দাবি: চিতুরি কার্যালয়ের পথে মহিলারা। ছবি: সমীরণ দাস।
মাছ-কাঁকড়া ধরতে গিয়ে সুন্দরবনে বার বার বাঘের হামলার মুখে পড়ছেন মৎস্যজীবীরা। অধিকাংশই প্রাণ হারাচ্ছেন। কেউ কেউ ভাল রকম জখম হয়েও কপাল জোরে বেঁচে ফিরে আসছেন। অনেকের খোঁজও মেলে না।
অভিযোগ, আক্রান্ত পরিবারগুলির পাশে দাঁড়াচ্ছে না প্রশাসন। বাঘের হানায় মৃত্যু বা জখম হলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোনও সরকারি ক্ষতিপূরণ মিলছে না বলে অভিযোগ উঠছে। এর প্রতিবাদে বিক্ষোভে সামিল হলেন বাঘ-আক্রান্ত পরিবারের সদস্যেরা।
মঙ্গলবার কুলতলির চিতুরিতে বন দফতরের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখান আক্রান্ত পরিবারের প্রায় একশো মহিলা। মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর-এর তরফে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। বাঘের হামলায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বা জখম হলে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ, চিকিৎসার দায়িত্ব, পরিবারের পেনশনের ব্যবস্থা-সহ কয়েক দফা দাবি জানানো হয়েছে। এপিডিআর-এর তরফেই এই কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছিল। বিক্ষোভের আগে কুলতলির জজেরহাটে একটি প্রাথমিক স্কুলে বাঘ-আক্রান্ত পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আলোচনা সভার আয়োজন হয়। আলোচনা শেষে মিছিল করে বন দফতরের যান মহিলারা।
এপিডিআর সূত্রের খবর, শুধু কুলতলি ব্লক থেকেই প্রায় একশো মহিলা এ দিনের কর্মসূচিতে যোগ দেন। সুন্দরবনের অন্য ব্লকগুলিতেও বহু পরিবার এই সমস্যায় ভুগছে।
এ দিন বিক্ষোভ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন ভুবনেশ্বরীর বাসিন্দা জ্যোৎস্না শী। কয়েক মাস আগে স্বামী শঙ্করের সঙ্গে জঙ্গলে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন জ্যোৎস্না। শঙ্করের উপরে আক্রমণ করে একটি বাঘ। বাঘের সঙ্গে লড়াই করে মৃত্যুর মুখ থেকে স্বামীকে ফিরিয়ে আনেন জ্যোৎস্না। দীর্ঘদিন চিকিৎসা চলে শঙ্করের। বহু টাকা খরচ হয়। কিন্তু সরকারি তরফে কোনও ক্ষতিপূরণ মেলেনি বলে অভিযোগ। তারই প্রতিবাদে এ দিন তিনি বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন বলে জানালেন জ্যোৎস্না।
এ দিন কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন এপিডিআর-এর সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রঞ্জিত শূর। তাঁর কথায়, “গত পাঁচ বছরে বাঘে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর নথিভুক্ত সংখ্যাটাই প্রায় ১২৫। জখমও অনেকে। সরকারি নিয়মেই এঁদের ক্ষতিপূরণ পাওয়ার কথা। কিন্তু অধিকাংশই তা পান না। দেহ না মেলায় অনেক বাঘে আক্রান্তের স্ত্রী বিধবা ভাতাটুকুও পান না। দিনের পর দিন এটা চলে আসছে। এরই প্রতিবাদে আমাদের কর্মসূচি।”
এ দিন চিতুরি কার্যালয়ে উপস্থিত আধিকারিক ললিত মৃধা স্মারকলিপি গ্রহণ করেন। তিনি বলেন, “কিছু দাবি নিয়ে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। আমি তা ঊর্ধ্বতন কর্তপক্ষকে জানিয়েছি।”
দক্ষিণ ২৪ পরগনার মুখ্য বন আধিকারিক মিলন মণ্ডল অবশ্য দাবি করেন, এখনও পর্যন্ত বৈধ ভাবে জঙ্গলে গিয়ে বাঘের আক্রমণের মুখে পড়া প্রত্যেকেরই ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy