Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

জলাশয় পরিষ্কার একশো দিনের কাজের প্রকল্পেও

জয়নগরের দক্ষিণ বারাসত এলাকার প্রায় সব ঠাকুরই বিসর্জন হয় ‘ছাতু গঙ্গা’ নামে স্থানীয় এক জলাশয়ে। বৃহস্পতিবার সকালে সেখানে সাফাইয়ের কাজ হতে দেখা গেল। আগের রাতে জলে পড়া কাঠামো ও অন্য নানা সরঞ্জাম তুলে ফেলা হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, একশো দিনের কাজ চলছে। পঞ্চায়েত থেকে এই উদ্যোগ। 

উদ্যোগ: দক্ষিণ বারাসতের ছাতু গঙ্গায় সাফাই। ছবি: সুমন সাহা।

উদ্যোগ: দক্ষিণ বারাসতের ছাতু গঙ্গায় সাফাই। ছবি: সুমন সাহা।

নিজস্ব প্রতিবেদন
দক্ষিণ ২৪ পরগনা শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৯ ০১:১২
Share: Save:

পুজো শেষ। বিসর্জন হয়ে গিয়েছে অধিকাংশ প্রতিমাই। বিসর্জনের পরেই নদী বা জলাশয় পরিষ্কারের কাজ শুরু করে দিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা প্রশাসন। একশো দিনের কাজেও সাফাইয়ের কাজ চলছে।
জেলার বিভিন্ন জায়গায় অধিকাংশ প্রতিমা বিসর্জন হয়েছে বুধবার, একাদশীর দিন। বিসর্জনের পরে প্রায় প্রতিবারই ঠাকুরের কাঠামো ও অন্য নানা সরঞ্জাম পড়ে থাকায় জলদূষণের অভিযোগ ওঠে। তবে এ বার ছবিটা একটু অন্য রকম। জয়নগরের দক্ষিণ বারাসত এলাকার প্রায় সব ঠাকুরই বিসর্জন হয় ‘ছাতু গঙ্গা’ নামে স্থানীয় এক জলাশয়ে। বৃহস্পতিবার সকালে সেখানে সাফাইয়ের কাজ হতে দেখা গেল। আগের রাতে জলে পড়া কাঠামো ও অন্য নানা সরঞ্জাম তুলে ফেলা হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, একশো দিনের কাজ চলছে। পঞ্চায়েত থেকে এই উদ্যোগ।

দক্ষিণ বারাসত পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অরুণ নস্কর বলেন, ‘‘বিসর্জন প্রক্রিয়া যাতে সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হয়, সে কথা মাথায় রেখে পুজোর ঠিক আগে আমরা এই জলাশয় সাফ করে রেখেছিলাম। বিসর্জনের পরেও একই ভাবে জলাশয়কে দূষণমুক্ত রাখতে কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।’’

জয়নগর পুর এলাকায় পুজোর সংখ্যা প্রায় তিরিশটি। প্রায় প্রতিটি পুজো কমিটিই সংলগ্ন জলাশয়ে তাঁদের প্রতিমা বিসর্জন করে। পুরপ্রধান সুজিত সরখেল বলেন, ‘‘এলাকার প্রায় ২৫টি জলাশয়ে প্রতিমা বিসর্জন হয়। পুরসভার তরফে দশমীর পর দিন থেকেই প্রতিটি জলাশয় পরিষ্কারের কাজ চলছে। পুরকর্মীরা কাঠামো তুলে ফেলছেন।’’

ডায়মন্ড হারবারের মগরাহাট খালের বিধান ঘাটে প্রতিবারের মতো এ বারও প্রচুর প্রতিমা বিসর্জন হয়েছে। দশমীর রাত থেকেই এই ঘাটে হাজির ছিলেন পুরকর্মীরা। প্রতিমা জলে পড়ার পরে কাঠামো, ফুল-সহ অন্য জিনিস তুলে জল সাফ করে দেন তাঁরা। কাঠামোগুলি আপাতত ঘাটের ধারেই ডাঁই করে রাখা হয়েছে। পুর প্রশাসনের এক কর্তা জানান, জলদূষণ আটকাতে দ্রুত কাঠামো ও অন্য জিনিস জলাশয় থেকে তুলে ফেলা হয়েছে। পরে তা অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হবে।

গোসাবা-সহ নদীকেন্দ্রিক বিভিন্ন এলাকায় পুজো শেষে নদীতে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়াই রীতি। এ বারও দশমী ও একাদশী মিলিয়ে প্রচুর প্রতিমা বিসর্জন হয় নদীতে। প্রশাসনের তরফেও নদী সাফাইয়ের কাজ চলছে সমান তালে। গোসাবা পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি কৈলাস বিশ্বাস বলেন, ‘‘একাদশীর দিনই এলাকার অধিকাংশ প্রতিমা বিসর্জন হয়েছে। ব্লক প্রশাসনের তরফে এ দিন রাত থেকেই কাঠামো তুলে ফেলে নদী পরিষ্কারের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।’’

ক্যানিং ও বাসন্তী ব্লকের বড় বড় জলাশয় ও খাল থেকে প্রতিমা বিসর্জনের পরে কাঠামো তোলার কাজ শুরু হয়েছে পঞ্চায়েতগুলির তরফে। ক্যানিংয়ের মাতলা ১ পঞ্চায়েতের প্রধান হরেন ঘোড়ুই বলেন, ‘‘সব প্রতিমা এক জায়গায় বিসর্জন হয় না। অনেকেই স্থানীয় ছোট পুকুরে প্রতিমা বিসর্জন করে দেন। পঞ্চায়েতের তরফে খোঁজ নিয়ে সেই সব পুকুরও পরিষ্কার করা হবে।’’ভাঙড়, কাশীপুরের বেশির ভাগ পুজো কমিটিই স্থানীয় পুকুর বা জলাশয় প্রতিমা বিসর্জন করে। প্রশাসনের তরফে এই সব কমিটিকে নিজেদের উদ্যোগেই কাঠামো ও অন্য সরঞ্জাম তুলে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ‘আমরা সবাই’ পুজো কমিটির তরফে কৌশিক সর্দার বলেন, ‘‘এলাকায় তেমন নদী নেই। আগে ভাঙড় খালে বিসর্জন করা হত। এখন তা-ও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বাধ্য হয়ে এখন মণ্ডপের কাছেই একটি পুকুরে আমরা প্রতিমা বিসর্জন করি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘প্রশাসনের নির্দেশে আমরাই বিসর্জনের পর জল থেকে কাঠামো তুলে ফেলেছি, যাতে জল দূষিত না হয়।’’ একই কথা জানান কাশীপুরের ‘শতধারা প্রমীলা সঙ্ঘের’ সম্পাদক কাকলি পাল।

ভাঙড় ২ বিডিও কৌশিককুমার মাইতি বলেন, ‘‘প্রতিমা বিসর্জনের পরে যাতে কোনও ভাবেই জলাশয়ের জল দূষিত না হয়, সে জন্য আগে থেকেই পুজো উদ্যোক্তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিসর্জনের পরে তাঁরা যেন সঙ্গে সঙ্গে জল থেকে কাঠামো তুলে ফেলেন। আমরাও নজরদারি করছি।’’

তথ্য সহায়তা: দিলীপ নস্কর, সামসুল হুদা, সমীরণ দাস, প্রসেনজিৎ সাহা

অন্য বিষয়গুলি:

Immersion Cleaning Pond
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy