লোকসান: জোগান থাকলেও বিক্রি হচ্ছে না আম। বসিরহাটের স্বরূপনগর বাজারে। ছবি: সজলকুমার।
আমপানের দুঃস্বপ্নই যেন বিপাকে ফেলল উত্তর ২৪ পরগনার আমচাষিদের অনেককেই। ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের আশঙ্কায় বহু চাষি সময়ের আগেই গাছ থেকে কাঁচা আম পেড়ে বাজারে নিয়ে আসছিলেন বিক্রির জন্য। চাহিদার তুলনায় জোগান বেশি হয়ে যাওয়ায় উপযুক্ত দামও মিলছিল না। এর পরে আগামিদিনে ওই সব আম কী ভাবে বিক্রি হবে, তা নিয়েই এ বার চিন্তা বেড়েছে আমচাষিদের।
আমপানের সময়ে গাছ উপড়ে অসংখ্য আম নষ্ট হয়েছিল সব জায়গায়। এ বার তাই ইয়াসের আগমনীবার্তা শুনে আগেভাগেই গাছ থেকে আম নামাতে শুরু করেন চাষিরা। জেলার হাট ও পাইকারি বাজারগুলিতে চোখে পড়ছিল আমের অঢেল জোগান।
মনির হোসেন নামে এক আমের ব্যবসায়ী জানান, উত্তর ২৪ পরগনা থেকে হিমসাগর, বোম্বাই, ম্যাডাস ও ল্যাংড়া-- এই চার ধরনের আম এই সময়ে নেপাল, ভুটান, অসম, বিহার ভোপালের মতো রাজ্যগুলিতে যায়। করোনার কারণে সব জায়গায় বাজার বন্ধ থাকায় আম রফতানি ধাক্কা খেয়েছে। তার জেরে এমনিতেই প্রয়োজনের তুলনায় বাজারে অতিরিক্ত আম মজুত হয়ে গিয়েছে। তার উপরে ইয়াসের কারণেও যে অঢেল আম নামানো হল, তার কী গতি হবে, তাই নিয়ে চিন্তিত চাষিরা। তাঁরা জানান, চাষি ও পাইকারী ব্যবসায়ী, দু`পক্ষেরই এতে আর্থিক ক্ষতি হল। মজুত হওয়া এই বিপুল পরিমাণ আম অনেক জায়গাতেই পচে নষ্ট হবে বলেই আশঙ্কা করছেন চাষি ও ব্যবসায়ীরা।
বিহার থেকে উত্তর ২৪ পরগনার স্বরূপনগর বাজারে আমের কারবার করতে আসা ববি আহমেদের কথায়, ‘‘বিহারের আমও এই সময়ে পশ্চিমবঙ্গে আসে।
দুই রাজ্যের এই ব্যবসা ঘিরে টানা তিন মাস কর্মসংস্থান হয় বহু মানুষের। ইয়াস এল না। আবার গাছ থেকে আমও নেমে গেল। এর পরে আর ব্যবসা হবে না। কাজও পাবেন না আমের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকেরা।’’ গাছ থেকে আম পাড়া-সহ ব্যবসার নানা কাজে যুক্ত রেজাউল আলি, কেনাউল্লা মণ্ডল, ইমরান আলি, বাপ্পা মণ্ডলেরা জানান, প্রতিদিন তাঁরা চারশো থেকে সাড়ে পাঁচশো টাকা পর্যন্ত পান। ইয়াস নয়, ইয়াসের আতঙ্কই সব ডুবিয়ে দিল। ইমরানদের কথায়, ‘‘মালদার আম যদি ঝড়ের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, তবে আগামী দিনে ফজলি, পেয়ারাফুলির মতো আম এখানকার বাজারে নামবে। তখন আবার আমরা কাজ পেতে পারি।’’
তবে এ সবের মধ্যেও চাষিরা স্বস্তি পাচ্ছেন এই ভেবে যে ঝড়-ঝঞ্ঝায় আমগাছের ক্ষতির আশঙ্কা আর তেমন ভাবে রইল না। এক চাষির কথায়, ‘‘চারা পুঁতে পূর্ণাঙ্গ গাছে আম ফলাতেই ১০ বছর পেরিয়ে যায়। ঘূর্ণিঝড়ে গাছ উপড়ে পড়লে আগামী দিনে আমের জোগান দিতে হিমশিম খেতে হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy