Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Anganwadi center

চাল উড়ে ভেঙেছে ঘর, ক্লাস কার্যত বন্ধ

ছোট ছোট শিশুদের যাতায়াত অঙ্গনওয়াড়িতে। স্বাস্থ্য-শিক্ষার একেবারে প্রাথমিক ভিত্তি তৈরি হয় সেখানেই। অথচ, কেন্দ্রগুলির পরিকাঠামোয় দৈন্যতা স্পষ্ট।

Anganwadi center at Nyazat

এই কেন্দ্র নতুন করে তৈরি করার দাবি উঠেছে। নিজস্ব চিত্র 

নবেন্দু ঘোষ 
ন্যাজাট শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৩ ০৭:২৪
Share: Save:

ছাউনি উড়েছে আগেই। এখন রয়েছে কয়েকটি ভাঙাচোরা দেওয়াল। সেখান থেকেও প্লাস্টার খসে ইট বেরিয়ে পড়েছে। ঘরে আগাছা। যত্রতত্র পড়ে ভাঙা টিনের টুকরো, বাঁশের কাঠামো, আবর্জনা। এমনই বেহাল দশা সন্দেশখালি-১ ব্লকের ন্যাজাট-২ পঞ্চায়েতের গান্ধার পাড়ার ৩০৭ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের। রয়েছে শৌচাগার-পানীয় জলের সমস্যাও।

ফলে, বেশিরভাগ শিশুকেই ক্লাস করতে পাঠাতে চান না বাবা-মায়েরা। খুদে পড়ুয়ারা অভিভাবকের সঙ্গে কেন্দ্রে এসে খাবার নিয়ে চলে যায়। অল্প কয়েকজন শিশু যারা ক্লাস করতে চায়, তাদের বসানো হয় খোলা আকাশের নীচেই।

স্থানীয় সূত্রে খবর, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি বেশ পুরনো। শেষ কবে এর সংস্কার হয়েছিল মনে করতে পারেন না গ্রামবাসী। কেন্দ্রের পাশে সহায়িকার বাড়িতে রান্না করা হত। সেখান থেকে খাবার নিয়ে যেত শিশুরা। চলত নামমাত্র পড়াশোনা। আমপান, ইয়াসে কেন্দ্রটির আরও ক্ষতি হয়। ঝড়ে উড়ে যায় ছাউনি। ছাউনির বেশ কিছু অংশ ভেঙে পড়ে ঘরে।

এই কেন্দ্রের পাশেই সরু রাস্তা চলে গিয়েছে। রাস্তার পাশেই নদী। নদীবাঁধ ভেঙে আমপান ও ইয়াসে প্লাবিত হয়েছিল এলাকা। দু’বারই দীর্ঘ সময় জলমগ্ন ছিল এই কেন্দ্রটিও। সে সময়ে দেওয়ালে নোনা ধরে যায়। বর্তমানে কেন্দ্রের ঘরগুলি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

কেন্দ্রের কর্মী রিনা ভুঁইয়া জানান, কেন্দ্রটির উপর নির্ভরশীল অন্তত ৪৫টি শিশু। কেন্দ্রে দু’টি ঘর এবং একটি ছোট বারান্দা আছে। কিন্তু আগাছা, আবর্জনার কারণে ঘরে ঢোকা যায় না। বর্তমানে স্থানীয় এক পরিবার গরু রাখে এই কেন্দ্রের একটি ঘরে। তাঁরাই ওই ঘরে ত্রিপলের ছাউনি দিয়েছেন। মিড-ডে মিলের রান্না হয় ফাঁকা জায়গায় ত্রিপল ঝুলিয়ে। বৃষ্টি হলে সহকর্মী নিভা সর্দারের বাড়িতে রান্না করা হয়।

রিনা বলেন, ‘‘দু’একজন বাচ্চা সকাল সকাল এলে ঘরের বাইরে একটু পড়াই। রোদ-জলে ফাঁকা জায়গায় বসতে হয় বলে বাচ্চাদের পাঠাতে চান না মায়েরা। বেশিরভাগ বাচ্চাই মায়েদের সঙ্গে এসে খাবার নিয়ে চলে যায়।’’ শৌচাগার বা জলের ব্যবস্থা না থাকায় তিনি প্রয়োজনে কিছুটা দূরের একটি মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রে যান বলে রিনা জানান। তাঁর অভিযোগ, সমস্যার কথা বার বার উপর মহলে জানিয়েও লাভ হয়নি।

অভিভাবক শিখা সর্দার এবং অনিতা সর্দারের কথায়, ‘‘কেন্দ্রটি যেন পোড়োবাড়ি। এটি ভেঙে নতুন করে তৈরি করা দরকার। এখানে বাচ্চাদের পাঠাতে সাহস হয় না।’’

এ বিষয়ে ব্লকের ভারপ্রাপ্ত সিডিপিও শুভ্রদীপ বৈদ্যকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। মেসেজেরও উত্তর দেননি। বিডিও সুপ্রতিম আচার্য বিষয়টির খোঁজ নিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Anganwadi center North 24 Parganas
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE