Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

পাকা ধান কাটবে কে

পরিবারের একজনের অস্ত্রোপচারের জন্য মগরাহাট শাখা হরিপুর পোস্ট অফিসে গিয়েছিলেন সনাতন সর্দার। কিন্তু সেখানে টাকা নেই। হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে গেলেন ওই ব্যক্তি।

দিলীপ নস্কর
ডায়মন্ড হারবার শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৬ ০০:৪০
Share: Save:

পরিবারের একজনের অস্ত্রোপচারের জন্য মগরাহাট শাখা হরিপুর পোস্ট অফিসে গিয়েছিলেন সনাতন সর্দার। কিন্তু সেখানে টাকা নেই। হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে গেলেন ওই ব্যক্তি।

জয়নগরের একটি উপ ডাকঘরে আমন ধান কাটা শ্রমিকদের টাকা তুলতে গিয়েও খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। পুরনো নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরে প্রায় দশ দিন কেটে গেলেও গ্রামীণ শাখা পোস্ট অফিসগুলিতে আজও কোনও টাকা ঢোকেনি বলে জানা গিয়েছে।

ডায়মন্ড হারবার মহকুমার মন্দিরবাজার, জয়নগর, মগরাহাট-সহ বিভিন্ন এলাকার বেশির ভাগ মানুষের প্রধান জীবিকা, কৃষি। এখন বর্ষায় চাষ করা আমন ধানে পাক ধরেছে। ওই ধান ঘরে তোলার পালা। ঘরে তুলতে গেলেই শ্রমিকের সাহায্যের প্রয়োজন হয় চাষিদের। টাকা না থাকায় শ্রমিক জোগাড় করা যাচ্ছে না বলে জানালেন কয়েকজন চাষি।

জয়নগরের সাব পোস্ট অফিস আবার খুচরো টাকার অভাবে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বন্ধ। ওই পোস্ট অফিসের অধীনে রয়েছে ২২টি শাখা পোস্ট অফিস। গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ১ লক্ষের মতো। পোস্টমাস্টার সঞ্জীব হালদারের অভিযোগ, ‘‘ব্যাঙ্ক থেকে ২০০০ হাজার নোট পাঠাচ্ছে। কিন্তু ওই নোট অনেকেই নিতে চাইছেন না। বাধ্য হয়ে কয়েক লক্ষ টাকা ব্যাঙ্কে ফেরত পাঠিয়েছি। ১০০ এবং নতুন ৫০০ টাকার নোটের জন্য আবেদন জানানো হয়েছে।’’

মন্দিবাজারের ঘাটেশ্বরা সাব পোস্ট অফিসের অধীনে রয়েছে ২০টি শাখা পোস্ট অফিস। সব মিলিয়ে গ্রাহক সংখ্যা ১ লক্ষেরও বেশি। পোস্ট মাস্টার জয়ন্তী হালদার বলেন, ‘‘মঙ্গলবার এখানে কয়েক লক্ষ টাকা ঢুকেছে ঠিকই, তবে সবই ২০০০ টাকার নোট। অনেকেই ওই নোট নিতে চাইছেন না। সে কারণে সমস্যা হচ্ছে।’’

দক্ষিণ বিষ্ণুপুর সাব পোস্ট অফিসেরও একই দশা। ওই অফিসের পোস্টমাস্টার নিতাই সর্দার বলেন, ‘‘খুচরো টাকা আসছে না। ২০০০ হাজার টাকার নোট আসছে। কিন্তু কেউ নিতে চাইছেন না।’’ প্রতি দিনই বহু গ্রাহক এসে খালি হাতে ফিরছেন। এলাকার ১১টি শাখা পোস্ট অফিস আছে। কোনও জায়গাতেই টাকা খুচরো পাঠানো যায়নি।

এ দিকে রায়দিঘি, মথুরাপুর ও মগরাহাটে এলাকা জুড়ে সব্জি চাষ হয়। টাকার অভাবে চাষিরা সার কিনতে গিয়েও সমস্যায় পড়ছেন।

প্রত্যন্ত গ্রামের ছোট মুদিখানা দোকানদার বা রেশন ডিলাররাও দুর্ভোগে পড়েছেন। তাঁদের অনেকে জানালেন, সারা দিনে মাত্র ৫০০ টাকা বিক্রিবাটা হয়। তারমধ্যে অনেকে ১০০ টাকার জিনিস কিনেও পাঁচশোর পুরনো নোট ধরাচ্ছে। খুচরো দেওয়া মুশকিল। আবার পুরনো নোট নেওয়া তো আরও চাপের।

নোট বাতিলের প্রভাব পড়েছে গ্রামীণ হাট-বাজারেও। প্রত্যন্ত এলাকায় সপ্তাহে এক-দু’দিন হাট বসে। সেই হাট থেকে মাছ, সব্জি, তেল, নুন, ডাল সারা সপ্তাহের কেনাকাটা করেন অনেকে। কিন্তু খুচরো টাকার অভাবে সেখানেও কেনাকাটায় ভাটা পড়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Demonetization
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy