অবরোধ: রায়দিঘিতে।
হাতে কাজ নেই। খাবারও জুটছে না। খিদেয় কাঁদছে শিশুরা। খাবারের দাবিতে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখালেন বসিরহাটের পিঁফার গ্রামের মানুষ। সোমবার সকালে বসিরহাটের পিঁফায় ন্যাজাট সড়ক অবরোধ করে প্রায় তিন ঘণ্টা শিশু-মহিলা এবং পুরুষেরা বিক্ষোভ দেখান। পুলিশ এক মহিলা-সহ ৬ জনকে গ্রেফতার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে পিচ রাস্তার উপর সাদা রং দিয়ে করা গোল দাগের ভিতর বসে শুরু হয় অবরোধ। পুলিশ গিয়ে বিক্ষোভকারীদের শান্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। হাজির হন এসডিপিও। সে সময়ে পুলিশের সামনেই স্থানীয় পিঁফা পঞ্চায়েতের উপপ্রধানকে ঘেরাও করে ত্রাণ ও ঠিকঠাক রেশনের দাবিতে গ্রামের মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়েন। শুরু হয় বিক্ষোভ। পুলিশ ছ’জনকে গ্রেফতার করে।
গ্রামের মানুষের বক্তব্য, ভোট আসলেই নেতা নেত্রীরা বাড়ি বাড়ি এসে ভোট চান। অথচ এখন গ্রামের মানুষ খেতে পাচ্ছেন না। ত্রাণও পৌঁছয়নি। সে বিষয়ে কেউ খোঁজ নিতে আসেননি। তাঁদের দাবি, স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকেও কোনও রকম সাহায্য পাওয়া যাচ্ছে না। বাসিন্দা শ্যামলী সরকার বলেন, ‘‘দিনমজুরের কাজ করে কোনও রকমে এক বেলা আধপেটা খেয়ে বাঁচি। কাজ বন্ধ বলে এখন তো খাবারও মিলছে না। মুখ্যমন্ত্রী রেশন দিচ্ছেন। অথচ স্থানীয় পঞ্চায়েত তা আমাদের দিচ্ছে না। কী ভাবে আমাদের দিন কাটছে সে বিষয়ে প্রধান, সদস্য কেউ খোঁজ নিচ্ছেন না।’’ একই বক্তব্য অনিতা মণ্ডল, পারমিতা সরকার, রজত আলিরও।
অভিযোগ অস্বীকার করে স্থানীয় পিঁফা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান আলমগির মণ্ডল বলেন, ‘‘ইতিমধ্যে আমাদের কাছে ৩,২০০ কুইন্টাল চাল পৌঁছেছে। যাঁদের খাবার কিছু নেই, তাঁদের এখনই চাল দেওয়া হবে। বাকিদের আগামী ৩-৪ দিনের মধ্যে চাল, ডাল এবং তেল বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হবে।’’
খাবারের দাবিতে সোমবার সকালে মথুরাপুর-২ ব্লকের কোম্পানির ঠেক-চাপলা রোডে দিঘিরপাড়-বকুলতলা মোড়ে কাঠের গুড়ি ফেলে অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। সকাল ৬টা থেকে প্রায় ঘন্টা তিনেক ধরে অবরোধ চলার পর পুলিশের আশ্বাসে আন্দোলন ওঠে। প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বকুলতলা গ্রামে প্রায় হাজার দুয়েক পরিবারের বাস। প্রায় সকলেই দিনমজুরি করেন। টানা লকডাউন চলায় কাজ হারিয়ে এখন ঘরে রয়েছেন। সঞ্চিত অর্থ শেষ। রেশন কারড না থাকায় অনেকে রেশনও পাননি। এই পরিস্থিতিতে আধপেটে খেয়ে কাটাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। এরই প্রতিবাদে এ দিন বিক্ষোভ হয়। আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন ওই গ্রামে তৃণমূলের বুথ সভাপতি হানিফ বৈদ্য, হাবিবুল্লা দপ্তরিরা। তাদের অভিযোগ, আমরা সারা বছর মানুষের পাশে থাকি। তাই কদিন ধরে প্রতিবেশীরা খাবারের আশায় আমাদের বাড়িতে হানা দিচ্ছিলেন। কিন্তু আমাদের দলের পক্ষ থেকে কোনও সাহায্যের ব্যবস্থা এখনও করেনি। তাই বাধ্য হয়ে গ্রামের বাসিন্দাদের নিয়ে রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন শুরু করি। ব্লক প্রশাসন থেকে বলা হয়েছে ১৫০ পরিবারের খাবার আজই পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy