বাড়িঘর লন্ডভন্ড ঝড়ে। আশ্রয় নিয়েছন মুরগি রাখার ঘরে। —নিজস্ব চিত্র
ঝড়ের সময়ে সপরিবার আশ্রয় নিয়েছিলেন প্রাথমিক স্কুলে। ঝড় থামলে ফিরে এসে দেখেন, গাছের ডাল পড়ে টালির চালের বাড়িটা মাটিতে মিশে গিয়েছে। আপাতত ঠাঁই মিলেছে মুরগির জন্য তৈরি ঘরে। শুক্রবার পর্যন্ত একখানা ত্রিপলও জোটেনি হাবড়া ১ ব্লকের কুমড়া পঞ্চায়েতের বাসিন্দা পীযূষ হালদারের। তবে শনিবার পঞ্চায়েত থেকে ত্রিপলটুকু মিলেছে। রাজমিস্ত্রির কাজ করেন পীযূষ। জানালেন, রান্না ঘরও ভেঙেচুরে শেষ। ইট পেতে কোনও রকমে ভাত-ডাল ফুটিয়ে খাচ্ছেন। ভেঙে পড়া ঘর মেরামত করার মতো আর্থিক সামর্থ্য নেই পীযূষের। হতাশ গলায় বললেন, ‘‘পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সদস্যের কাছে সব মিলিয়ে সরকারি পাকা ঘরের জন্য ৭ বার আবেদন করেছি। পাকা ঘর থাকলে আমাকে মুরগির ঘরে থাকতে হত না।’’ বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়ে হাবড়া ১ ব্লক সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অসংখ্য বাড়ি ভেঙেছে। কারও চাল, ছাউনি উড়ে গিয়েছে। গোটা এলাকা বিদ্যুৎহীন। পর্যাপ্ত সরকারি ত্রাণ ও ত্রিপল না পেয়ে ক্ষোভ বাড়ছে মানুষের। ব্লকের অনেকেই মাথায় ছাউনি দেওয়ার জন্য ত্রিপলটুকুও পাননি বলে জানালেন।
জ্যোতিপ্রিয় এক পঞ্চায়েত সদস্য এবং পঞ্চায়েতের প্রধানকে প্রকাশ্যে ধমক দিয়ে বলেন, ‘‘তোরা একটা বুথ কন্ট্রোল করতে পারিস না, কী করে এলাকার নেতা হবি!’’ গ্রামবাসী পলাশ রায় বলেন, ‘‘আমার টিনের বেড়া দেওয়া ও টিনের চালের ঘর ঝড়ে ভেঙে উড়ে গিয়েছে। ঝড়ের সময়ে আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলাম। সরকারি পাকা বাড়ির জন্য তিনবার আবেদন করে প্রতিশ্রুতি ছাড়া কিছুই মেলেনি। খোলা আকাশের নীচে রয়েছি। রান্না করতে পারছি না। তাই মুড়ি বাতাসা খেয়ে কাটছে।’’ পুলিশ-প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে ড্রোনের মাধ্যমে সমীক্ষা চালানো হচ্ছে হাবড়া ব্লক ১ এলাকায়। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার এ ভাবেই সমীক্ষার কাজ হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার ছবি রাজ্য সরকারের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে।
শুক্রবার হাবড়ার কুমড়া পঞ্চায়েত এলাকাও ঘুরে দেখেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। মন্ত্রীর কাছে গ্রামবাসী পর্যাপ্ত সাহায্য, সহযোগিতা পাচ্ছেন না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। জ্যোতিপ্রিয় বলেন, ‘‘ভয়ঙ্কর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে হাবড়ায়। ভেঙে যাওয়া বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হবে। সময় লাগবে। এখন ত্রিপল বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। সকলের ত্রাণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy