প্রতীকী ছবি।
ঘটনা ১: পঞ্চান্ন বছরের মহিলার জ্বর-শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে আসেন। রাত ১টা ৪৫ মিনিটে মহিলাকে হাসপাতালে ভর্তি করে কোভিড হাসপাতালে রেফার করা হয়। রাত ৩টে ২০ মিনিট নাগাদ মহিলা মারা যান। অ্যাম্বুল্যান্স এসে পৌঁছয় তারও পরে।
ঘটনা ২: হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে আনা হয়েছিল অশোকনগরের এক তরুণীকে। তাঁকে কোভিড হাসপাতালে রেফার করা হয়। ৪৫ মিনিট পরেও অ্যাম্বুল্যান্স না আসায় তরুণীর পরিবারের লোকজন নিজেদের গাড়িতে করে বারাসতে কোভিড হাসপাতালে নিয়ে যান। বেলা সাড়ে ৩টে নাগাদ মারা যান তরুণী।
ঘটনা ৩: হাবড়ার বেড়গুম এলাকার এক মহিলা করোনার উপসর্গ নিয়ে হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে আসেন। র্যা পিড টেস্টে করোনা পজ়িটিভ ধরা পড়ে। ছেলের অভিযোগ, জেলা কন্ট্রোল রুমে ফোন করা হলেও কেউ ধরেননি। পরে পঞ্চায়েত সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের মাধ্যমে অ্যাম্বুল্যান্স বুকিং করে দেন। ৪টে নাগাদ অ্যাম্বুল্যান্সে পৌঁছয়। সাড়ে ৪টে নাগাদ রোগীকে অ্যাম্বুল্যান্সে তোলার আগেই তিনি মারা যান।
সাম্প্রতিক সময়ে হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত রোগীদের কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করতে ও অ্যাম্বুল্যান্স পেতে দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কন্ট্রোল রুমের নম্বরে ফোন করার অভিজ্ঞতা অনেকের ক্ষেত্রে সুখকর নয়।
অনেকে জানালেন, কন্ট্রোল রুমে ফোন করলে দীর্ঘক্ষণ ধরে বেজে যায়। লাইন পেতে সময় লাগে। লাইন পাওয়ার পরে যাঁরা ফোন রিসিভ করেন, তাঁদের হাজারও প্রশ্ন। এমনও বলা হচ্ছে, রোগীকে হাবড়া হাসপাতালেই চিকিৎসা করান। কোভিড হাসপাতালে সিট বুকিংয়ের পরে কন্ট্রোল রুম থেকে অ্যাম্বুল্যান্স চালকের নম্বর রোগীর পরিবারের লোকজনকে দেওয়া হচ্ছে যোগাযোগ করার জন্য। অ্যাম্বুল্যান্স চালকের ফোন অনেকে বন্ধ পেয়েছেন। রিং হলেও অনেক সময়ে চালক ফোন ধরেন না বলে অভিযোগ। অ্যাম্বুল্যান্স আসতেও দেরি হচ্ছে।
অনেকে জানালেন, জেলা কন্ট্রোল রুম থেকে বলা হয়, কোভিড হাসপাতালে রোগী ভর্তি করতে গেলে একটি আবেদনপত্র পূরণ করতে হবে। রোগীর আত্মীয়ের মোবাইলে ফর্ম পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এ সব করতে দেরি হয়ে যায়। অনেকের স্মার্ট ফোন নেই। তাঁরা সমস্যায় পড়েন।
করোনা আক্রান্ত রোগীকে কোভিড হাসপাতালে পাঠানোর জন্য হাবড়া হাসপাতালে কোনও সরকারি অ্যাম্বুল্যান্স নেই। ফলে জেলা কন্ট্রোল রুম থেকে কখন অ্যাম্বুল্যান্স আসবে তার অপেক্ষায় থাকতে হয়। জেলা কন্ট্রোল রুম থেকে যে অ্যাম্বুল্যান্স পাঠানো হয়, তাতে অনেক সময়ে অক্সিজেন থাকে না। ফলে রোগীর আত্মীয়দের মোটা টাকা খরচ করে অক্সিজেন সিলিন্ডার ভাড়া করতে হচ্ছে।
হাবড়ার পাশেই অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতাল এখন কোভিড হাসপাতাল হয়েছে। সেখানে সরাসরি করোনা আক্রান্ত রোগীকে ভর্তি করা যায় না বলেও ক্ষোভ আছে এলাকায়। সকলেরই দাবি, করোনা রোগীকে কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করা ও অ্যাম্বুল্যান্স দ্রুত পাওয়ার ব্যবস্থা করুক স্বাস্থ্য দফতর।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায় বলেন, ‘‘করোনা রোগীদের কোভিড হাসপাতালে নিয়ে যেতে জেলায় ৩০টি অ্যাম্বুল্যান্স কাজ করছে। বুকিং করার পরে অ্যাম্বুল্যান্স হাবড়া হাসপাতালে পৌঁছনোর সময় তো দিতে হবে। অনেক সময়ে চালক অন্য রোগী নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। আমরা আরও দ্রুত পরিষেবা দিতে চেষ্টা করছি।’’ স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্য সমস্যাগুলি সমাধান করার চেষ্টা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy