পরিষেবা: ব্লক প্রশাসনের তরফে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে চাল, গম। গোসাবার রাঙাবেলিয়া পঞ্চায়েতের পাখিরালয়ে। নিজস্ব চিত্র
বৃষ্টি-বাদলায় কিছু জায়গায় সমস্যা হলেও বুধবার দুই জেলার বহু মানুষের দুয়ারে পৌঁছে গেল রেশন। কিছু জায়গায় ইন্টারনেটের সার্ভার গোলমাল করায় কিছুটা সমস্যা হয়েছে। আরও ছোটখাট কিছু সমস্যা ভুগিয়েছে রেশন ডিলারদের।
দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ২৯টি ব্লকের প্রায় ২০০টি পঞ্চায়েত এলাকায় ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্পে রেশন দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে এদিন। জেলার প্রায় ২০০ জন রেশন ডিলারকে বেছে নেওয়া হয়েছে। তাঁরা প্রায় ১৫ লক্ষ উপভোক্তার বাড়ি বাড়ি গিয়ে রেশনের চাল, গম, আটা পৌঁছে দেবেন।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক পি উলগানাথন বলেন, “আমরা পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে দুয়ারে রেশন প্রকল্প চালু করেছি। এদিন বৃষ্টির জন্য কিছু জায়গায় সমস্যা হলেও, আর কোনও সমস্যা নেই।’’
সার্ভার ঠিক মতো কাজ না করায় অনলাইনে নাম নথিভুক্ত করতে সমস্যা হয়েছে বলেও অবশ্য জানা গিয়েছে। অনেক ডিলার জানান, নাম নথিভুক্ত করার যন্ত্রের চার্জ ৩-৪ ঘণ্টার বেশি থাকে না। ঘুরে ঘুরে রেশন সরবরাহ করতে গিয়ে চার্জ শেষ হয়েও সমস্যা হয়েছে। বিশেষ করে নদীমাতৃক গোসাবা, বাসন্তী, কাকদ্বীপ, পাথরপ্রতিমা-সহ বিভিন্ন এলাকায় নদীপথে দুয়ারে রেশন পৌঁছে দিতে গিয়ে ঘাম ছুটেছে রেশন ডিলারদের। ইঞ্জিন ভ্যান বা ছোট মালবাহী গাড়িতে জিনিসপত্র নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু অনেক জায়গায় রাস্তা খারাপ থাকায় গাড়ি ঢোকেনি। সে ক্ষেত্রে দূরে কোথাও গাড়ি রেখে বার বার মাল বয়ে নিয়ে গিয়ে দিতে হয়েছে।
ভাঙড় ১ ব্লক রেশন ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নিমাই নস্কর বলেন, “এমনিতেই আমাদের তেমন লোকবল নেই। ফলে কিছুটা অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। সেই সঙ্গে পরিকাঠামোগত সমস্যা রয়েছে। তবে সরকারি নির্দেশ মতো মানুষের দুয়ারে রেশন পৌঁছে দিতে আমরা বদ্ধপরিকর।”
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, দুয়ারে রেশন প্রকল্প সফল ভাবে কার্যকর করতে ইতিমধ্যে ডিলার, ডিস্ট্রিবিউটর, খাদ্য দফতর-সহ বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে। বিশেষ কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। কোথাও কোন সমস্যা হলে তৎক্ষণাৎ তা সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
উত্তর ২৪ পরগনাতেও প্রথম দিন কাজ করতে গিয়ে কিছু সমস্যার কথা জানিয়েছেন রেশন ডিলাররা। অশোকনগরের ডিলার মনসিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সরকারের এটা খুবই ভাল উদ্যোগ। তবে ওজনের মেশিন চালানো, মালপত্র দেওয়ার জন্য কর্মীর প্রয়োজন। সমস্যাগুলি খাদ্য দফতরকে জানাব।”
হিঙ্গলগঞ্জের মতো নদীকেন্দ্রিক ব্লকগুলিতে ডিলাররা জানান, প্রত্যন্ত এলাকার অনেক জায়গায় রাস্তাঘাট খুব খারাপ। বেশিরভাগ রাস্তায় চার চাকার গাড়ি যেতে পারে না। এই পরিস্থিতিতে গাড়িতে করে রেশন সামগ্রী নিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সন্দেশখালিতে কিছু এলাকায় রাস্তার সমস্যা থাকায় এ দিন পাড়ার মোড় থেকে রেশন বণ্টন করা হয়। এই সব এলাকায় ইন্টারনেটের সমস্যাতেও ভুগতে হয় ডিলারদের।
সন্দেশখালি ২ ব্লক ও হাড়োয়া ব্লকের খাদ্য ও সরবারহ আধিকারিক বাইতুল ইসলাম বলেন, “বৃষ্টির মধ্যেও প্রথম দিন পরীক্ষামূলক ভাবে দুয়ারে রেশন কর্মসূচি ভাল ভাবেই পালন হল। ডিলাররাও সাহায্য করেছেন।”
ঘরে বসে রেশন পেয়ে অবশ্য খুশি মানুষ জন। গাইঘাটার বাসিন্দা টুম্পা সরকার বলেন, “শ্বশুর-শাশুড়ি রেশন তুলতে যান। দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়াতে হয়। বাড়িতে রেশন পেলে সেই সমস্যা আর থাকে না।” হিঙ্গলগঞ্জের বাসিন্দা কার্তিক মণ্ডল বলেন, “এই ভাবে বাড়িতে বসে রেশন পাব, কোনওদিন ভাবতেও পারিনি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy