ঢিমে তালে চলছে কাজ। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।
মজুত করা ‘অ্যাসিটেট সিট’ (যা দিয়ে চিরুনি তৈরি হয়) দিয়েই চলছে কাজ। কিন্তু তা শেষ হয়ে গেলে আর ওই দ্রব্যটি কেনার উপায় নেই কারখানা মালিকদের। টাকার অভাবে ধুঁকছে বনগাঁর চিরুনি শিল্প। ‘যশোর চিরুনি’ নামে গোটা দেশে যার নামডাক আছে। অতীতের মতো রমরমা না থাকলেও বনগাঁয় শিল্প বলতে বেঁচেবর্তে আছে এটুকুই।
কিন্তু হলে কী হবে, নোট বাতিলের সিদ্ধান্তে উৎপাদন গত একমাসে প্রায় অর্ধেকে এসে দাঁড়িয়েছে, জানাচ্ছেন কারখানা মালিকেরা। বনগাঁর যশোর চিরুনির চাহিদা রয়েছে কলকাতা, দিল্লি, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র-সহ গোটা দেশের ভিন রাজ্যে। ওই সব এলাকায় চাহিদা কমেছে বলে দাবি মালিকদের।
অতীতে এখানে চিরুনি তৈরি হতো সেলুলয়েড দিয়ে। তা আসত জাপান থেকে। বহু দিন হল তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এখন মুম্বই থেকে আসা ‘অ্যাসিটেট সিট’ দিয়েই চিরুনি তৈরি করা হয়। কিন্তু টাকার অভাবে মালিকেরা কাঁচামাল আনতে পারছেন না।
বনগাঁতে এখন ছোট-বড় মিলিয়ে শ’দেড়েক চিরুনি কারখানা আছে। তাতে কয়েকশো শ্রমিক কাজ করেন। বনগাঁ সেলুলয়েড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক তমাল দত্ত বলেন, ‘‘আগে থেকে মজুত করে রাখা অ্যাসিট্রেট সিড দিয়ে এখনও কাজ চলছে। মজুত শেষ হয়ে গেলে এবং টাকার জোগান স্বাভাবিক না হলে উৎপাদন সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবে।’’
চিরুনি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত কিছু বড় কারখানা থেকে ছোট কারখানাগুলি কাঁচামাল কিনে চিরুনি তৈরি করে তাদেরই যোগান দেয়। বড় এবং ছোট কারখানার মধ্যে এই চুক্তিতে কাজ হয়। কিন্তু ছোট কারখানার মালিকেরা টাকার সমস্যার জন্য মাঝে উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছিলেন। উত্তর ছয়ঘড়িয়ার বাসিন্দা এক কারখানা মালিক কিশোর বিশ্বাস বলেন, ‘‘টাকার অভাবে মাঝে কয়েক দিন কারখানা বন্ধ রাখতে হয়েছিল। বড় কারখানার মালিকেরা পুরনো নোট দিতে চাইছেন। আমরা তা নিতে পারছি না।’’
এই পরিস্থিতিতে শ্রমিকদেরও কাজ কমে গিয়েছে। ঠিকঠাক বেতন মিলছে না বলে অভিযোগ অনেকেরই। অনেকে কাজ চলে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন। অমর দাস নামে এক শ্রমিক বলেন, ‘‘কাজ প্রায় অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। প্রতি সপ্তাহে আমরা মালিকদের কাছ থেকে বেতন পাই। কিন্তু এখন বেতন বাকি রাখতে হচ্ছে বা কম নিতে হচ্ছে।’’ বনগাঁ সেলুলয়েড ওয়াকার্স ইউনিয়নের সম্পাদক রঞ্জন সেন বলেন, ‘‘টাকার অভাবে মালিকেরা মাল তুলতে পারছেন না। নোট বাতিলের কারণে দেশে যশোর চিরুনির চাহিদা কমেছে। বিপাকে পড়ছেন শ্রমিকেরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy