প্রতীকী ছবি।
মার্চ মাস থেকেই ক্যানিং কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসক হিসেবে কাজে যোগ দিই। জুনের প্রথম সপ্তাহে করোনায় আক্রান্ত হই। প্রথমে ছিল মাথা ব্যথা। পরে জ্বর এল। লালারস পরীক্ষার জন্য পাঠালাম। সন্দেহ হচ্ছিল, কোভিডই হয়েছে। এক বন্ধুর মাধ্যমে ফল, শাকসব্জি, ওষুধপত্র জোগাড় করে রেখে হোম আইসোলেশন শুরু করে দিই।
দু’দিন পরে রিপোর্ট পজ়িটিভ এল। কিন্তু ভয় পাইনি। ১৭ দিনের হোম আইসোলেশনে পড়াশোনা, ধ্যান, শরীরচর্চা করেছি। প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে জল খেতাম। সামান্য কিছু জ্বরের ওষুধ ও অন্যান্য ওষুধ নিয়েছিলাম।
কোভিড হাসপাতালে গত ৫ মাস ধরে আমার পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ৯৮ শতাংশ মানুষই ১৪ দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠছেন।
সকলকে অনুরোধ করছি, করোনাভাইরাসকে ভয় পাবেন না। আমাদের পরামর্শ অনুযায়ী সতর্কতা ও সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। হাসপাতালে বেড না পাওয়ার কারণে যেন কেউ চিকিৎসার অভাবে মারা না যায়। ভারতের মতো অপর্যাপ্ত স্বাস্থ্য পরিকাঠামো'র দেশে এটা তখনই সম্ভব হবে, যখন একই সময়ে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা সীমিত করা যাবে। সরকার এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সে কারণে লকডাউন এবং অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে সংক্রমণের শিকলটিকে ভাঙার চেষ্টা করছেন— এতে আমাদের সকলকে সহযোগিতা করতে হবে। তিন সপ্তাহের মধ্যেই আমি সুস্থ হয়ে ফিরে এসে কোভিড হাসপাতালে কাজ শুরু করেছি। আমার মতো প্রচুর কোভিড যোদ্ধা আছেন, যাঁরা নিরলস ভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। এঁদের সম্মান করুন। বাড়ি থেকে বা পাড়া থেকে তাড়িয়ে দেবেন না। শুধু এটা খেয়াল রাখুন, যে সবাই নিয়ম মানছে কিনা। কেউ না মানলে বুঝিয়ে বলুন। তা হলেই সমস্যা দূর হবে। প্রত্যেকে যদি মাস্ক ব্যবহার করেন এবং একে অন্যের থেকে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখেন, তবে এই রোগ দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
প্রায় ৯০% মানুষের কোনও লক্ষণ হয় না। বা হাল্কা লক্ষণ হয়, যেগুলি তিনি উপেক্ষা করে থাকেন এবং পরীক্ষা করান না। এর ফলে এঁরা নিজের অজান্তেই রোগ ছড়ান। আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি, কোভিডের উপসর্গ থাকলে তাঁদের প্রত্যেকেরই পরীক্ষা করা উচিত। কারণ আগে থেকে রোগ নির্ণয় হয়ে থাকলে সঠিক দিশা পাবেন এবং খারাপ কিছু হলে কোভিড হাসপাতালে যাবেন নাকি সাধারণ হাসপাতালে যাবেন, এই দোটানার মধ্যে পড়তে হবে না।
ডাক্তারবাবুর পরামর্শ
• খাদ্য তালিকায় কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট, মিনারেলযুক্ত খাবার। ফল যেন অবশ্যই থাকে।
• শরীরের যে কোনও অংশ (মুখমণ্ডল ছাড়া) দিনে একবার ৫ মিনিট করে সূর্যের আলোয় রাখুন। তাতে শরীরে ভিটামিন-ডি তৈরি হবে।
• দ্রুত হাঁটা, সাঁতার, স্কিপিং, নাচ বা যে কোনও ধরনের শরীরচর্চা করুন। শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম, প্রাণায়াম করুন।
• দ্রুত ওজন কমানোর চেষ্টা করবেন না। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমাতে পারে।
• রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে মানসিক স্বাস্থ্যেরও উন্নতি দরকার। ধূমপান, মদ্যপান ছাড়ার চেষ্টা করুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy