Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
হাবরায় অভিযুক্ত সৎ মা

মেয়েকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার নালিশ

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাবেয়া একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। তার বাবা ইউনুস আলির দু’টি বিয়ে। রাবেয়া প্রথম পক্ষের মেয়ে। তার মা বাড়ি থেকে চলে গিয়েছেন।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হাবরা শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৭ ০২:২৫
Share: Save:

দাউ দাউ করে জ্বলছে এক কিশোরী। বাড়ি থেকে রাস্তায় বেরিয়ে উদভ্রান্তের মতো দৌঁড়াচ্ছে সে। সামনে যাকে পাচ্ছে তাঁকেই বাঁচার জন্য জড়িয়ে ধরার চেষ্টা করছে। তার চিৎকারে স্থানীয় বাসিন্দারা বেরিয়ে এসে জল ঢেলে আগুন নেভান। কিন্তু ওই কিশোরীর শরীরের বেশির ভাগ জায়গাই তখন পুড়ে গিয়েছে।

রবিবার ঘটনাটি ঘটেছে হাবরার দক্ষিণ সরাই এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, রাবেয়া পারভিন নামে ওই কিশোরী আশঙ্কাজনক অবস্থায় বারাসত জে‌লা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগের ভিত্তিতে তার সৎ মা নাজমা বিবিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এই ঘটনার পর উত্তেজিত জনতা নাজমাকে মারতে তাড়া করে। সে প্রাণে বাঁচতে স্থানীয় একটি ক্লাবে গিয়ে আশ্রয় নেয়। গ্রামের মানুষ সেখানে চড়াও হয়। ততক্ষণে অবশ্য পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। তারা নাজমাকে আনতে গেলে গ্রামবাসীরা বাধা দেয়। জনতার দাবি, নাজমাকে তাঁদের হাতে তুলে দিতে হবে। পুলিশ তা না করায় গাড়ির কাচ ভেঙে দেওয়া হয়।

জেলা পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, ‘‘রবিবার রাতে ওই কিশোরীর বয়ানও নেওয়া হয়েছে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাবেয়া একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। তার বাবা ইউনুস আলির দু’টি বিয়ে। রাবেয়া প্রথম পক্ষের মেয়ে। তার মা বাড়ি থেকে চলে গিয়েছেন। এরপরেই নাজমাকে বিয়ে করেন ইউনুস। নাজমারও আগের পক্ষের দু’টি সন্তান রয়েছে। ইউনুস ইঞ্জিন ভ্যান চালক। নানা কারণে রাবেয়ার সঙ্গে নাজমার আশান্তি লেগেই থাকত।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই দিন দুপুরে নাজমা মেয়েকে মারধর করে। রাবেয়া তখন তাকে বলে, বাবা ফিরলে সমস্ত কথা জানাবে সে। রাতে রাবেয়া যখন নিজের ঘরে বিশ্রাম নিচ্ছিল তখন কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় নাজমা বলে অভিযোগ। গায়ে আগুন নিয়ে কিশোরী বাইরে বেরিয়ে এলে স্থানীয় বাসিন্দারা জল ঢেলে আগুন নেভায়। এরপরেই গ্রামবাসীরা নাজমার বিরুদ্ধে মেয়েকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার অভিযোগ করেন। রাত ৯টা নাগাদ গ্রেফতার হয় নাজমা। এলাকাটি স্থানীয় পৃথিবা গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে। ওই পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য জাকির হোসেন গোলদার বলেন, ‘‘ঘটনার কথা শুনেই এলাকায় গিয়েছিলাম। গাড়ি করে মেয়েটিকে দ্রুত বারাসত জেলা হাসপাতালে পাঠিয়ে দিই।’’

পুলিশ জানিয়েছে, ক্লাবের সদস্যদের জন্য নাজমাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। ইউনুস মেয়ের সঙ্গে হাসপাতালে এসেছিলেন। কিন্তু তারপর তিনি সেখান থেকে পালিয়েছেন। ঘটনার তদন্ত চলছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Step mother Fire
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE