Advertisement
২০ ডিসেম্বর ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

করোনা জয় করে ফের কাজে যোগ দিতে চলেছেন নার্স

আমডাঙা থানার হামিদপুরের মেয়ে সামিমা ২০১৪ সালে সন্দেশখালি ১ ব্লকের ঘোষপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নার্স হিসাবে কাজে যোগ দেন।

বাড়িতে সামিমা। নিজস্ব চিত্র

বাড়িতে সামিমা। নিজস্ব চিত্র

নবেন্দু ঘোষ
সন্দেশখালি শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০২০ ০৩:৪২
Share: Save:

ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কাজ করতে করতে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন বছর উনত্রিশের নার্স সামিমা খাতুন। করোনা জয় করে ফের কোভিড হাসপাতালেই কাজে যোগ দিতে চলেছেন সামিমা।

আমডাঙা থানার হামিদপুরের মেয়ে সামিমা ২০১৪ সালে সন্দেশখালি ১ ব্লকের ঘোষপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নার্স হিসাবে কাজে যোগ দেন। ২০১৬ সালে তাঁর বিয়ে হয় সন্দেশখালি থানার রামপুরে। ২০১৮ সাল থেকে সন্দেশখালি ১ ব্লকের হাটগাছি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্মরত রয়েছেন তিনি। সামিমার বাড়িতে বৃদ্ধ শ্বশুর, শাশুড়ি, স্বামী ও তিন বছরের ছেলে।

১৫ জুলাই সামিমার স্বামী মনিরুল ইসলাম মোল্লার জ্বর আসে। ১৮ তারিখ জ্বর হয় সামিমারও। এরপরে ২০ জুলাই তাঁদের সন্তানেরও জ্বর আসে। বৃদ্ধ শ্বশুর-শাশুড়িরও জ্বর হয়। প্রত্যেকের জ্বর একদিন পরে সেরে গেলেও সামিমা ও তাঁর স্বামীর শরীর খুব দুর্বল হয়ে যায়। সেই সঙ্গে তাঁরা কোনও স্বাদ বা গন্ধ পাচ্ছিলেন না।

চিকিৎসকদের পরামর্শে ২৪ জুলাই করোনা পরীক্ষা করালে ২৮ তারিখ জানা যায়, তাঁরা দু'জনেই করোনা আক্রান্ত। এ বিষয়ে সামিমা বলেন, “প্রথমে ভেবেছিলাম সাধারণ জ্বর। চিকিৎসকদের পরামর্শে সামান্য কিছু ওষুধ খেতেই সবাই সুস্থ হয়ে যায়। তবে আমাদের দু'জনের জ্বর ঠিক হওয়ার পরে পারফিউমের গন্ধও পাচ্ছিলাম না। বুঝেছিলাম, করোনা আক্রান্ত হতে পারি। তাই পরীক্ষা করাই।”

সামিমা আরও জানান, করোনা আক্রান্ত হওয়ার পরে তিনি ও তাঁর স্বামী আলাদা একটা ঘরে থাকতেন। একতলা বাড়ির পাশের ঘরেই দাদু-ঠাকুমার কাছে থাকত তাঁদের তিন বছরের ছেলে। যতটা সম্ভব ছেলের থেকে দূরে থাকতেন মা-বাবা। ঘুমানোর সময়েও এন-৯৫ মাস্ক ব্যবহার করতেন সামিমা ও তাঁর স্বামী।

করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসার পরে যদিও ভেঙে পড়েননি সামিমা। মনোবল বাড়াতে ধর্মীয়গ্রন্থ পড়তেন, প্রার্থনা করতেন। সেই সঙ্গে স্বামী-স্ত্রী গল্প করে সময় কাটিয়েছেন। তবে সামিমার পরিবারের আফসোস, এ বার তাঁরা কেউ ইদে মসজিদে যেতে পারেননি।

এখন সামিমারা সকলে সুস্থ। করোনা পরীক্ষা করানোর দিন থেকে ১৪ দিন হয়ে গিয়েছে। এখন আর কোনও উপসর্গ নেই। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, তাঁরা সম্পূর্ণ ভাবে বিপদমুক্ত। ৩১ অগস্ট থেকে বসিরহাটের আলামিন কোভিড হাসপাতালে কর্মরত থাকবেন এই নার্স। সামিমা বলেন, “সবাইকে বলব, ভয় পাবেন না। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন।” এ বিষয়ে মনিরুল বলেন, “আমরা করোনা আক্রান্ত হওয়ার পরে আমাদের পাশে প্রতিবেশীরা ছিলেন। প্রয়োজনীয় সামগ্রী দিয়ে যেতেন। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্য আধিকারিকেরাও খুব সাহায্য করেছেন।”

সন্দেশখালি ১ বিএমওএইচ দেবব্রত বিশ্বাস বলেন, “সামিমা যে ভাবে করোনা জয় করে এ বার কোভিড হাসপাতালে যোগ দিতে চলেছেন, এটা খুবই উৎসাহ দেবে অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের।”

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in West Bengal Sandeshkhali
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy