দীর্ঘদিন ধরে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালের আয়াদের দৌরাত্ম্যের বিরুদ্ধে সরব রোগী ও তাঁদের আত্মীয়েরা। শনিবারও ফের এক আয়ার বিরুদ্ধে এক প্রৌঢ় রোগীর প্রতি কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ উঠল। শৌচাগারে একাই যেতে গিয়ে তপন বন্দ্যোপাধ্যায় নামে ওই প্রৌঢ় পড়ে গিয়ে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়। হাসপাতালের সুপার শঙ্করপ্রসাদ মাহাতো জানান, আজ, সোমবার ওই আয়ার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে।
আয়াদের বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ এই নতুন নয়। কিছুদিন আগে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তুহিন মণ্ডল নামে এক যুবক শৌচাগারে গিয়ে গলায় গামছা জড়িয়ে আত্মঘাতী হন। সে ক্ষেত্রেও মৃতের পরিবারের লোকজন আয়ার বিরুদ্ধে নজরদারির অভাবের অভিযোগ তুলেছিলেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে সম্প্রতি কয়েকজন আয়াকে কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারপরেও যে তাঁদের দৌরাত্ম্য বন্ধ হয়নি, শনিবারে ফের অভিযোগ ওঠায় তা সামনে এল।
হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্রে খবর, বনগাঁর খয়রামারি কলেজপাড়ার বাসিন্দা, বছর আটান্নর তপনবাবুকে শনিবার দুপুরে ‘মেল মেডিসিন’ ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। তিনি হৃদরোগে ভুগছেন। বাড়ির লোকজন একজন আয়া রাখেন। তপনবাবুর ছেলে তন্ময় হাসপাতাল সুপারকে লিখিত অভিযোগে জানান, ওই দিন তাঁর বাবার শৌচাগারে যাওয়ার প্রয়োজন হয়। কিন্তু আয়াকে ডেকেও সাড়া পাননি। এরপর তপনবাবুর একাই শৌচাগারে যেতে গিয়ে পড়ে যান। আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর পরে তাঁকে হাসপাতালের হাই-ডিপেনডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) ভর্তি করানো হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়।
তপনবাবুর পরিবারের অভিযোগ, ওই আয়ার কারণেই তপনবাবুর এই অবস্থা। আয়া যদি তপনবাবুকে শৌচাগারে নিয়ে যেতেন, তা হলে তাঁর ওই অবস্থা হতো না। তন্ময়বাবু ওই আয়ার শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সুপারের কাছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, আয়াদের নিয়োগ করেন রোগীরা। তাঁদের দেওয়া টাকাই আয়াদের রোজগার। সম্প্রতি রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে আয়াদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে কঠোর পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু তার পরেও অভিযোগ ওঠা থামেনি। সুপার জানান, আয়াদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে। একই বক্তব্য রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস এবং বনগাঁর পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যেরও। রোগী ও তাঁদের আত্মীয়দের অভিযোগ, এই হাসপাতালে আয়ারা এত শক্তিশালী যে তাঁদের বিরুদ্ধে মুখ খোলা যায় না। একজন আয়া একসঙ্গে পাঁচ-ছ’জন রোগীর ভার নেন। ফলে, একসঙ্গে সকলের দিকে নজর দিতে পারেন না। রাতে তাঁরা ঘুমিয়ে পড়েন। রোগীর পরিবারের লোক রোগীর সঙ্গে থাকতে চাইলে আয়ারা এমন পরিবেশ পরিস্থিতি তৈরি করেন, তাঁদের থাকা অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। টাকা নিয়েও তাঁরা জুলুমবাজি করেন। অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy