Advertisement
১৮ জানুয়ারি ২০২৫
Coronavirus

রেশন তুলতে জেরবার বহু মানুষ

বনগাঁ মহকুমায় অবশ্য মুখে মাস্ক না পরলে অনেক জায়গাতেই লাইনে দাঁড়ানো বাকিরা আপত্তি জানাচ্ছেন।

ভিড়: রেশন কার্ডের জন্য ভাঙড় ২ ব্লক প্রশাসনের দফতরের সামনে

ভিড়: রেশন কার্ডের জন্য ভাঙড় ২ ব্লক প্রশাসনের দফতরের সামনে

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২০ ০২:৪৮
Share: Save:

কোথাও ভোর রাত থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন মানুষ। কোথাও ইট, ব্যাগ রেখে লাইন দিয়ে বেপাত্তা হয়ে যাচ্ছেন। হঠাৎ করে লাইনে ফিরে দাঁড়াতে চাইলে শুরু হচ্ছে অশান্তি। রেশন নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগও বিস্তর। শারীরিক দূরত্ব বিধি বেশির ভাগ জায়গায় বজায় রাখা হচ্ছে না বলেও অভিযোগ উঠছে। সকলের মুখে মাস্ক দেখা যাচ্ছে— এমনটাও নয়।

বনগাঁ মহকুমায় অবশ্য মুখে মাস্ক না পরলে অনেক জায়গাতেই লাইনে দাঁড়ানো বাকিরা আপত্তি জানাচ্ছেন। এমনকী, লাইন থেকে বেরও করে দেওয়া হচ্ছে কাউকে কাউকে। কিছু না থাকলে মুখে রুমাল বা শাড়ির আঁচল চাপা দিয়ে অনেকে দাঁড়াচ্ছেন লাইনে। রেশন দোকানগুলির সামনে গোল আঁকা রয়েছে। ওই গোলের মধ্যে শারীরিক দূরত্ব মেনে মানুষ দাঁড়াচ্ছেন। এ সব দেখার জন্য সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন রয়েছে। চাল পেলেও কয়েকটি দোকান থেকে আটা মিলছে না বলে অভিযোগ ।

হাসনাবাদ, হিঙ্গলগঞ্জ, মিনাখাঁ, সন্দেশখালি সহ বিভিন্ন ব্লকের রেশন ডিলারদের থেকে জানা গেল, রেশন নিতে মানুষের ভিড় যাতে না হয়, সে জন্য ডিলাররা কেউ কুপনের ব্যবস্থা করেছেন। কেউ আবার এক এক দিন এক একটা ছোট ছোট পাড়ার মানুষদের ডেকে নিয়ে রেশন দিচ্ছেন। অনেক দোকানের সামনে সিভিক ভলান্টিয়ার থাকছেন। শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা হচ্ছে কিনা, তা দেখভাল করছেন তাঁরা। তবে বহু জায়গাতেই গা ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়াতে দেখা যাচ্ছে রেশন লাইনে।

গত মাসের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে ব্যারাকপুর মহকুমার রেশন দোকানগুলি গ্রাহকদের কুপন বিলি করেছে। তার ফলে সকাল এবং বিকেলে নির্দিষ্ট সংখ্যক গ্রাহক আসছেন। তাতে ভিড় অনেকটাই সামাল দেওয়া গিয়েছে। শহর এলাকায় ভিড় না হলেও নৈহাটি এবং বীজপুরের গ্রামাঞ্চলের দোকানগুলিতে সকাল থেকে প্রচুর গ্রাহক ভিড় করেন। বেশিরভাগ জায়গায় দূরত্ববিধি মানা হয়নি বলে অভিযোগ।

রেশন বণ্টন, খাবারের মান নিয়ে ক্ষোভ আছে বহু জায়গায়। ওজন কম দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠছে। নিম্নমানের আটা ও চাল ওজনে কম দেওয়ার জন্য কুলপির গ্রামের এক রেশন ডিলারকে সাসপেন্ড করে শোকজ করা হয়েছে।

ক্যানিং মহকুমার প্রত্যেকটি জায়গায় ঠিকঠাক ভাবেই রেশন বিতরণ চলছে। এখনও পর্যন্ত মহকুমার চারটি ব্লকের কোথাও বড় কোনও অভিযোগ শোনা যায়নি।

শারীরিক দূরত্ব না মেনে রেশন কার্ডের জন্য ভাঙড় ২ ব্লক প্রশাসন দফতরে সোমবার সকাল থেকে ভিড় ছিল প্রচুর। ভিড় সামাল দিতে গিয়ে নাজেহাল হতে হয়েছে পুলিশকে। যাদের রেশন কার্ড নেই তাদের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে কুপনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, এমন অনেকেই আছেন যাদের রেশন কার্ড নেই। কিন্তু তাঁরা কুপন পাননি।

কাশীপুরের শোনপুরের বাসিন্দা সাইরুল গোলদার বলেন, ‘‘আমার রেশন কার্ডে ভুল ছিল। সেই মতো আমি ক্যাম্পে ভুল সংশোধনের জন্য আবেদন করেছিলাম। আমাকে বারকোড দেওয়া যে কাগজ দেওয়া হয়েছিল, তা দিয়ে অনলাইনে সার্চ করে দেখেছি, আমার নামে কোনও রেশন কার্ড ইস্যু হয়নি। কার্ড না থাকার জন্য আমি বিনামূল্যে রেশনের মাল পাচ্ছি না।’’

ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই সময়ে এমন অনেকেই আছেন যারা ক্যাম্পে আবেদন না করে দালালের মাধ্যমে রেশন কার্ডের জন্য আবেদন করেছিলেন। যে কারণে অনেক ভুলভ্রান্তি থেকে গেছে। একই বারকোড ফটোকপি করে অনেকের আবেদনে লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। একটি বারকোডের পরিপ্রেক্ষিতে কেবলমাত্র একটি রেশন কার্ড ইস্যু হবে। এ ক্ষেত্রে অনেকেই ভাবছেন আবেদন করা সত্ত্বেও তাঁদের নামে কার্ড ইস্যু হয়নি।

এ বিষয়ে ভাঙড় ২ বিডিও কৌশিককুমার মাইতি বলেন, ‘‘রেশন কার্ড নিয়ে বেশ কিছু ক্ষেত্রে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। কিছু অভিযোগ আমরা পেয়েছি। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। সেইমতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি। আপাতত যাঁরা কোনও ভাবে রেশন পাচ্ছেন না, তাঁদের জন্য কী ব্যবস্থা করা যায় তা দেখা হচ্ছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy