Advertisement
১৮ জানুয়ারি ২০২৫
খুলল মদের দোকান, হামলে পড়লেন ক্রেতারা
Coronavirus

যায় যদি যাক প্রাণ...

মদের দোকান সোমবার খোলা হতে পারে, এই খবর ছিল। সরকারি ঘোষণার আগে থেকেই ইতিউতি ভিড়টা জমতে শুরু করেছিল দোকানের বাইরে।

শেষমেশ খুলল দোকান। ক্রেতাদের ভিড়। হাবড়ায়। ছবি: সুজিত দুয়ারি

শেষমেশ খুলল দোকান। ক্রেতাদের ভিড়। হাবড়ায়। ছবি: সুজিত দুয়ারি

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২০ ০২:৫০
Share: Save:

লকডাউন পর্বে কখনও ব্যাঙ্কের লাইন এক-দেড়শো মিটার ছাড়িয়েছে। কখনও রেশন দোকানের লাইনে হত্যে দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে শ’য়ে শ’য়ে মানুষকে। ত্রাণের লাইনেও উপচে পড়েছে ভিড়। তবে সোমবার যে দৃশ্য দেখা গেল মদের দোকানের বাইরে, তা লকডাউন পর্বে অভূতপূর্ব। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার নানা জায়গায় এক কিলোমিটার পর্যন্ত লম্বা লাইন দেখা গেল সোমবার। অধীর আগ্রহে সেখানে ধৈর্য্য ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে নানা বয়সের মানুষকে। আর দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরে বোতল হাতে দোকান থেকে বেরিয়ে আসার সময়ে ভুবন-ভোলানো হাসি সকলের মুখে।

মদের দোকান সোমবার খোলা হতে পারে, এই খবর ছিল। সরকারি ঘোষণার আগে থেকেই ইতিউতি ভিড়টা জমতে শুরু করেছিল দোকানের বাইরে। বেলার দিকে একে একে খুলতে শুরু করে দোকান। কোথাও কোথাও লাইনে দাঁড়ানো জনতা উল্লাসও করে উঠেছে সে দৃশ্য দেখে।

তবে বেশ কিছু জায়গায় এ দিন দোকান খোলেনি। দোকান মালিকদের বক্তব্য, রাজ্য সরকারের কোনও নির্দেশিকা না থাকায় তাঁরা দোকান খুলতে পারেননি।

বনগাঁ শহরের ট’বাজার এলাকায় মদের দোকানের সামনে কয়েকশো মানুষের ভিড় ছিল। দূরত্ববিধি না মানায় পুলিশ গিয়ে লাঠি উঁচিয়ে ক্রেতাদের সরিয়ে দেয়। হাবড়ায় মদের দোকান খোলে বেলা ৩টে নাগাদ। ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে শেষ পর্যন্ত মদের দোকানগুলির সামনে পুলিশ মোতায়েন করতে হয়।

ব্যারাকপুরের কিছু মদের দোকান খোলে বেলা ১২টায়। কিছু দোকান খোলে বিকেলে। তবে তার বহুক্ষণ আগে থেকেই লম্বা লাইন লাইন পড়ে গিয়েছিল দোকানগুলির সামনে। দোকান খোলার পরে কিছু জায়গায় বিশৃঙ্খলা শুরু হয়। পুলিশ ঘোষণা করে, দূরত্ব মেনে না দাঁড়ালে ফের দোকান বন্ধ করে দেওয়া হবে। জনতা নিমেষে শান্ত!

সোমবার বিকেলে বাসন্তী বাজারে মদের দোকান খুলেছে। ভাঙড়েও এ দিন দু’একটি দোকান খুলতে দেখা যায়। এ দিন বিকেল ৩টে থেকে ৬টা পর্যন্ত খোলা রাখা হল ডায়মন্ড হারবার শহরের দু’টি মদের দোকান।

এ দিন সব জায়গায় দূরত্ব বিধি মানা গিয়েছে, এমনটা নয়। মুখে সকলের মাস্ক ছিল, তা-ও নয়। তবে মদের দোকান খোলার ফলে কালোবাজারি কমবে বলে মনে করছেন প্রশাসনের কর্তা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। এতে এক দিকে যেমন সরকারের ঘরে রাজস্ব আসবে, তেমনই জাল মদ বিক্রিও কমবে।

মদের দোকান খোলায় দিনভর নানা রকম টিকাটিপ্পনি ভেসে বেরিয়েছে শহর-গ্রামের পথে। ডায়মন্ড হারবার শহরের এক যুবক এ দিন বোতল বগলে বেরিয়ে বলে গেলেন, ‘‘এ বার লকডাউন বাড়লেও আপত্তি নেই!’’ বসিরহাটের এক ব্যক্তির কথায়, ‘‘চল্লিশ বছর ধরে রোজ অল্প হলেও মদ্যপান করি। আমাদের মতো লোকজনের জন্য এটা অত্যাবশ্যক পণ্যের মধ্যেই পড়ে।’’

তবে এই পরিস্থিতিতে অখুশি বহু মহিলা। মগরাহাটের গ্রামের এক বধূর কথায়, ‘‘মদ খেয়ে সংসারের পুরুষ মানুষরা খুবই খারাপ ব্যবহার করেন। কত টাকা এর পিছনে উড়িয়ে দেন। ক’টা দিন তবু শান্তিতে ছিলাম। ফের তাণ্ডব শুরু হল বলে!’’

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy