ভাঙড়ে রেশন দোকানের সামনে বিক্ষোভ। ছবি: সামসুল হুদা
সরকারি নির্দেশমতো রেশনে চাল, আটা দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলে রেশন দোকানের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন সাধারণ মানুষ। বুধবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে ভাঙড় ১ ব্লকের জাগুলগাছি অঞ্চলের ২৮ নম্বর রেশন দোকানের সামনে। লকডাউন শুরু হওয়ার পরে এ দিনই প্রথম রেশন দোকান থেকে চাল, আটা দেওয়া শুরু হয়েছে।
স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, ওই রেশন দোকান থেকে চাল দেওয়া হলেও আটা দেওয়া হয়নি। এই নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়। স্থানীয় এক রাজনৈতিক দলের নেতার সঙ্গে যোগসাজশ করে রেশনের অর্ধেক মাল ডিলার অন্যত্র পাচার করে দিয়েছেন বলে অভিযোগও ওঠে। প্রতিবাদে স্থানীয় বাসিন্দারা রেশন দোকানের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান স্থানীয় তৃণমূল নেতা বাহারুল ইসলাম ও ভাঙড় থানার পুলিশ। তারাই সাধারণ মানুষকে বুঝিয়ে শান্ত করেন। রেশনের মাল দেওয়া এ দিনের মতো বন্ধ করে দেওয়া হয়। আজ, বৃহস্পতিবার থেকে সরকারি নিয়ম মেনে মাল দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এএওয়াই কার্ডে পরিবার পিছু ১৫ কেজি চাল, ২০ প্যাকেট আটা দেওয়ার কথা। পিএইচএইচ, এসপিএইচএইচ ও আরকেএসওয়াই-১ কার্ডে মাথাপিছু ২ কেজি চাল, ৩ প্যাকেট আটা দেওয়ার কথা এবং আরকেএসওয়াই-২ কার্ডে মাথাপিছু ১৩ টাকা মূল্যে ১ কেজি চাল ও ৯ টাকা মূল্যে ১ প্যাকেট আটা দেওয়ার কথা। শুধু আরকেএসওয়াই ২ কার্ড ছাড়া অন্য রেশন কার্ডে চাল, আটা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দেওয়ার কথা।
রেশন ডিলার শঙ্করকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘এ দিন কেবলমাত্র চালই এসেছে। যে পরিমাণ চাল পেয়েছি, সেই মতো গ্রাহকদের দেওয়া হচ্ছিল। এ দিন কোনও আটা আমরা পাইনি। গ্রাহকদের বলা হয়েছিল, বাকি চাল-আটা পরের সপ্তাহে দেওয়া হবে। কিন্তু তাঁরা কোনও কথা না শুনে রেশন দোকানের ভিতরে ঢুকে কর্মীদের ধাক্কাধাক্কি করেন।’’
বিডিও সৌগত পাত্র বলেন, ‘‘খাদ্য দফতরকে বলা হয়েছে, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে। সেই মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
জয়নগরের ঢোসাহাটেও রেশন সামগ্রী বণ্টন নিয়ে এক ডিলারের সঙ্গে বচসা বাধে গ্রাহকদের। গ্রাহকদের অভিযোগ, প্রত্যেককে পাঁচ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা বলা হলেও, তা দেওয়া হয়নি। ডিলার জানান, সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী, প্রত্যেকের পাঁচ কেজি করে চাল পাওয়ার কথা নয়। যার যেমন প্রাপ্য, তেমনই দেওয়া হচ্ছিল। না বুঝেই মানুষ বিক্ষোভ দেখান। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
জয়নগরের অন্য জায়গায় অবশ্য নির্বিঘ্নে রেশন সামগ্রী বিলি হয়েছে। ভোর থেকেই রেশন দোকানগুলির সামনে লাইন দেন সাধারণ মানুষ। পুরসভা, পুলিশের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে লাইনে দাঁড়াতে অনুরোধ করা হয় সকলকে।
ক্যানিংয়ে দূরত্ব বজায় রেখে লাইন দেওয়ার পাশাপাশি সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছিল গ্রাহকদের জন্য। বাসন্তীর ফুলমালঞ্চ পঞ্চায়েতের গৌরদাস পাড়া এলাকায় সাইকেলের টায়ার দিয়ে সামাজিক দূরত্বের সীমানা নির্ধারণ করা হয় গ্রাহকদের জন্য।
পাশাপাশি মালপত্র দেওয়ার সময়ও যাতে শারীরিক দূরত্ব বজায় থাকে সে জন্য টিন দিয়ে নালা তৈরি করে সেই নালার মাধ্যমে মালপত্র গ্রাহকের ব্যাগে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। বাসন্তী বাজার, পালবাড়ি-সহ বেশ কিছু এলাকায় অবশ্য সচেতনতা চেখে পড়েনি। বহু মানুষ দীর্ঘক্ষণ ধরে গায়ে গায়ে লাইনে দাঁড়িয়ে রেশন সংগ্রহ করেছেন।
ডায়মন্ড হারবার, কাকদ্বীপ মহকুমাতেও সকাল থেকে রেশন দেওয়া শুরু হয়। অনেক জায়গায় নিয়ম মেনে লাইন দেন সাধারণ মানুষ।
তবে অনেক জায়গায় নিয়ম ভেঙে ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছে অনেককে। নিয়ম মেনে যাতে মালপত্র বিলি হয়, তা দেখার জন্য দোকানগুলিতে সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ করা হয় প্রশাসনের তরফে।
অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy