দীপেন্দ্রনাথ মণ্ডল।
ব্যারাকপুর: নিজের বাড়ির রান্নাঘর থেকে উদ্ধার হল এক প্রাক্তন সেনাকর্মীর রক্তাক্ত দেহ। মৃতের মাথায় ও ঘাড়ের নীচে আঘাতের চিহ্ন দেখে তদন্তকারীদের অনুমান, তাঁকে খুন করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে লুট করা হয়েছে বহু টাকার সোনার গয়নাও। সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের মোহনপুর থানা এলাকার চক কাঁঠালিয়ায়। মৃতের নাম দীপেন্দ্রনাথ মণ্ডল (৭৩)।
ব্যারাকপুর কমিশনারেটের উপ-নগরপাল (উত্তর) গণেশ বিশ্বাস জানান, এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সোমবার রাতেই চক কাঁঠালিয়া এলাকারই বাসিন্দা বিট্টু মাইতি, তার স্ত্রী আজমীরা এবং টিঙ্কু নামে এক টোটোচালককে গ্রেফতার করা হয়। তদন্তকারীদের দাবি, ধৃতেরা প্রাথমিক জেরায় জানিয়েছে, তারা বৃদ্ধের বাড়ির আলমারি থেকে ৬০-৭০ হাজার টাকার সোনার গয়না লুট করেছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ আরও জেনেছে, বিট্টু এবং আজমীরা প্রায়ই দীপেন্দ্রনাথের বাড়িতে আসত। টাকার বিনিময়ে বাড়ির প্রয়োজনীয় কাজ করে দিত তারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্ত্রীর মৃত্যুর পর থেকে চক কাঁঠালিয়ার আমবাগানের বাড়িতে একাই থাকতেন বৃদ্ধ দীপেন্দ্রনাথ। তাঁর দুই মেয়ের মধ্যে এক জন ব্যারাকপুরের আনন্দপুরী এলাকায় থাকেন। আর এক মেয়ে থাকেন বিদেশে। বৃদ্ধের দেখাশোনা, প্রতিদিনের রান্না ও ঘরের কাজ করতেন এক পরিচারিকা। মঙ্গলবার সকালে ওই মহিলা কাজে এসে দেখেন, বাড়ির সদর দরজা খোলা। রান্নাঘরের মেঝেতে পড়ে আছে দীপেন্দ্রনাথের দেহ। মহিলার চিৎকারে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। খবর দেওয়া হয় বৃদ্ধের আত্মীয়দের। দীপেন্দ্রনাথের এক আত্মীয় পার্থপ্রতিম গিরি বলেন, ‘‘কী ভাবে এমন হল, বুঝতে পারছি না। পুলিশ তদন্ত করে দেখুক। সত্য উদ্ঘাটিত হোক, দোষীরা সাজা পাক।’’
খবর পেয়ে এ দিন সকালেই ঘটনাস্থলে আসেন ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশ আধিকারিকেরা। উপ-নগরপাল (উত্তর) বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে বৃদ্ধের শরীরের দু’জায়গায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে।’’ পুলিশের অনুমান, ভারী কিছু দিয়ে মাথায়, ঘাড়ে আঘাত করা হয়েছিল বৃদ্ধকে। দীর্ঘক্ষণ রক্তক্ষরণের জেরে তাঁর মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।
এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে চক কাঁঠালিয়া এলাকায়। একা থাকা বয়স্ক মানুষদের নিয়মিত খোঁজখবর নেওয়ার কথা এক সময়ে নগরপালের তরফে সব থানাকে বলা হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, কিছু দিন সংশ্লিষ্ট থানাগুলি এ ব্যাপারে পদক্ষেপ করলেও সেই ধারাবাহিকতা বজায় থাকেনি। সোমবারের ঘটনার পরে মোহনপুর পঞ্চায়েতের তরফে পঞ্চায়েত এলাকায় কত জন বয়স্ক মানুষ একা থাকেন, সেই তালিকা তৈরি করার কথা বলা হয়েছে। পঞ্চায়েত প্রধান নির্মল কর বলেন, ‘‘ওই প্রাক্তন সেনাকর্মী যে এখানে একা থাকতেন, সেটাই জানতাম না আমরা। এমন মানুষ আরও যাঁরা আছেন, তাঁদের তালিকা তৈরি করে সাক্ষাতে বা ফোনে পঞ্চায়েতের তরফে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হবে। কী কারণে এমন ঘটল, পুলিশকে দেখতে বলেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy