প্রতীকী ছবি
লকডাউনের সমস্যায় পড়েছেন ক্যানিং ২ ব্লকের নাগরতলা গ্রামের এক পরিবার। এই পরিবারের সদস্য সবিতা গায়েন ক্যানসার আক্রান্ত। প্রতিদিনই তাঁর কিছু গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ লাগে। কিন্তু লকডাউনের জেরে সেই ওষুধ জোগাড় করতে না পেরে সমস্যায় রয়েছেন গোটা পরিবার। ওষুধের অভাবে দিনের পর দিন কষ্ট বাড়ছে সাতান্ন বছরের ওই মহিলার।
২০১২ সাল থেকে স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত সবিতা। আগে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা চললেও এখন এআরএসে চিকিৎসা চলছে। দরিদ্র পরিবার, মাটির দেওয়ালের একটি ঘরেই বড় মেয়ে অসীমার সঙ্গে থাকেন সবিতা। স্বামী শশাঙ্ক শেখর গায়েন দীর্ঘদিন ধরেই মানসিক রোগে আক্রান্ত। বর্তমানে সুগার-সহ বিভিন্ন ধরনের বার্ধক্যজনিত অসুখে জর্জরিত তিনি। সংসারের অভাবের কারণে তিনি মেজ মেয়ের শ্বশুরবাড়িতেই থাকেন। অসীমাই একমাত্র এই পরিবারের রোজগেরে সদস্য। তিনি বেসরকারি নার্সিং হোমে নার্সের কাজ করতেন। কিন্তু গত বেশ কয়েক মাস নিজের শারীরিক অসুস্থতা ও পরিবারের অন্যদের অসুস্থতার জন্য কাজে যেতে পারেননি। ফলে বর্তমানে এই পরিবারের রোজগার নেই বললেই চলে।
কোনও ভাবে দু’বেলা দু’মুঠো খেয়ে চলছে মা ও মেয়ের। কোনও দিন আবার তাও জোটে না। কোনও রকম সরকারি বা বেসরকারি সাহায্যও এর জন্য তাঁরা পাননি। এখন সমস্যায় পড়েছেন সবিতার ওষুধ নিয়ে। প্রতি মাসে প্রায় হাজার খানেক টাকার ওষুধ প্রয়োজন তাঁর। যে কোনও ভাবে মায়ের সেই ওষুধ জোগাড়ও করছিলেন অসীমা। মূলত এনআরএস হাসপাতালের ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকান থেকেই সেই প্রয়োজনীয় ওষুধ সংগ্রহ করতেন তিনি। কিন্তু লকডাউন সব কিছুকে কেমন যেন উলট পালট করে দিল। গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকায় ওষুধ আনতে যেতে পারছেন না। মায়ের ওষুধ শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে গত কয়েকদিন ধরে যথেষ্ট চিন্তিত অসীমা। সাহায্যের জন্য স্থানীয় জীবনতলা থানার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন, কিন্তু কোনও সাহায্য পাননি বলে দাবি। স্থানীয় থানায় সাহায্য না পেয়ে লালবাজারে ফোনে যোগাযোগ করেছিলেন, সেখান থেকে আশ্বাস দেওয়া হলেও পাননি সাহায্য। অভিযোগ, স্বাস্থ্য ভবনে যোগাযোগ করেও কোনও সাহায্য পাননি। শেষ পর্যন্ত সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের সমস্যার কথা জানান অসীমা। সেখান থেকে খবর পেয়ে সৌরভ ঘোষ নামে এক যুবক দিন দু’য়েক আগে দু’রকমের ওষুধ পৌঁছে দিয়ে গিয়েছেন অসীমার বাড়িতে। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ জোগাড় করতে পারেননি ওই যুবক।
সবিতা বলেন, “ওষুধের জন্য সমস্যা হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু, দু’বেলা খাওয়ার মতোও কিছু ঘরে নেই, সেখানে ওষুধ কী ভাবে জোগাড় হবে?” এই সমস্যার কথা শুনে অবশ্য সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন স্থানীয় ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক সওকত মোল্লা। তিনি বলেন, “ওই পরিবার যাতে ওষুধ পায় তার ব্যবস্থা করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy