বামেদের পুর ভোটের ইস্তাহার প্রকাশ করছেন সুজন চক্রবর্তী। নিজস্ব চিত্র।
পুরসভা ভোটের দিনক্ষণ এখনও ঘোষণা হয়নি। তার আগেই অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভা এলাকায় নির্বাচনের ইস্তেহার বা ‘প্রতিজ্ঞাপত্র’ প্রকাশ করল বামেরা। রবিবার স্থানীয় শহিদ সদনে বামেদের পক্ষ থেকে নির্বাচনী সাধারণ সভা করা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রতিজ্ঞাপত্র প্রকাশ করেন সুজন। পুরভোটের দিকে তাকিয়ে এদিন বামেদের পক্ষ থেকে একটি স্লোগান ঘোষণা করা হয়, ‘আমার শহর, আমার থাক। অশোকনগর- কল্যাণগড় বাম দিকে যাক।’
সিপিএমের অশোকনগর এরিয়া কমিটির সম্পাদক সত্যসেবী কর বলেন, ‘‘পুর এলাকার ৯,৭২৬ জন মানুষের মতামত, পরামর্শ নিয়ে আমরা প্রতিজ্ঞাপত্র তৈরি করেছি। মানুষের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, বামপথে পরিচালিত পুরসভার কাছে আপনি কী আশা করেন। কোন ক্ষেত্রে এবং কেন আপনি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ দেখতে চান। আমরা খুশি, পুরবাসী মতামত দেওয়ায়।’’
সিপিএম সূত্রে জানানো হয়েছে, এ বার কয়েক দিন আগে থেকে পুরভোটের প্রস্তুতিতে এলাকায় সমীক্ষা চালানোর জন্য একটি পেশাদার সংস্থাকে নিয়োগ করেছিলেন স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্ব। সেই সংস্থা প্রতিটি ওয়ার্ডে কাজ করছে। ওয়ার্ডের বাসিন্দারা কী চাইছেন, ওয়ার্ডে সিপিএম বা বামেদের পরিস্থিতি কেমন, বামেদের থেকে মানুষের প্রত্যাশা কী, এ সব তথ্য তারা তুলে আনছে। পাশাপাশি সিপিএম একটি অ্যাপ চালু করেছে। নাম, ‘কী চাইছে অশোকনগর’। দলীয় সূত্রে জানানো হয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই অ্যাপের লিঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অ্যাপের মাধ্যমে মানুষের কাছে জানতে চাওয়া হচ্ছে, পুরসভার কাছে তাঁরা কী প্রত্যাশা করেন। নতুন পুরবোর্ডের কাছে কী চান। এলাকার সমস্যা কী, তা-ও জানতে চাওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে বাসিন্দারা নিজেদের নাম-পরিচয় গোপন রেখে মতামত জানাতে পারছেন। যাঁরা সোশ্যাল মিডিয়ায় নেই, সিপিএম কর্মীরা তাঁদের বাড়িতে গিয়ে এ বিষয়ে ফর্ম দিয়ে এসেছেন। অ্যাপের পাশাপাশি মানুষের মতামত জানতে ২৫, ২৬ ও ২৭ জানুয়ারি তিনটি সভা করা হয়েছে। সভার নাম, ‘মতামত বিনিময় সভা।’
সত্যসেবী বলেন, ‘‘সমীক্ষা, অ্যাপ এবং মানুষের মতামত নিয়ে আমরা ইস্তাহার প্রকাশ করেছি।’’
কী আছে বামেদের ইস্তেহারে?
বলা হয়েছে, পাড়ায় পাড়ায় পুরসভা নিয়ে আসা হবে। ওয়ার্ডে অব্যবহৃত কমিউনিটি হলগুলিতে পুরসভার শাখা অফিস হবে। সেখানে মানুষ শংসাপত্র, লাইসেন্স বা বিভিন্ন আবেদন করতে পারবেন। পুরসভার যাবতীয় পরিষেবা এখান থেকে মিলবে। ৬টি ট্রেনিং সেন্টার খোলা হবে। যুবক-যুবতীরা সেখানে বিনামূল্যে প্রবেশিকা ও চাকরির প্রশিক্ষণ পাবেন। ৬টি ক্যান্টিন করা হবে, সেখানে মানুষ ১০ টাকায় আহার করতে পারবেন। পুরসভায় ২৪ ঘণ্টার জন্য হেলপ লাইন নম্বর থাকবে। মানুষ জরুরি প্রয়োজনে সেখানে ফোন করে পরিষেবা পাবেন। পুরসভার ওয়েবসাইট ও সোশ্যাল মিডিয়ার পেজ থাকবে। মানুষ সব তথ্য সেখানে জানতে পারবেন। বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে মিলিত ভাবে মাল্টিলেক্স করা হবে। কম খরচে সিনেমা দেখার ব্যবস্থা থাকবে। নাচ-গান-ছবি-নাটকের জন্য স্থায়ী গ্যালারি তৈরি হবে। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে দলমত সকলকে নিয়ে ওয়ার্ড কমিটি তৈরি করা হবে। মাতৃসদনে ডায়ালিসিস ও আধুনিক পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। যে সব গরিব মহিলারা সরকারি প্রকল্পে মাসে ৫০০ টাকা ভাতা পান, তাঁদের মধ্যে থেকে আরও গরিব মহিলাদের বেছে নেওয়া হবে। তাঁদের পুরসভা থেকে ১ হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়া হবে।
বামেদের ইস্তেহার নিয়ে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী বলেন, ‘‘সিপিএমের কথা মানুষ বিশ্বাস করেন না। অশোকনগরের মানুষও বিশ্বাস করবেন না। ওঁদের প্রতিশ্রুতিতে কোনও কাজ হবে না। ভোটে ওদের ভরাডুবি হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy