Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Contract Killer

‘মানুষ হাফ ও ফুল মার্ডার করা হয়’! ভিজ়িটিং কার্ড ছাপিয়ে ‘সুপারি’ নিতে প্রচারে ক্যানিংয়ের বুলেট

ক্যানিং থানার পুলিশও এমন কার্ড দিয়ে প্রচার করে মানুষ খুনের ‘সুপারি’ নেওয়ার ঘটনায় প্রথমে কিছুটা হতচকিত। পরে অবশ্য কার্ডের পিছনের মাথাটিকে পাকড়াও করা হয়েছে।

মোরসেলিম মোল্লা।

মোরসেলিম মোল্লা। —নিজস্ব চিত্র।

প্রসেনজিৎ সাহা
ক্যানিং শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৮:৫৫
Share: Save:

‘যদি কেহ পথের কাঁটা দূর করিতে চান...’। ক্যানিং থানা এলাকায় প্রায় একই রকম একটি ভিজ়িটিং কার্ড ঘুরছিল গত কয়েক দিন ধরে। যাতে লেখা: ‘মানুষ হাফ ও ফুল মার্ডার করা হয়’! ব্যোমকেশ বক্সীর বিখ্যাত গল্প ‘পথের কাঁটা’-র স্মৃতি উস্কে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। ক্যানিং থানার পুলিশও এমন কার্ড দিয়ে প্রচার করে মানুষ খুনের ‘সুপারি’ নেওয়ার ঘটনায় প্রথমে কিছুটা হতচকিত। পরে অবশ্য কার্ডের পিছনের মাথাটিকে পাকড়াও করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে দাবি, নিজের ছবি, ফোন নম্বর দিয়ে ‘সুপারি কিলিং’-এর ‘বিজ্ঞাপনটি’ প্রচার করছিল বছর আঠারোর ছেলে মোরসেলিম মোল্লা। এলাকায় যার ডাকনাম বুলেট। একই সঙ্গে সে নাকি এলাকায় পোস্টার ছাপিয়েও প্রচার চালিয়েছে। সোমবার বিকেলে ক্যানিং থানার সাব ইন্সপেক্টর রঞ্জিত চক্রবর্তীর নেতৃত্বে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল ক্যানিংয়ের ধর্মতলা গ্রামে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে মোরসেলিম ওরফে বুলেটকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতের বাড়ি থেকে একটি দেশি বন্দুক, দু’রাউন্ড গুলি ও বেশ কিছু ভিজ়িটিং কার্ড উদ্ধার করেছে পুলিশ। সেখানেও খুনের কথা লেখা আছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ধৃতকে মঙ্গলবার আলিপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেআইনি অস্ত্র পাচারের অভিযোগে গত বছর অগস্টে গ্রেফতার হয়েছিল বুলেট। এক বছর আগে ক্যানিংয়ের গোপালপুর পঞ্চায়েত এলাকায় পঞ্চায়েত সদস্য-সহ তিন জনের খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত রফিকুল সর্দারের ভাগ্নে এই যুবক। ওই খুনের তদন্তে নেমে পুলিশ বুলেটকে গ্রেফতার করেছিল। কিন্তু তখন সে নাবালক হওয়ায় জামিন পেয়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ছাড়া পাওয়ার পর থেকেই কার্যত এলাকার মানুষকে বন্দুক উঁচিয়ে ভয় দেখাত অভিযুক্ত। কয়েক দিন ধরে এলাকার যে সব মানুষ জমি-বাড়ি নিয়ে সমস্যায় আছেন, যাঁদের শত্রুর সংখ্যা বেশি, কিন্তু নিজেরা কোনও গোলমালে জড়াতে ভয় পান, এমন লোকজন বেছে তাঁদের হাতে নিজের বিজ্ঞাপনটি ধরাতে শুরু করেছিল বুলেট। বুলেটের কথায়, “ইচ্ছে হয়েছে, তাই কার্ড ছাপিয়েছি। কাজের প্রচারের জন্য।”

পুলিশের দাবি, জেরায় তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ স্বীকার করেছে বুলেট। এসডিপিও ক্যানিং দিবাকর দাস বলেন, “এ ধরনের কোনও ঘটনা সে আগে করেছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কোথা থেকে এই ভিজ়িটিং কার্ড, পোস্টার ছাপানো হল, তার খোঁজ চলছে।” বুলেটের মা মুর্শিদা মোল্লা বলেন, “আমার ছেলে নির্দোষ। বাড়িতে একটি ছোট্ট দোকান চালায়। এই ধরনের কাজে যুক্ত নয়।” তবে এলাকার অনেকেই জানান, বুলেট মানুষকে খুনের হুমকি দিত। প্রতিবাদের সাহস তাঁদের ছিল না বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

একাংশের আবার দাবি, বুলেটের মানসিক অবস্থা স্থিতিশীল নাও হতে পারে। ‘পথের কাঁটা’ গল্পে ধুরন্ধর খুনি নিজের পরিচয় প্রকাশ করত না। বুলেট তা হলে বুক ফুলিয়ে খুন করার কথা বলে বেড়াত কেন?

অন্য বিষয়গুলি:

Visiting Card
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy