বাড়তি ভাড়ার স্টিকার লাগানো হয়েছে বাসে। নিজস্ব চিত্র
উৎসব উপলক্ষে বেড়ে গিয়েছে ভাড়া। তা নিয়ে নানা গোলমালের ছবি দেখা গেল সাগরে।
রবিবার বেলা ১২টা নাগাদ কচুবেড়িয়া ভেসেল ঘাটে গিয়ে দেখা গেল, পুণ্যার্থীদের ভিড়ে পা রাখার জায়গা নেই। মাঘী পূর্ণিমা উপলক্ষে হাজার হাজার পুণ্যার্থী গঙ্গাসাগর যাচ্ছেন। কচুবেড়িয়া থেকে গঙ্গাসাগর আসতে যাত্রীরা বাস, অটো, ছোট গাড়ি ধরছেন। লাইন দিয়ে পুলিশ-প্রশাসনের সহযোগিতায় যাত্রীরা বাসে উঠছেন। এ দিন দুপুরে গঙ্গাসাগর আসার সময়ে একটি লোকাল বাসে উঠেছিলেন মধুমিতা হালদার। কলকাতার রাজপুর থেকে আসছিলেন তিনি। এমনিতে এই রুটে ভাড়া ৪০ টাকা। কিন্তু মধুমিতার কাছ থেকে চাওয়া হয়েছিল ৫০ টাকা। অতিরিক্ত ভাড়া দিতে নারাজ তিনি। কন্ডাক্টরও নাছোড়বান্দা।
মধুমিতা বলেন, ‘‘কিছু দিন আগে আমি এসেছিলাম সাগরে। তখন কচুবেড়িয়া থেকে গঙ্গাসাগর পর্যন্ত বাস ভাড়া ছিল ৪০ টাকা। এখন কেন ৫০ টাকা নেওয়া হবে? কন্ডাক্টর বললেন, সাগর বিডিও অফিস থেকে মাঘী পূর্ণিমার জন্য নির্দিষ্ট ভাড়ার তালিকা তৈরি করে দেওয়া হয়েছে।’’
দু’তিন দিনের জন্য বেশি ভাড়া নেওয়ার এই বিষয়টি মেনে নিতে নারাজ বহু যাত্রীই। অনেকেরই বক্তব্য, এত বড় গঙ্গাসাগর মেলায় ভাড়া বেশি নেওয়া হয়নি। তা হলে এখন কেন নেওয়া হবে!
এক নিত্যযাত্রী বাদল দাস বলেন, ‘‘রবিবার সকাল ৯টায় ভেসেল পেরিয়ে এলাম। ভেসেল ভাড়া ৯ টাকা, আগে যা ছিল তাই নিল। কিন্তু বাসে উঠে গঙ্গাসাগর আসছিলাম। গঙ্গাসাগর বাস স্ট্যান্ডে নামার আগে কন্ডাক্টর বললেন ৫০ টাকা দিন। সব সময়ে যাতায়াত করি ৪০ টাকা ভাড়ায়। এখন হঠাৎ ১০ টাকা বেশি দেব কেন?’’ অনেক তর্কাতর্কির পরে ৪০ টাকাই দিয়ে এসেছেন বলে জানালেন বাদল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেল, মেলার ক’দিন বাস, ছোট গাড়ি সবেরই ভাড়া ১০ টাকা করে বেড়েছে। ভাড়া গাড়িতেও খরচ বেশ খানিকটা বেড়েছে। গঙ্গাসাগর মেলার সময়ে এই ঘটনা ঘটেনি বলেই জানালেন নিত্যযাত্রীরা।
গঙ্গাসাগর থেকে কচুবেড়িয়া রুটের এক বাস চালক বলেন, ‘‘বাস, অটো ও ছোট গাড়ির ইউনিয়নকে নিয়ে বিডিও অফিসে বসে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। গাড়ির স্টিকার প্রতি ১২০ টাকা করে দিতে হয়েছে। আমরা ভাড়া বাড়ানোর জন্য বলিনি। ৪-৬ ফেব্রুয়ারি এই তিন দিন অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হবে।’’
স্থানীয় বিজেপি নেতা অরুণাভ দাস বলেন, ‘‘এই মেলায় সরকার থেকে আলাদা করে অর্থ বরাদ্দ হয় না। এমনকী, গঙ্গাসাগর মেলার সময়ে বাস ভাড়া বাড়ানো হয়নি। ভাড়া বাড়ালে পরিবহণ দফতর বাড়াবে। এখানে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী বেআইনি ভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’’
এ বিষয়ে সাগর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শ্রীবিন্দু মণ্ডলের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি প্ৰথমে বিষয়টি শোনেন। তারপরে ফোন কেটে দেন। পরে ফোন ধরেননি। মোবাইল-বার্তারও উত্তর দেননি। ফোন ধরেননি বিডিও-ও। উত্তর মেলেনি মোবাইল-বার্তার।
স্থানীয় বিধায়ক তথা সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিম হাজার বলেন, ‘‘আমি যতটুকু জানি, ভাড়া বাড়ানোর কথা নয়। ব্লক প্রশাসন স্তরে একটি বৈঠক হয়েছিল বাস, অটো, ছোট গাড়ির চালকদের নিয়ে। আগে যে ভাড়া ছিল, সেই ভাড়াই থাকার কথা। যদি ভাড়া বেড়ে থাকে, বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy