লালা চৌধুরী
বুধবারের সকাল। ঘড়িতে সাড়ে দশটা। ভিড় ট্রেনের যাত্রীদের প্রায় সকলেই নেমে পড়েছেন। প্রায় খালি ভেন্ডার কামরাও। তবে একটি ঝুড়ি পড়েছিল কামরার কোণায়। কেউ তুলছে না দেখে খোঁজ শুরু হয়। কেউই অবশ্য ঝুড়ির দাবি করেননি। শেষে ঝুড়ির উপরে কাগজ সরাতেই চক্ষু চড়কগাছ কামরার যাত্রীদের। সেখানে রাখা একটি ধড়হীন মুণ্ড। স্টেশন বারাসত।
কাছাকাছি একই সময়ে চাঞ্চল্য ছড়ায় কাঁকিনাড়াতেও। সেখানে রেললাইনের ধার থেকে মেলে একটি মুণ্ডহীন দেহ। তার আগে সকালে ভাটপাড়া থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি হয়েছে। বিরজু চৌধুরী নামে এক বৃদ্ধ ডায়েরি করে জানিয়েছেন, তাঁর ছেলে লালা চৌধুরী (৩২) মঙ্গলবার রাতে বাড়ি ফেরেনি।
বুধবার বিকেলে বারাসতে গিয়ে মুণ্ডটি তাঁর ছেলের বলে শনাক্ত করেন বিরজু। তাঁর দাবি, কাঁকিনাড়ায় মেলা ধড়টিও লালার। পুলিশ জানিয়েছে, খুনই হয়েছেন ওই যুবক। তবে কে বা কারা, কেন তাঁকে খুন করল তার উত্তর রাত পর্যন্ত মেলেনি। ভাটপাড়া থানার পুলিশ জানিয়েছে, অজ্ঞাতপরিচয় এক জনকে খুনের মামলা রুজু করা হয়েছিল। লালার পরিবার খুনের অভিযোগ করলে তার ভিত্তিতে তদন্ত হবে।দিন কয়েক আগে কাঁকিনাড়ায় লালার এলাকা উত্তপ্ত হয়েছিল রাজনৈতিক সংঘর্ষে। গুলিতে খুন হন দু’জন। বোমার আঘাতে দু’জনের মৃত্যু হয়। মাসখানেক এলাকায় কার্যত বন্ধের ছবি ছিল। তবে এমন খুনের ধরনে শিউরে উঠছেন এলাকার বাসিন্দারা। অনেকেই জানান, নকশাল আমলে এই এলাকায় রেললাইনের ধারে এমন ধড়হীন মুণ্ড পড়ে থাকতে দেখা যেত। লালার পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, এই খুনের সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই। লালা রাজনীতি করতেন না। খুনের কারণ নিয়ে অন্ধকারে পুলিশও।
পুলিশ জানায়, কাঁকিনাড়ায় ৬ নম্বর রেলওয়ে সাইডিং এলাকায় বাড়ি লালার। তিনি পেশায় ফুচকা ব্যবসায়ী। ফুচকা তৈরি করে পাইকারি ব্যবসা করতেন। রাতে নৈহাটি স্টেশনে ফুচকা বিক্রি করতেন। বিকেলের ট্রেনে যেতেন। বাড়ি ফিরতেন রাত ১০টা নাগাদ। কিন্তু মঙ্গলবার সময় পেরিয়ে গেলেও লালা না ফেরায় খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। পরে থানায় ডায়েরি হয়। পুলিশ জানায়, খুনের পরে দেহ রেললাইনের ধারে ফেলে রেখে মুণ্ডটি ঝুড়ির মধ্যে রেখে দেয় খুনি। সেই ট্রেন ভোরে শিয়ালদহ থেকে হাসনাবাদ যায়। সেখান থেকে ফের শিয়ালদহ আসার পথে বারাসত স্টেশনে ফাঁকা ভেন্ডার কামরায় ঝুড়িটি নজরে পড়ে যাত্রীদের। বিরজু বলেন, ‘‘আমার ছেলের সঙ্গে কারও শত্রুতা ছিল না। কেন ওকে এ ভাবে মেরে ফেলল, বুঝতে পারছি না। পুলিশ অন্তত খুনিদের ধরুক। তা হলে শান্তি পাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy