Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Coromondel Express Accident

ওড়িশার দুর্ঘটনায় স্বামীর পরে দেহ উদ্ধার স্ত্রীরও

করমণ্ডলে অন্ধ্রপ্রদেশে ধান রোয়ার কাজে যাচ্ছিলেন গোসাবার সাতজেলিয়ার দম্পতি সনৎ কর্মকার ও শ্যামলী কর্মকার। সনতের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছিল শনিবারই।

তখনও মৃত্যু সংবাদ এসে পৌঁছয়নি, দুশ্চিন্তায় সনৎ ও শ্যামলীর পরিজনেরা। নিজস্ব চিত্র

তখনও মৃত্যু সংবাদ এসে পৌঁছয়নি, দুশ্চিন্তায় সনৎ ও শ্যামলীর পরিজনেরা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০২৩ ০৭:৫১
Share: Save:

ট্রেন দু্র্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ল দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। রবিবার পর্যন্ত ২৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছিল। রবিবার রাত থেকে সোমবার পর্যন্ত আরও তিন জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। এখনও নিখোঁজ অনেকে। উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়ার বাসিন্দা এক ব্যক্তিরও মৃত্যুর খবর মিলেছে এ দিন।

করমণ্ডলে অন্ধ্রপ্রদেশে ধান রোয়ার কাজে যাচ্ছিলেন গোসাবার সাতজেলিয়ার দম্পতি সনৎ কর্মকার ও শ্যামলী কর্মকার। সনতের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছিল শনিবারই। রবিবার রাতে বছর তিরিশের শ্যামলীর দেহ মিলেছে। দম্পতির তিন সন্তান। ছোট দুই ছেলেমেয়ের একজনের বয়স ১৩, একজনের ১১। তাদের রেখেই আয়ের আশায় ভিন্ রাজ্যে পাড়ি দিচ্ছিলেন দম্পতি। তাঁদের আত্মীয় চঞ্চলা কর্মকার বলেন, “এলাকায় কাজ নেই। বাইরে না গেলে খাওয়া জুটবে না। তাই সংসার চালাতে ভিন্ রাজ্যে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই। সেই যাওয়াই কাল হল। জানি না ছেলেমেয়েগুলোর কী হবে!”

ক্যানিংয়ের সুখসাগর গ্রামের বাসিন্দা সামসুদ্দিন ও সাইফুদ্দিন সর্দারের মৃত্যুর খবর মিলেছিল আগেই। রবিবার তাঁদেরই ভাইপো তারিফ হোসেন সর্দারের (২৪) দেহও শনাক্ত হয়েছে। একসঙ্গেই অন্ধ্রপ্রদেশে চাষের কাজে যাচ্ছিলেন তাঁরা। তারিফের বাড়িতে স্ত্রী এবং দুই ছেলেমেয়ে রয়েছে। ছেলের বয়স সাত বছর। মেয়ের চার। তারিফই ছিলেন পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্য।

রবিবার রাতে সাগরের বেগুয়াখালি গ্রামের বাসিন্দা স্বপন প্রামাণিকেরও (৩৫) দেহ শনাক্ত হয়েছে। সোমবার তাঁর কফিনবন্দি দেহ এলাকায় আসে। গঙ্গাসাগর শ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য হয়। মৃতের স্ত্রী পার্বতী বলেন, “এখানে কাজ না থাকায়, বাধ্য হয়ে কেরলে শ্রমিকের কাজে যাচ্ছিলেন। এখন সংসার

চলবে কী করে! দুই ছেলেকে কী ভাবে মানুষ করব!”

এ দিকে, কুলপির রামকিশোরপুর পঞ্চায়েতের মুকুন্দপুর রামকৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা বছর একত্রিশের শুভাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় মৃত বলেই রবিবার জানিয়েছিল প্রশাসন। তবে, সোমবার ডায়মন্ড হারবারের মহকুমাপ্রশাসক অঞ্জন ঘোষ জানান, ওই যুবকের পরিবার প্রথমে ছবি দেখে দেহ শনাক্ত করেছিল। পরে জানা যায়, সেই দেহ অন্য কারও। আপাতত শুভাশিসের খোঁজ চলছে।

উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়ার দক্ষিণ চাতরা গ্রামের বাসিন্দা সঞ্জয় দে’র (৪২) মৃত্যুর খবর মিলেছে এ দিন। সোমবার সকালে তাঁর দেহ আসে। তিনি দিনমজুরের কাজে চেন্নাই যাচ্ছিলেন। বাড়িতে বৃদ্ধা মা, স্ত্রী ও বছর ছয়েকের ছেলে রয়েছে। সঞ্জয়ের আত্মীয় সহদেব মণ্ডল বলেন, “পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্য ছিল ও। পরিবারটি একেবারে অসহায় হয়ে পড়ল।”

দুর্ঘটনায় এখনও নিখোঁজ অনেকেই। প্রশাসন সূত্রের খবর, সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনার ১৬ জনের খোঁজ মেলেনি। উদ্বেগ বাড়ছে নিখোঁজের পরিবারের সদস্যদের।

অন্য বিষয়গুলি:

Train accident Balasore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy