজে বেরোতে হবে। তবে আর কয়েকটা বাড়িতে কাজ না পেলে অসুবিধায় পড়ব।

—অনুলিখন: প্রসেনজিৎ সাহা

অন্য বিষয়গুলি:

Indian Railways West bengal Lockdown House maid
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE