নালিশ: খালের পাশে গাছ কেটে রাখা হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র
সরকারি গাছ কেটে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ভাঙড়ের ঘটনা। স্থানীয় সূত্রের খবর, ভাঙড়ে বেশ কয়েকদিন ধরেই খাল সংস্কারের কাজ চলছে। এলাকার মানুষের অভিযোগ, খাল সংস্কারের মধ্যেই কাজের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদার সংস্থার সঙ্গে যোগসাজস করে খালপাড়ের গাছ কেটে বিক্রি করে দিচ্ছে স্থানীয় তৃণমূল নেতারা। এই নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে এলাকায়।
ভাঙড় ১ ও ২ ব্লক এলাকার উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে বাগজোলা-শোনপুর খাল ও ভাঙড় কাটাখাল। উত্তর ২৪ পরগনার কুলটিতে গিয়ে বিদ্যাধরী নদীতে মিশেছে এই খালদু’টি। খালগুলি দীর্ঘদিন সংস্কার না করার ফলে গত বর্ষায় নিউটাউন, সল্টলেক, ভাঙড়, রাজারহাট-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল। তারপরই রাজ্য সরকারের নির্দেশে খাল সংস্কারের কাজ শুরু করেছে সেচ দফতর।
পরিবেশ রক্ষায় একসময় বন দফতরের পক্ষ থেকে এই খালের পাশে বাবলা, শিরিশ, দেবদারু, ইউক্যালিপটাস, লম্বু-সহ বিভিন্ন ধরনের গাছ লাগানো হয়েছিল। অভিযোগ, সংস্কারের কাজ চলাকালীন সেই সব গাছই কেটে ফেলা হচ্ছে। জামিরগাছি থেকে গাবতলা পর্যন্ত বাগজোলা-শোনপুর খালপাড়ের গাছ কেটে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। কোড়লবেড়িয়া, বেঁওতা, ভোজেরহাট এলাকায় ভাঙড় কাটাখালের পাশের সরকারি গাছও কেটে ফেলা হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা হাসান মোল্লা বলেন, “খাল সংস্কার করতে পলি তুলে খালপাড় বাঁধানো হচ্ছে। অথচ খালপাড়ের গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। এভাবে গাছ কাটা হলে যে উদ্দেশ্যে খাল সংস্কার করা হচ্ছে, তা সফল হবে না। বৃষ্টি হলেই মাটি ধুয়ে খালে চলে যাবে।” আর এক বাসিন্দা মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডল বলেন, “সরকারি গাছ সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে কেটে ফেলা হচ্ছে। প্রশাসন নির্বিকার। স্থানীয় তৃণমূল নেতারা নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করতে খাল সংস্কারের সুযোগ নিয়ে গাছ বিক্রি করে পকেট ভর্তি করছে।”
ভাঙড় ২ ব্লকের বেঁওতা ১ পঞ্চায়েতের প্রধান আবু সুফিয়ান বলেন, “এলাকার লোকজন জ্বালানির কাঠ হিসেবে খালপাড়ের ছোট ছোট গাছ কেটে নিয়ে চলে যাচ্ছেন। আমাদের দলের পক্ষ থেকে কেউ গাছ কেটে বিক্রি করছে না।”
ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী বলেন, “শাসক দলের নেতারা টাকার বিনিময়ে সবকিছুই বিক্রি করে দিচ্ছে। সরকারি গাছ এভাবে কাটা যায় না। গাছ কাটার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দফতরের অনুমতি নিতে হয়। খাল সংস্কারের নামে ওই সব এলাকার গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। বিষয়টি আমি বিধানসভায় তুলব।”
সেচ দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার রবিন মণ্ডল বলেন, “আগে একবার গাছ কাটার অভিযোগ পেয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অভিযোগ জানিয়ে বন্ধ করে দিয়েছিলাম। এবারও যদি এমন কিছু হয়ে থাকে তাহলে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। খাল সংস্কারের জন্য আমাদের দফতরের পক্ষ থেকে কোনও গাছ কাটা হচ্ছে না।” দক্ষিণ ২৪ পরগনা বনবিভাগের বিভাগীয় আধিকারিক মিলনকান্তি মণ্ডল বলেন, “বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি। সেইমতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy