Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Diamond Harbour

প্রচণ্ড গরমে জলকষ্টে ভুগছে গবাদি পশুরাও

বছরের অন্য সময়ে পশুদের সপ্তাহে একদিন স্নান করালেই যথেষ্ট। কিন্তু গরমে তাদের শরীর ঠিক রাখতে নিয়মিত স্নান করানো দরকার।

Cattle are suffering too in this intense heat

গোয়ালে স্নান করানো হচ্ছে পশুদের। নিজস্ব চিত্র

দিলীপ নস্কর
ডায়মন্ড হারবার শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:৫০
Share: Save:

তীব্র দাবদহে জলের কষ্টে কাহিল হয়ে পড়েছে গবাদি পশুরাও। অসুস্থ হয়ে পড়ছে গরমে। প্রতিদিন তাদের স্নান করানোর জলের ব্যবস্থা করতে গিয়ে নাকাল হচ্ছেন মালিকেরাও।

গ্রামীণ এলাকায় বহু মানুষের বাড়িতে গরু, মহিষ, ছাগল পালিত হয়। পশু পালন তাঁদের রোজগারেরও উপায়। বহু গরু-মহিষের খাটাল আছে জেলায় জেলায়। পুকুর-খাল-বিল থেকেই তাদের জলের জোগান আসে। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে প্রবল গরমে অধিকাংশ জলাশয় শুকিয়ে ফুটিফাটা। কোথাও বা আবার হাঁটুসমান নোংরা জল তলানি হিসাবে পড়ে আছে। পশুদের স্নান করানো, খাওয়ার জলে টান পড়ছে।

বছরের অন্য সময়ে পশুদের সপ্তাহে একদিন স্নান করালেই যথেষ্ট। কিন্তু গরমে তাদের শরীর ঠিক রাখতে নিয়মিত স্নান করানো দরকার। খাওয়ার জলের চাহিদা পাড়ার নলকূপ থেকে এনে মেটানো গেলেও গৃহপালিত পশুর স্থানের জলের আকাল দেখা দিয়েছে।

রায়দিঘির নগেন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা ইয়াসিন গাজি বলেন, ‘‘আমার বেশ কয়েকটি গরু আছে। শীত-বর্ষায় পুকুরে জল থাকে। পুকুরে নামিয়ে স্নান করাই। কিন্তু এখন জলের হাহাকার চারিদিকে। বাধ্য হয়ে পাইপ লাইনের জল সংগ্রহ করে বাড়িতে এনে স্নান করাতে হচ্ছে।’’ ডায়মন্ড হারবার ২ ব্লকের সরিষা পঞ্চায়েতে কামারপোল গ্রামে রয়েছে একাধিক গরু-মহিষের খাটাল। এক একটি খাটালে ৫০-৬০টি গরু-বাছুর-মহিষ থাকে। তাদের নিয়মিত স্নান না করালে অসুস্থ হয়ে পড়বে বলে মালিকের আশঙ্কা। কেউ কেউ গরু-মহিষের জন্য সাবমার্সিবল পাম্পে জল তুলে স্নান করানোর ব্যবস্থা করেছেন। যাঁরা এত দিন খাল-বিল-পুকুরের জলের উপরে নির্ভর করে ছিলেন, তাঁরা পড়েছেন সমস্যায়।

কামারপোল গ্রামের খাটাল মালিক খোকন গাজি জানালেন, ৮০-৮৫ গরু-মহিষ-বাছুর আছে। এদের নিয়মিত পরিচর্যা করার জন্য কয়েক জন শ্রমিক নিয়োগ করা হয়েছে। গরমের হাত থেকে বাঁচাতে স্নান করাতেই হয়। খাটালের শ্রমিক নছিম গাজির কথায়, ‘‘প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে ১০টার মধ্যে সমস্ত গরু-মহিষ-ও বাছুরকে পাইপের জলে স্নান করানো হচ্ছে। নিয়মিত স্থান না করালে পশুদের শরীরে এক ধরনের রোগ হয়। চামড়া খসে পড়ে। প্রখর গরমে শরীর ঠিক রাখতে নিয়মিত সবুজ ঘাস খাওয়াতে হয়। সে জন্য মাঠে গোবর ছড়িয়ে সবুজ ঘাস চাষ করা রয়েছে। এ ছাড়া, সবুজ ঘাস সংগ্রহ করে আনা হচ্ছে এ দিক ও দিক থেকে।’’ এলাকার আর এক খাটাল মালিক আলি হোসেন জানালেন, পুকুর-খাল-বিল থেকে জল তুলে সারা বছর গরু মহিষের পরিচর্যা চলে। এখন পর্যাপ্ত জল না পেয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে।

এক পশু চিকিৎসক জানান, এই রোদে-গরমে গরু-মহিষকে খোলা জায়গায় বাঁধা উচিত নয়। পূর্ণবয়স্ক গরু-মহিষের সারাদিনে প্রায় ২০-৩০ লিটার জল লাগে। সেই মত জোগান দিতে হবে। দুপুর ১২টার আগেই স্নান করাতে হবে। স্নান করানোর পরে সরাসরি গোয়ালে ঢোকানো যাবে না। গাছের ছায়ায় খোলা বাতাসে বেঁধে রাখতে হবে। মানুষের যেমন ওআরএস প্রয়োজন, গরু-মহিষের ক্ষেত্রে সে রকম গুড়-লবণের জল মাখিয়ে ৫০০ গ্রাম মতো খাওয়ানো দরকার। গরমে গরু-মহিষের ডায়েরিয়া, জ্বর ও কৃমি হতে পারে। রোদে বেঁধে রাখলে সানস্ট্রোকের আশঙ্কা থাকে।সন্ধ্যার সময়ে গোয়ালে না তুলে তাদের ফাঁকা জায়গায় রাখতে পারলে আরাম পাবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Diamond Harbour Domestic Animal Cattle
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE