ফের কাজ শুরুর অপেক্ষা। নিজস্ব চিত্র।
সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার সংখ্যালঘু পরিবারের ছাত্রীদের অসুবিধার কথা ভেবে বাম আমলে শুরু হয়েছিল মুসলিম ছাত্রী আবাস তৈরির কাজ। ছ’বছর পেরিয়ে গেলেও সেই ছাত্রী আবাস তৈরির কাজ আজও শেষ না হওয়ায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে মানুষের মধ্যে।
বাসন্তীর ফুলমালঞ্চ পঞ্চায়েতের চোরা ডাকাতিয়া এলাকায় ২০১০ সালের ২৯ জুন ওই ছাত্রী আবাস তৈরির জন্য ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন তৎকালীন সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরের প্রতিমন্ত্রী আব্দুস সাত্তার। ছাত্রী আবাস তৈরির জন্য স্থানীয় বাসিন্দা মতিয়ার রহমান সর্দার স্বেচ্ছায় এক বিঘা জমি দান করেছিলেন।
কিন্তু এত দিনেও ওই ছাত্রী আবাস তৈরির কাজ শেষ না হওয়ায় মতিয়ারের আক্ষেপ যথেষ্টই। বললেন, ‘‘পিছিয়ে পড়া বাসন্তী তথা নদীবেষ্টিত সুন্দরবন এলাকার সংখ্যালঘু পরিবারের ছাত্রীদের যাতায়াতের অসুবিধার কথা ভেবে ওই ছাত্রীআবাস তৈরির জন্য জমি দিয়েছিলাম। সে সময়ে ওই জমিতে শুধু ভিতটুকু তৈরি ছাড়া আর কোনও কাজ হয়নি। কী কারণে কাজ আজও শেষ হল না, জানি না। যে উদ্দেশ্যে জমি দিয়েছিলাম, সেই কাজই হল না। উল্টে আমার জমিটাই চলে গেল।’’
তৎকালীন সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদের সদস্য লোকমান মোল্লা বলেন, ‘‘পিছিয়ে পড়া সুন্দরবনের সংখ্যালঘু ঘরের ছাত্রীদের উচ্চশিক্ষার জন্য যাতায়াত করে পড়াশোনা করা বেশ কঠিন। ওই ছাত্রী আবাসে থেকে বাসন্তীর সুকান্ত কলেজ, পাঠানখালি কলেজ-সহ শহর ও শহরতলির যে কোনও কলেজে পড়াশোনা করা তুলনায় সহজ হতে পারে। সে জন্যই তৎকালীন মাদ্রাসা শিক্ষা ও সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরে বারবার দরবার করে প্রস্তাব দিয়েছিলাম, ওই ছাত্রী আবাস তৈরির জন্য।’’ লোকমান জানান, ওই দফতর সে সময়ে ৪ কোটি ২৮ লক্ষ টাকা অনুমোদন করেছিল। সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতর সুন্দরবন ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভলেপমেন্ট কর্পোরেশনকে ওই কাজের বরাত দিয়েছিল। সে সময়ে কিছুটা কাজ শুরু করার পরে সেই কাজ হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে ওই কাজ বন্ধ থাকায় নির্মীয়মাণ ছাত্রীআবাসের লোহার রড ও ইমারতী দ্রব্য সব চুরি হয়ে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ।
প্রাক্তন মন্ত্রী আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘‘এটা অত্যন্ত দুঃখের যে আমাদের সময়ের অনেক প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে রয়েছে। বর্তমান সরকার সে দিকে নজর দিচ্ছে না। কী কারণে ওই ছাত্রী আবাস তৈরির কাজ বন্ধ হয়ে আছে, তা বলতে পারব না।’’
বাসন্তীর বিডিও কল্লোল বিশ্বাস বলেন, ‘‘ছাত্রী আবাস তৈরির কাজ যে বন্ধ, তা আমার নজরে আছে। ওই কাজ যাতে শুরু হয়, সে জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরকে জানিয়েছিলাম। সেই মতো কয়েক দিন আগে জেলা থেকে আধিকারিকরা এসে সার্ভে করে গিয়েছেন। আশা করছি, দ্রুত ওই কাজ আবার শুরু করা যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy